ভারতের সংস্থাগুলি মনে করছে, নিয়োগ থমকে থাকার অন্যতম কারণ দক্ষ কর্মীর অভাব। —প্রতীকী চিত্র।
দেশে কর্মসংস্থানের অভাব নিয়ে কেন্দ্রকে ক্রমাগত দুষছেন বিরোধীরা। তুলে ধরছেন কয়েক দশকে সবচেয়ে উঁচুতে পৌঁছে যাওয়া বেকারত্বের পরিসংখ্যানকে। উপদেষ্টা থেকে অর্থনীতিবিদেরাও মানবসম্পদকে কাজে না লাগাতে পারা নিয়ে সতর্ক করছেন। বাজেটে চোখ রেখে জোরালো হচ্ছে কাজ তৈরির দাবি। এই অবস্থায় এক সমীক্ষায় উঠে এল, ভারতের সংস্থাগুলি মনে করছে, নিয়োগ থমকে থাকার অন্যতম কারণ দক্ষ কর্মীর অভাব। সেই খরা চলছে প্রায় তিন বছর ধরে। সারা বিশ্বের তুলনায় এই হার এ দেশে বেশি। যে কারণে আগামী দিনেও নিয়োগ কম থাকবে বলে আশঙ্কা সিংহভাগ সংস্থার। বৃহস্পতিবার দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামের বার্ষিক সভার মঞ্চ থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়ন্ত চৌধরির যদিও দাবি, তরুণ প্রজন্মকে তৈরি করতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছে সরকার।
দেশের চারটি অঞ্চলের ৩০০০-এর বেশি সংস্থাকে নিয়ে ‘ট্যালেন্ট শর্টেজ’ সমীক্ষা করেছিল ম্যানপাওয়ার গোষ্ঠী। রিপোর্ট বলছে, বিশ্বে ভারতেই কর্মীর চাহিদা সবচেয়ে বেশি, ৫৩%। কিন্তু গোটা পৃথিবীতে যেখানে ৭৪% সংস্থা দক্ষ কর্মীর অভাবে ভুগছে, সেখানে এ দেশে তা ৮০%। মূলত দক্ষিণ ভারতে সমস্যা সর্বাধিক (৮৫%)। ডেটা ও তথ্যপ্রযুক্তির মতো ক্ষেত্রে চাহিদা দ্রুত মাথা তুলছে, অথচ সেখানেই অভাব প্রকট। তার সঙ্গে রয়েছে, বিদ্যুৎ এবং পরিষেবা ক্ষেত্রগুলিও। পরিস্থিতি সামলাতে সব পক্ষকে মিলে ব্যবস্থা নিতে হবে বলে জানাচ্ছেন ম্যানপাওয়ারের ভারত ও পশ্চিম এশিয়ার এমডি সন্দীপ গুলাটি।
সমীক্ষায় ৩৯% সংস্থা জানিয়েছে, নতুন কর্মী নেওয়ার বদলে নিয়োগের খরচ কমাতে তারা বর্তমান কর্মীদেরই উন্নত প্রশিক্ষণ দিতে আগ্রহী। ২২% অস্থায়ী কর্মী নেওয়ার পক্ষে। ৩৮% চায় নতুন কর্মী নিতে এবং ২৯% বেতন বৃৃদ্ধিতে সায় দিয়েছে। শিল্পমহল বছরে ২৪,০০০ কোটি ডলার কৃত্রিম মেধা (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই) ও ডিজিটাল পরিকাঠামোয় খরচ করছে। তবে সে ক্ষেত্রেও উন্নতির পথে বাধা হিসেবে দক্ষ কর্মী না থাকার মতো চ্যালেঞ্জকে তুলে ধরেছে সংস্থাগুলি। চৌধরির যদিও বার্তা, কৃত্রিম মেধা আসা সত্ত্বেও কাজের ক্ষেত্রে মানুষের ‘মাথা, মন এবং হাত’ জরুরি। তাই বিদ্যালয় থেকেই তরুণ প্রজন্মকে তৈরি করতে হবে।