রবীন্দ্রনাথ এই সময়

ভৌতিক গল্প বলার অছিলায় কবি নিজের আজন্ম-লালিত সত্যেরই উদ্ঘাটন চেয়েছেন?

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২০ ০০:১৬

রবীন্দ্রনাথ/ এই সময়
অভ্র ঘোষ
২৫০.০০
অক্ষর প্রকাশনী

পাঠকভেদে বা পাঠভেদে রবীন্দ্রনাথের লেখালিখিরও মূল্যায়ন যায় বদলে বদলে, আর তাতে ফুটে ওঠে বিশেষ বিশেষ রুচির ভিন্নতার চিহ্ন। তা ছাড়া সময়ের সঙ্গে দেখার দৃষ্টিও তো পাল্টায়, কবির গল্প-উপন্যাস-নাটক-প্রবন্ধ বারবার পড়েও শেষ হয় না, রবীন্দ্রনাথকে জানাও তাই ফুরায় না। সেই অভিজ্ঞতাতেই পৌঁছেছেন অভ্র ঘোষ তাঁর এ-বইয়ে। শুরুতে তা খেয়ালও করিয়ে দিয়েছেন ‘‘কতটুকু জানি তাঁকে আমরা... তাই মাঝে মধ্যেই ঘেঁটে দেখতে হয় তাঁর বিচিত্র ও বিস্তৃত রচনারাজি।... রবীন্দ্রনাথকে বুঝতে হলে অন্যদের চোখে রবীন্দ্রনাথ কীরকম— সেটা বোঝাও কম গুরুত্বের নয়... রবীন্দ্র-পাঠে নতুন মাত্রাও সংযোজিত হয়।’’ লেখকের অভিপ্রায় আরও স্পষ্ট হয়ে আসে বইটির প্রবন্ধাদির নামেই— ‘রবীন্দ্রনাথ কি উদ্যোগপতি’, ‘বহির্বঙ্গ ও রবীন্দ্রনাথ’, ‘কবি নজরুলের অনশন ও রবীন্দ্রনাথ’, ‘কবে থেকে রবীন্দ্রজয়ন্তী’, ‘সার্ধশতবর্ষের রবীন্দ্রনাথ’ ইত্যাদি। একটি প্রবন্ধে এ কালে রবীন্দ্রনাথের রাজনৈতিক ভাবনার অগ্রহণযোগ্যতা প্রসঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতের বিপরীতে এ কালে রাবীন্দ্রিক রাজনীতির অনন্যতা নিয়ে অশোক সেনের ‘রাজনীতির পাঠক্রমে রবীন্দ্রনাথ’ গ্রন্থটির সূত্রে অভ্রবাবু লিখেছেন ‘‘রবীন্দ্রনাথের রাজনৈতিক দর্শনের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হল ‘স্বদেশী সমাজ’-এর ধারণা, যার ভিতরে প্রোথিত হয়ে আছে আত্মশক্তির চিন্তা।’’ রবীন্দ্রভাবনার এই ধরনটিকেই যেন প্রথম প্রবন্ধটির শেষে অবয়ব দেন লেখক: ‘‘বিভিন্ন সময়ে কবির লেখা, আলাপচারিতা ও স্মৃতিচারণে এই বিষয়ে যে-তথ্যগুলি মেলে— তাতে নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয় যে, রবীন্দ্রনাথ পরলোকতত্ত্বে বিশ্বাসী।... ভৌতিক গল্প বলার অছিলায় কবি নিজের আজন্ম-লালিত সত্যেরই উদ্ঘাটন চেয়েছেন?... ভূতগ্রস্তদের ঠেলা মেরে জানিয়ে দিচ্ছেন, কর্তার ভূতের হাত থেকে নিজেকে মুক্ত করতে না পারলে আত্মশক্তিসম্পন্ন মানুষ হয়ে ওঠা যাবে না। দেশও জাগবে না।’’

Advertisement
আরও পড়ুন
Advertisement