Book

ফিরে দেখা ইতিহাস

১৯২৭ সালে নটীর পূজা অভিনয় বঙ্গসংস্কৃতির ইতিহাসে একটি মাইলফলক।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০১:১৮

নটীর পূজা: রবি পরিক্রমা

দেবজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায়

Advertisement

৪০০.০০, সিগনেট প্রেস

“ভদ্র ঘরের বাঙালি মেয়েরা নাচবে, এমন অঘটন কখনও ঘটতে পারে? কিন্তু অঘটনই ঘটল।” হেমেন্দ্রকুমার রায়-কথিত সেই ‘অঘটন’ ঘটাল রবীন্দ্রনাথের নটীর পূজা। শান্তিনিকেতনে মাত্র তিন দিনে যা লেখা হয়েছিল কেবল মেয়েদের অভিনয়ের উপযোগী করে, কলকাতায় এসে রবীন্দ্রনাথ তাতে যোগ করলেন একটি পুরুষ চরিত্র, ভিক্ষু উপালির। নিজে নামলেন মঞ্চে, যাতে ভদ্রঘরের মেয়েদের নিন্দার মুখে পড়তে না হয়। সমকালীন নাট্যব্যক্তিত্ব অহীন্দ্র চৌধুরী রঙ্গমঞ্চের অভিনেত্রী নীহারবালা দেবীকে নিয়ে জোড়াসাঁকোয় অভিনয় দেখতে গিয়েছিলেন।

স্মৃতিকথায় লিখছেন, “মঞ্চে ভদ্রমহিলার নাচ দেখলাম আমরা সেই প্রথম... নবীনেরা হৈ হৈ করে উঠলেন, প্রশংসায় স্বতঃস্ফূর্ত। আর, প্রবীণেরা হয়ে উঠলেন নিন্দায় মুখর।” রবীন্দ্রনাথের সমর্থনে কলম ধরল কলকাতার প্রধান পত্র-পত্রিকাও। এক পাঠকের নিন্দামন্দের উত্তরে প্রবাসী-র সম্পাদক রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় লিখছেন, রবীন্দ্রনাথ “নৃত্যকে পঙ্কিলতা হইতে উদ্ধার করিয়ে সমাজের উপকার করিতেছেন এবং নির্মল আনন্দের ব্যবস্থা করিতেছেন।”

১৯২৭ সালে নটীর পূজা অভিনয় বঙ্গসংস্কৃতির ইতিহাসে একটি মাইলফলক। নৃত্যকলাকে তা ‘জাতে তুলল’ বলে শুধু নয়, মণিপুরী নৃত্যের অনুসরণে নাচের এক নতুন ধারাও তৈরি হল। নীহারবালার মতো মঞ্চশিল্পীরা যার সঙ্গে পরিচিত ছিলেন না। ক্রমে তা বাংলায় পরিচিত হবে ‘রবীন্দ্রনৃত্য’ বলে। নটীর পূজা-তে মঞ্চসজ্জা, সাজসজ্জা, সঙ্গীতের ব্যবহার, অভিনয়, সব আঙ্গিকই নতুন। তাই মানবীবিদ্যা, সংস্কৃতির ইতিহাস থেকে সমাজবিজ্ঞান, নানা দিক থেকে নটীর পূজা-র সেই প্রথম মঞ্চায়ন, এবং সমাজে তার অভিঘাতকে ফিরে দেখা চাই। সেই ইতিহাসকে ধরেছে দেবজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বইটি।

আরও পড়ুন
Advertisement