আমেরিকার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত।
বড়দিনের আগেই আমেরিকায় শাটডাউন? বন্ধ হয়ে যাবে যুক্তরাষ্ট্রের সমস্ত সরকারি দফতর? নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ নেওয়ার আগেই ওয়াশিংটনের অর্থনীতির আকাশে জমেছে কালো মেঘ। উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট হিসাবে ট্রাম্পের প্রথম জমানাতেও লম্বা সময়ের জন্য শাটডাউনের কবলে পড়েছিল আমেরিকা। এ বারের পরিস্থিতিও সে দিকেই এগোচ্ছে বলে মনে করছেন আর্থিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।
সম্প্রতি ফেডারেল ব্যয় বিল বাতিল করেন যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ‘কংগ্রেস’-এর নিম্নকক্ষ ‘হাউস অফ রিপ্রেজ়েন্টেটিভস’-এর স্পিকার মাইক জনসন। তার পর থেকেই শাটডাউনের আশঙ্কা প্রবল হয়েছে। আগামী ২১ ডিসেম্বর শনিবার, সকাল ১২টা ১ মিনিট থেকে সেটি জারি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। সব হিসাব ঠিক থাকলে ওই দিন ওই সময়ে শেষ হবে সরকারের খরচ সংক্রান্ত তহবিল। ফলে প্রশাসন চালানোর টাকা না-থাকায় জারি হবে শাটডাউন।
গত ১৪ মার্চ ‘হাউস অফ রিপ্রেজ়েন্টেটিভস’-এ ফেডারেল ব্যয় বিল উত্থাপন করা হয়। এর প্রবল বিরোধিতা করেন রিপাবলিকানেরা। বিলটিকে ‘ভয়ানক ক্ষতিকর’ বলে মন্তব্য করতে ছাড়েননি ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠ ধনকুবের শিল্পপতি ইলন মাস্ক। নভেম্বরের ভোটে বর্ষীয়ান রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প ফের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে বিলটি বাতিলের কথা ঘোষণা করেন স্পিকার জনসন। এই নির্বাচনে ট্রাম্পের হয়ে প্রচারে ৩০ কোটি ডলার খরচ করেছেন মাস্ক। ‘প্রিয় বন্ধু’ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর এক্স হ্যান্ডেলে (সাবেক টুইটার) করা পোস্টে তিনি লেখেন, ‘‘জনগণের কণ্ঠ বিজয়ী হয়েছে।’’
সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে শাটডাউন এড়াতে একটি বিকল্প পথের সন্ধান করেন রিপাবলিকানেরা। নতুন একটি ব্যয় বিল নিয়ে আসেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার ১৯ ডিসেম্বর, এই নিয়ে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষে ভোটাভুটি হয়। কিন্তু সেখানে ১৭৪-২৩৫ ভোটে হেরে যাওয়ায় বাতিল হয়েছে ওই বিল। এই অবস্থায় শাটডাউন সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।
ব্রুকিংস বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির গবেষক ডেভিস ওয়েসেল বলেছেন, ‘‘শাটডাউনে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি খারাপ ভাবে বিঘ্নিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন ছোট ব্যবসায়ীরা। সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে।’’ শাটডাউন হলে বাধ্যতামূলক ভাবে সমস্ত সরকারি কর্মীকে ছুটিতে পাঠায় আমেরিকার সরকার। অত্যাবশ্যকীয় দফতর, অর্থাৎ সেনা, পুলিশ বা দমকলের মতো বিভাগ অবশ্য এর আওতাভুক্ত নয়।
আগামী বছরের (পড়ুন ২০২৫) ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেবেন ট্রাম্প। কুর্সিতে বসেই শাটডাউনের মুখে পড়লে প্রশাসন চালানো তাঁর পক্ষে বেশ কঠিন হবে। অন্য দিকে শাটডাউনের প্রভাব পড়তে পারে ভারতের উপরেও। ভিসা বা গ্রিনকার্ড পাওয়ার ক্ষেত্রে এ দেশের নাগরিকদের অপেক্ষা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।