Income Tax

১৫ লক্ষ পর্যন্ত আয়ে কমবে আয়কর? বাজারের ঝিমুনি কাটাতে পদক্ষেপের সম্ভাবনা

ভারতে অর্থনীতির ঝিমুনি কাটাতে বাজারে চাহিদা বাড়ানো জরুরি। সে জন্য বাড়াতে হবে সাধারণ মধ্যবিত্তের কেনাকাটা। চড়া মূল্যবৃদ্ধি আর বাড়তে থাকা সংসার খরচের ধাক্কায় যা কমছে বহু দিন ধরে।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৭:২৮
বাজেটে কর কমানোর কথা ঘোষণা করতে পারেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।

বাজেটে কর কমানোর কথা ঘোষণা করতে পারেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

অর্থনীতিবিদদের অনেকেই মনে করছেন, ভারতে অর্থনীতির ঝিমুনি কাটাতে বাজারে চাহিদা বাড়ানো জরুরি। সে জন্য বাড়াতে হবে সাধারণ মধ্যবিত্তের কেনাকাটা। চড়া মূল্যবৃদ্ধি আর বাড়তে থাকা সংসার খরচের ধাক্কায় যা কমছে বহু দিন ধরে। এই পরিস্থিতিতে সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের দুই সূত্র জানাল, সমস্যা যে বড় আকার নিচ্ছে বুঝতে পারছে সরকারও। তাই আসন্ন বাজেটে আয়করে ছাড় দিয়ে সাধারণ রোজগেরে মানুষের হাতে খরচযোগ্য টাকার সংস্থান বাড়াতে চাইছে তারা। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি বাজেটে কর কমানোর কথা ঘোষণা করতে পারেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।

Advertisement

সূত্রের খবর, ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ের ক্ষেত্রে কমতে পারে করের হার। তাতে বিশেষত শহরের মধ্যবিত্ত চাকরিজীবীরা উপকৃত হবেন। যাঁদের জীবনযাপনের খরচ এত বেড়েছে যে আয়ের টাকায় কুলিয়ে উঠতে পারছেন না। অথচ সরকারি সুযোগ-সুবিধা তেমন পান না। সূত্র বলছে, ২০২০-তে চালু নতুন কর কাঠামোর আওতাভুক্ত করদাতারাই নতুন হারের সুবিধা পাবেন। এতে এখন বার্ষিক ৩ লক্ষ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে ৫%-২০% কর দিতে হয়। তার বেশি আয় হলে ৩০%। রিবেটের সুবিধা ধরে শর্তসাপেক্ষে ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করমুক্ত। কিছু মহলের ধারণা, আগামী বাজেটে ওই সীমা বাড়ানো হতে পারে।

এখন অবশ্য পুরনো কর কাঠামোও চালু আছে। তাতে বিমার প্রিমিয়াম, গৃহঋণের কিস্তি, বাড়ি ভাড়া ইত্যাদিতে কর ছাড় মেলে। নতুন ব্যবস্থায় বেশির ভাগ ছাড় তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে আয়ের বিভিন্ন ধাপে করের হার এখানে কম। সংবাদ সংস্থাটির অবশ্য দাবি, সূত্র করের হার কমানো হবে জানালেও কতটা কমবে বলেনি। শুধু ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, বাজেট পেশের ঠিক আগে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সরকারি সূত্রের দাবি, কর কমলে বহু করদাতা নতুন ব্যবস্থায় শামিল হবেন। তবে এতে রাজকোষের কতটা ক্ষতি হবে তার ইঙ্গিত মেলেনি। একাংশের অবশ্য বার্তা, সরকার সর্বাধিক কর পায় বার্ষিক কমপক্ষে ১ কোটি টাকা রোজগেরেদের থেকে। তাঁরা ৩০% হারে কর দেন।

সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, আর্থিক বৃদ্ধির শ্লথ গতি চিন্তা বাড়াচ্ছে সরকারেরও। জুলাই-সেপ্টেম্বরে তা নেমেছে ৫.৪ শতাংশে, যা গত সাতটি ত্রৈমাসিকে সর্বনিম্ন। খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এখনও চড়া। পরিসংখ্যানে স্পষ্ট, চাহিদা কমেছে সাবান, শ্যাম্পু, বিস্কুট থেকে শুরু করে গাড়ি, স্কুটার, মোটরবাইক ইত্যাদির। মধ্যবিত্ত ক্রেতার অভাবে সাধ্যের ফ্ল্যাট-বাড়ির বাজার কার্যত ঝিমোচ্ছে। এই অবস্থায় কেন্দ্রের আশঙ্কা, আমজনতার হাতে খরচের জন্য অতিরিক্ত টাকা তুলে দিয়ে বাজারে চাহিদা বাড়ানোর ব্যবস্থা না করলে বৃদ্ধি আরও মুখ থুবড়ে পড়তে পারে। তার উপর পণ্যের দামের পাশাপাশি আয়করের চড়া হার এবং বেতনের শ্লথ বৃদ্ধি সমাজের একাংশের জীবনযাপন কঠিন করছে, এই ক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছে দেশে। আর মধ্যবিত্তের সেই অসন্তোষকে হাতিয়ার করে সরকারকে আক্রমণ করছে বিরোধী শিবির। যে কারণে আয়করের হার কমানোর ভাবনা, দাবি সূত্রের।

অনেকে অবশ্য মনে করাচ্ছেন, গত বারও আয়করে সুরাহার ইঙ্গিত ছিল। কিন্তু খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। এ বার ছবিটা আলাদা হয় কি না তা দেখতে অপেক্ষা আর মাস খানেকের।


Advertisement
আরও পড়ুন