দৃশ্য-শ্রাব্য বিনোদনের বিস্ফোরণের যুগে বই পড়ার অভ্যাস কি অতীত? সে কথা আংশিক স্বীকার করে নিয়েও সম্পাদক জানান, ভাল বইয়ের সন্ধান পেতে পাঠকের আকুলতা এখনও। এই সংখ্যায় বহু বিশিষ্ট পাঠক নিজেদের পড়া কোনও বই নিয়ে আলোচনা করেছেন। তার মধ্যে উপন্যাস আছে, আছে মার্ক্স-চর্চা, মোদী-যুগের ভারতের পরিস্থিতির কথা, উপনিষদের প্রসঙ্গও। সব লেখার শুরু বা শেষে আলোচ্য বইটির নাম, লেখকের নাম, দাম ও প্রকাশকের কথা স্পষ্ট উল্লেখ করা থাকলে পাঠকের সুবিধা হত।
পরিচয়, আমার বই পড়া
সম্পা: অভ্র ঘোষ
২০০.০০
শোক ও মৃত্যু নিয়ে অরিন্দম চক্রবর্তী, যুদ্ধ ও গ্রহ-ইতিহাস নিয়ে দীপেশ চক্রবর্তী, মুসলমানের সংস্কৃত চর্চা ও হিন্দুদের আরবি-ফারসি চর্চা নিয়ে লোকনাথ চক্রবর্তী, লোকনাথ ভট্টাচার্যকে প্রসঙ্গ ধরে অভিবাসী বাঙালি মনীষা নিয়ে বোধিসত্ত্ব ভট্টাচার্য, হিজড়ে মনস্তত্ত্ব নিয়ে জয়া দাস, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে বামপন্থী ছাত্র-আন্দোলন নিয়ে শুভাশিস মুখোপাধ্যায় লিখেছেন। সুমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘একালের এক হুতোম’ লেখাটি উল্লেখযোগ্য। তিনটি ক্রোড়পত্র— সুশোভন সরকার ও রেবা সরকারকে লিখিত হিরণকুমার সান্যালের চিঠি; বঙ্কিমচন্দ্রকে ফিরে দেখা; এবং, প্রসঙ্গ প্যালেস্টাইন। শেষেরটিতে রণজিৎ গুহর পুনর্মুদ্রিত লেখা। ‘পাঠপ্রতিক্রিয়া’র কিছু লেখা প্রতিক্রিয়া গোত্র ছাড়িয়ে আরও প্রণিধানযোগ্য।
অনুষ্টুপ, শীত ২০২৪
সম্পা: অনিল আচার্য
৫০০.০০
কবিকে সীমানায় বাঁধা মুশকিল, আর শঙ্খ ঘোষের ক্ষেত্রে তো সেই প্রশ্নই নেই। তিনি আজীবন তাঁর আত্মায় বহন করেছেন পূর্ববঙ্গ, বাংলাদেশকে। এই সঙ্কলনের অন্তর্ভুক্ত সাক্ষাৎকারেও বলেছেন, “আমার কাছে পৃথিবীর সেরা জায়গা হল পাকশি।” ফলে, সে দেশের পাঠক-গবেষকদের চোখে কবি ঠিক কেমন রূপে ধরা পড়েন, সেই প্রশ্নটি শঙ্খ-চর্চায় গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর বিভিন্ন সত্তা, কবি, রবীন্দ্র গবেষক, প্রাবন্ধিক, এক আদ্যন্ত রাজনীতিসচেতন নাগরিক, এবং অতি ব্যক্তিগত এক মানুষের ভিন্ন রূপগুলি ধরা পড়েছে বিভিন্ন লেখায়। ইমতিয়ার শামীম লিখেছেন, “যত আত্মমগ্নতাই থাকুক... হৃদয় ও চেতনার কোনখানে যেন শঙ্খ ঘোষের কবিতা আগুন জ্বালিয়ে রেখে যায়।” রয়েছে ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণও।
শালুক, শঙ্খ ঘোষ: মুখোশছেঁড়া উজ্জ্বল প্রতিবাদ
সম্পা: ওবায়েদ আকাশ
৭০০.০০
রামমোহনের যে লিবারাল ও পুঁজিবাদী সমাজ-রাষ্ট্র কল্পনা, তা ঠিক আজকের ধারায় গণতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী নয়। কিন্তু তিনি যে সিঁড়িটি পেতে দিয়েছিলেন, সেটা ছাড়াও যে এগোনো যেত না, মানতে হবে। অনেকগুলি জরুরি প্রবন্ধের মধ্যে উল্লেখযোগ্য রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য অভ্র ঘোষ শক্তিসাধন মুখোপাধ্যায় তপোধীর ভট্টাচার্য সুব্রত গৌড়ী সাইফুল্লা গোপা দত্ত ভৌমিক সৌরীন ভট্টাচার্য পলাশ বরন পাল সুরঞ্জন মিদ্দে অনিন্দিতা বন্দ্যোপাধ্যায় মণিমেখলা মাইতি প্রমুখের লেখা। রামমোহনের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ চিঠিও সঙ্কলিত।
সংবর্তক, রামমোহন রায় সংখ্যা
সম্পা: সৌরভ রঞ্জন ঘোষ
৫০০.০০
বাঙালি জাতিসত্তার আলোচনা কি তা হলে পুরনো অবিভক্ত বঙ্গ আর পশ্চিমবঙ্গেই দৃষ্টি ফেলবে, ’৪৭-পরবর্তী পূর্ববঙ্গে নয়? এই প্রশ্ন জাগিয়ে দিয়ে পত্রিকাটি বিশেষ গুরুত্বময়, কেননা প্রশ্নের সঙ্গে অনেক উত্তরও এখানে সন্নিবিষ্ট কয়েকটি সযত্নআলোচিত প্রবন্ধে— বিশেষত বাংলা ভাষা প্রসঙ্গে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সত্যবতী গিরি, শুভাশিস গঙ্গোপাধ্যায়, সা’আদুল ইসলাম, আমিনুলইসলামের লেখা। এবং পুরনো লেখার পুনরুদ্ধার অংশে— সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় সৈয়দ মুজতবা আলী আহমদ শরীফ রেজ়াউল করীম আনিসু্জ্জামানের লেখা।
দশদিশি, বাঙালি জাতিসত্তা ২
সম্পা: অতনুশাসন মুখোপাধ্যায়
৩৭৫.০০
‘মুসলিম সাহিত্য সমাজ’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিশ শতকে মুসলমান সমাজের ‘জাগরণ’-এর ইতিহাস আলোচনা এই সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে অতি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। “প্রায় একটি অনড় সমাজের মধ্যে চিন্তাশীলতার চর্চাকে শুরু করতে ও ধারাকে বহমান রাখতে চেয়েছিলেন [কাজী আবদুল ওদুদ, আবুল হুসেন]-রা, যা সেই সময়ের পক্ষে ছিল অসম্ভব কঠিন এক কর্মকাণ্ড,” সম্পাদকীয় নিবন্ধে লেখা। নামে ‘মুসলিম’ থাকলেও তার মধ্যে যে খণ্ডচেতনা ছিল না, এ কথা বিশেষ উল্লেখ্য। কিছু গুরুত্বপূর্ণ পুরনো লেখার পুনর্মুদ্রণ এবং নতুন প্রবন্ধের সমাহার সঙ্কলনটিকে সংগ্রহযোগ্য করেছে।
পূর্ব, মুসলিম সাহিত্য সমাজ, বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন
সম্পা: রণজিৎ অধিকারী
৭০০.০০
প্রবীণ-নবীন নাট্যভাবুক ও গদ্যকাররা আন্তর্জাতিক নাট্যক্ষেত্রের বিভিন্ন নাটককার ও তাঁদের সৃষ্টি নিয়ে লিখেছেন, অনুসন্ধিৎসু গবেষণা ও অধীত বিদ্যায় ভর করে। প্রধান সম্পাদক ব্রাত্য বসু মনে করেন, আদতে এটি ‘থিয়েটার-আত্মীয়তার সংখ্যা’, “দুনিয়ার থেকে যতটা গ্রহণ করতে পারব, দুনিয়াকে অর্পণের সক্ষমতাও তখনই অর্জন করতে পারব আমরা।” ভারতীয় নাট্যপরিবারের প্রয়াত বিশিষ্টজনদের নিয়ে স্মরণ-রচনার পাশাপাশি শোভা সেন সাধনা রায়চৌধুরী সবিতাব্রত দত্ত শেখর চট্টোপাধ্যায় তাপস সেনকে নিয়ে লেখা, তাঁদের জন্মশতবার্ষিকীতে।
নাট্য আকাদেমি পত্রিকা ১৯, বিশ্বনাট্য: বাংলা রূপান্তরেঅতিথি
সম্পা: দেবাশিস রায়
৭৫০.০০
পাঠকের মন জোগানো গাদা গাদা গল্প-উপন্যাস বা চটি নভেল লেখার চেয়ে না লেখাই ভাল, মনে করতেন আখতারুজ্জামান ইলিয়াস। উপন্যাস লিখেছেন মাত্র দুটি, পাঁচটি গল্পগ্রন্থ, একটি প্রবন্ধসংগ্রহ, গুটিকয় কবিতা, কয়েকটি শিশুতোষ রচনা। চিলেকোঠার সেপাই আর খোয়াবনামা এক অনন্য বিপ্লব, তিনি নিজেও জানতেন: “আমার দুটো নভেলই তো অন্তত বিশটা নভেলের সমান... যেটুকু সিরিয়াসলি বলতে চাই সেটা অত ফেনিয়ে বিভিন্নভাবে বলার প্রয়োজন নেই।” ইলিয়াসকে নিয়ে পূর্ণাঙ্গ এই সংখ্যায় তাঁর নির্বাচিত ও অপ্রকাশিত চিঠি, অগ্রন্থিত গল্প, দীর্ঘ সাক্ষাৎকার, পাশাপাশি তাঁর গল্প-উপন্যাসের ভুবন নিয়ে নিবন্ধ, স্বজন-কথা।
দীপন, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস সংখ্যা
সম্পা: এন জুলফিকার
৭৫০.০০
‘বই চুরি’ বা ‘বই চোর’ কথাগুলি শুনে ‘চুটকি থেকে অ্যানেকডোটের দিকে যাত্রার যে প্রবণতা’ আমাদের, এই সংখ্যায় তার অতিরিক্ত কিছুটা রাস্তা হাঁটতে চাওয়ার কথা বলেছেন সম্পাদক, শুরুতেই। কী সেই রাস্তা? বু.ব.-র কবিতাভবন থেকে শুরু করে বইমেলায় বই চুরি, আইন ও মনস্তত্ত্বের আয়নায় এই ‘কীর্তি’র পর্যালোচনা রয়েছে মূল অংশে। ‘পুনঃপাঠ’ অংশে নবনীতা দেব সেন বিনয় ঘোষ অরুণ মিত্র তারাপদ রায় হিমানীশ গোস্বামীর লেখাগুলি বহুপাঠেও পুরনো হওয়ার নয়; বঙ্গানুবাদে আর্জেন্টিনার আলবের্তো মাঙ্গেল, ফ্রান্সের ওক্তাভ য়্যুজ়ান ও আলবেয়ার সিম-এর বই চুরি বিষয়ক লেখাংশ। শেষপাতে ব্যক্তিগত কথনে বই চুরি-প্রসঙ্গ, উপভোগ্য।
বোধশব্দ, বই চুরি সংখ্যা
সম্পা: সুস্নাত চৌধুরী
৪৯০.০০
একই সঙ্গীত শ্রবণের স্মৃতি যে প্রত্যেক ব্যক্তির ক্ষেত্রে ভিন্ন হতে পারে, মনে করিয়ে দিয়েছেন ঋতপ্রভ বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গীত শ্রবণের অভিজ্ঞতাও যে স্থান-কাল-পাত্র অনুসারে কতখানি ভিন্ন হতে পারে, সঙ্কলনের বিভিন্ন লেখা তার সাক্ষ্য বহন করে। জাহিরুল হাসান বলেছেন এক মুসলমান পরিবারের সঙ্গীতস্মৃতি-কথা, অভীক মজুমদারের লেখা উত্তর কলকাতার সঙ্গীত আবহ থেকে পর্যটন করেছে চরাচর। শ্রমজীবী নারীর গানের একনিষ্ঠ গবেষক চন্দ্রা মুখোপাধ্যায় লিখেছেন, “আামার গান শোনা... আনন্দ-বেদনার জীবন ইতিহাসের মুখোমুখি হওয়া।”
রাবণ, গান শোনার স্মৃতি
সম্পা: সোমাইয়া আখতার
৪০০.০০
জীবনের শেষ দিকে গান্ধী নিজের নানা অন্তর্দ্বন্দ্ব ও সীমাবদ্ধতার অনেকগুলিই বুঝলেন, এবং আত্মসংশোধন করলেন। যেমন, রাজনীতি থেকে ধর্মকে বাদ দেওয়া, রক্ষণশীল ধর্মকে প্রশ্রয় না দেওয়া ইত্যাদি। ‘‘ভারতের ইতিহাসের ও জনগণের দুর্ভাগ্য, তখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।’’ সুলভ নয়, এমন গান্ধীচর্চা, আজকের দিনেও। অশোক মুখোপাধ্যায়ের লেখাটি জরুরি। ‘গোঁড়া বর্ণবাদী’ হিসেবে সাভারকরের কথা লিখেছেন শামসুল ইসলাম, রবীন্দ্রনাথের ন্যাশনালিজ়ম ও নৈবেদ্য-র কবিতার সম্পর্ক নিয়ে আশীষ লাহিড়ি। সঙ্গে আছেন ধর্ম-রাষ্ট্র সম্পর্কের আরও উন্মোচনে মনোহরমৌলি বিশ্বাস, কণিষ্ক টৌধুরী, বাসুদেব ঘটক, মীরাতুন নাহার, অনুপমা রায়, দেবাশিস মিথিয়া।
অন্যলেখ, প্রবন্ধ ও ক্রোড়পত্র
সম্পা: দেবাশিস রায়, সৌমী সেন
৩০০.০০
রবীন্দ্রনাথের বিশ্বভারতী নিয়ে উমা দাশগুপ্তের, তাঁর সঙ্গীত ও চিত্রকলা নিয়ে অমিয় চক্রবর্তী সুধীর চক্রবর্তীর রচনা। লোকনাথ ভট্টাচার্যের লেখা ফরাসি কবিদের নিয়ে। অমিয়ভূষণ মজুমদার সুভাষ মুখোপাধ্যায় শৈলবালা ঘোষজায়া ও লোরকাকে নিয়ে আলোচনা; নজরকাড়া রচনা ত্রৈলোক্যনাথ ও মাইকেল মধুসূদনকে নিয়ে গোপা দত্ত ভৌমিক ও শক্তিসাধন মুখোপাধ্যায়ের। থিয়েটার-সিনেমা বিভাগে ব্রেখট উৎপল দত্ত মৃণাল সেন ফলি বিলিমোরিয়া প্রমুখের শিল্পকর্ম। নরেশ গুহ আর রণজিৎ গুহ বিষয়ক দু’টি ক্রোড়পত্রে অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত জ্যোতির্ময় দত্ত সৌরীন ভট্টাচার্য সুকান্ত চৌধুরী প্রমুখের রচনা। অন্য ক্রোড়পত্রটিতে অদামৃতকথা ও দ্যূতক্রীড়ক, ব্রাত্য বসুর উপন্যাস দু’টি নিয়ে লিখেছেন জয় গোস্বামী মৈনাক বিশ্বাস উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় প্রচেত গুপ্ত প্রমুখ, সঙ্গে ব্রাত্যর দীর্ঘ সাক্ষাৎকার।
নিষ্পলক, জাতি জাতীয়তা রাষ্ট্র(বাদ)?
সম্পা: জগদীশচন্দ্র সরকার
২৫০.০০
কবিতা লেখার নিজস্ব ভাষা পেয়ে গিয়েছিলেন যখন তাঁর সদ্য কুড়ি-পেরোনো বয়স। ‘অল্পদিনের মধ্যেই তৈরি করে নিয়েছে নিজস্ব এক ঘরানা’, শঙ্খ ঘোষের স্মৃতি ছাত্র জয়দেব বসু সম্পর্কে। প্রাণময় বুদ্ধিদীপ্ত উজ্জ্বল জয়দেব কবিতার পাশাপাশি গদ্যও লিখতেন চমৎকার। তাঁর এক গুচ্ছ অগ্রন্থিত গদ্য প্রকাশ পেল সংখ্যাটিতে, সঙ্গে অগ্রন্থিত ছোটগল্প কবিতাও। আছে তাঁর শিল্পিত স্বভাব নিয়ে ‘কথাবার্তা’, প্রতিমা ঘোষ গৌতম চৌধুরী শ্রীজাত মন্দাক্রান্তা সেন যশোধরা রায়চৌধুরী প্রমুখের রচনায়।
ধানদূর্বা, জয়দেব বসু সংখ্যা
সম্পা: অসীম সরকার
৪৫০.০০
ক্ষিতিমোহন সেন যাদবেশ্বর তর্করত্ন পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায় গোপীনাথ কবিরাজ প্রমুখের স্মৃতিতে নিবেদিত পত্রিকার সম্পাদকীয় বলছে: “বিজ্ঞান চিন্তার প্রসার ঘটুক ও ভূত-প্রেতের কল্পিত জগৎ দ্রুত শীর্ণকায় হোক।” পড়া যাবে এক গুচ্ছ বিষয়াশ্রয়ী নিবন্ধ— তন্ত্র বিষয়ক পুনর্মুদ্রণ সতীশচন্দ্র বিদ্যাভূষণ জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর স্বামী নিগমানন্দ সরস্বতীর; প্রমথ চৌধুরীর ‘মন্ত্রশক্তি’, সৌরীন্দ্রমোহন মুখোপাধ্যায় থেকে পি সি সরকারের প্ল্যানচেট ও ভূত বিষয়ক লেখা; ইন্দিরা দেবীর কলমে ‘পরলোক’। পাশাপাশি এ কালের গবেষকদের মূল্যায়ন লোকজীবন ও দেশাচারে তন্ত্র মন্ত্র জাদু নিয়ে। কিন্তু প্রচ্ছদে ছাপাখানার ‘ভুত’ রয়ে গেল যে!
প্রসঙ্গ চলচ্চিত্র এবং: মৃণাল সেন
সম্পা: অঞ্জন দাস মজুমদার
৬০০.০০
জন্মশতবর্ষে মৃণাল সেনকে নিয়ে প্রকাশিত পত্রিকাগুলির বৃহদংশ হয় স্মৃতিকণ্ডূয়ন, নয় পুনর্মুদ্রণ। সিনে গিল্ড, বালি-র এই প্রকাশনায় এই দুই-ই আছে, তবু তা রসোত্তীর্ণ, কারণ তার সম্পাদকীয় ভাবনা ও বিন্যাসের শৃঙ্খলা। পরিচয়, যুগান্তর-এর মতো পত্রপত্রিকায় মৃণাল সেনের ছবির রিভিউ পড়তে পাবেন পাঠক, সিনে গিল্ড সদস্যদের লেখা রিভিউও; প্রয়াণলেখ স্মৃতিচারণ ব্যক্তিগত উচ্চারণের পাশে জরুরি চারটি সাক্ষাৎকার। পুরনো ও নতুন এক গুচ্ছ নিবন্ধে মৃণাল সেনের চলচ্চিত্রবিশ্ব-দর্শন। ‘শমীক বন্দ্যোপাধ্যায় ক্রোড়পত্র’টি তাঁর মৃণাল সেন-সংযোগ থেকে উঠে আসা লেখাগুলির চয়ন।
শুভশ্রী: নেশা আর আসক্তি সংখ্যা
সম্পা: শান্তনু সরকার
৫৫৫.০০
সম্পাদক গোড়ায় খোলসা করে দিয়েছেন, সুবোধ নেশা নয়, অপনেশাদের নিয়েই এই সংখ্যার লেখালিখি। ছ’টি পর্বে সাজানো আসক্তি-কথন: পান চা কফি তামাক নস্যি সিগারেট মদ ভাং আফিম গাঁজা চরস মাদক ঘুমের ওষুধেরা শুরুতেই; আচরণগত নেশার মধ্যে তাস দাবা পাশা জুয়া রেস সাট্টা লটারি থেকে আন্তর্জাল ও পর্ন-আসক্তি নিয়ে আলোকপাত। পরের পর্বগুলির লেখালিখি ছুঁয়েছে নেশার সমাজ-ধর্ম-রাজনীতি— নেশার সঙ্গে তন্ত্র শরীর হিন্দুধর্ম ইসলামের দ্বন্দ্ব, নেশার ভাষা থেকে সৃষ্টিশীলতা, বাদ যায়নি কিছুই।
স্বদেশচর্চা লোক, তন্ত্র মন্ত্র ভূত প্রেত জাদু সংখ্যা
সম্পা: প্রণব সরকার
৬০০.০০
বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানের অনুশীলন, একদা জাতীয়তাবাদী এই আদর্শ থেকে আজ আমরা অনেকখানি বিচ্যুত। সেই অভ্যাস ফিরিয়ে আনা পত্রিকার অন্যতম উদ্দেশ্য, জানিয়েছে সম্পাকীয় নিবন্ধ। চিকিৎসক ও রোগীরসম্পর্কের গতিপথ, সমাজ ও তার নীতিবোধের সঙ্গে বিজ্ঞানের সম্পর্ক, ভারতীয় জ্ঞানভান্ডারের স্বরূপ, নাস্তিকতা বিজ্ঞানসাধক হওয়ার পূর্বশর্ত কি না ইত্যাদি বিবিধ প্রসঙ্গ এসেছে আলোচনায়।
অথ পথ, মিঠে-রোদ্দুর সংখ্যা
সম্পা: হরিসাধন চন্দ্র
২০০.০০
হাসান আজিজুল হকের মতো লেখকের সাহিত্যবীক্ষা এই সংখ্যার প্রচ্ছদ-বিষয়। ২০১২ সালে মাসউদ আহমাদের নেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন কী করে সমাজ-রাজনীতি-অর্থনীতির সঙ্কটকালে ‘চুপ করে থাকা সম্ভব নয়’ বলে তিনি কলম ধরেন, গল্প বা এ ধরনের সৃষ্টিশীল লেখা থামিয়ে রেখে। তাঁর গল্প-উপন্যাস নিয়ে সাধন চট্টোপাধ্যায় অমর মিত্র প্রমুখের পর্যবেক্ষণ, তাঁর সম্পাদিত প্রাকৃত পত্রিকা নিয়ে আলোকপাত করেছেন সুশীল সাহা। এ ছাড়াও রয়েছে কবিতা গল্প নাটক গ্রন্থালাপ বিভাগ— সাদাত হাসান মান্টোর অণুগল্পের বাংলা অনুবাদ নজর কাড়ে।
বিজ্ঞানভাষ, বার্ষিক সঙ্কলন ২০২৩
সম্পা: অভিজিৎ চৌধুরী
২০০.০০