রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির মুনাফা হয়েছিল সর্বোচ্চ। —প্রতীকী চিত্র।
কমছিল অনুৎপাদক সম্পদ (এনপিএ), বাড়ছিল মুনাফা। মূল্যায়ন সংস্থা ইন্ডিয়া রেটিংস অ্যান্ড রিসার্চের সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, ভারতের ব্যাঙ্কগুলির মুনাফা করার ক্ষমতা এ বার শিখরে পৌঁছেছে। আগামী অর্থবর্ষ থেকে দেখা যেতে পারে বিপরীত গতি। ঋণ নেওয়ার খরচ বৃদ্ধি, অনাদায়ি ঋণ ফের মাথা তোলা, রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের নতুন নিয়ম-সহ বিভিন্ন কারণে মুনাফা কিছুটা কমতে পারে। তবে স্বস্তির দিক হল, এই বিরূপ বিষয়গুলির শাখাপ্রশাখা মেলার সম্ভাবনা বিশেষ নেই।
রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির মুনাফা হয়েছিল সর্বোচ্চ। কিন্তু তার পর থেকে অসুরক্ষিত খুচরো ঋণে এনপিএ-র হার মাথা তুলতে দেখা যাচ্ছে। সুদ বৃদ্ধির ফলে ঋণ বৃদ্ধির গতি কমেছে। এই সমস্ত কারণে চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবর্ষে একটা বাঁকের মুখে এসে পৌঁছেছে ব্যাঙ্কিং ব্যবসা। এ বার মুনাফা কিছুটা হলেও কমার পালা। ইন্ডিয়া রেটিংসের প্রধান এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত শাখার ডিরেক্টর কল্যাণ গুপ্ত বলেন, ‘‘২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে (ব্যাঙ্কগুলির) মুনাফার ক্ষমতা কিছুটা কমতে পারে। ২০২৩-২৪ সালে ঋণের খরচ হয়েছিল দশকের সর্বনিম্ন। তার পরে সেই খরচ অনেকটা বেড়েছে। মূলত তার জেরে এবং অনাদায়ি ঋণ মাথা তোলার প্রভাব পড়তে পারে মুনাফায়।’’
ইন্ডিয়া রেটিংস বলছে, দেশের ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে ৫০,০০০ টাকার থেকে কম অঙ্কের অসুরক্ষিত ঋণের পরিমাণ সামগ্রিক ঋণের মাত্র ০.৪%। সুদের হার ১১ শতাংশের উপরে, এমন ঋণও ৩.৬ শতাংশের বেশি নয়। তবে এই সমস্ত ক্ষেত্রেই অনাদায়ি ঋণ বৃদ্ধির প্রবণতা বাড়ায় কিছুটা উদ্বেগ তৈরি হচ্ছে। আবার চড়া মূল্যবৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক ধাপে ধাপে সুদের হার বাড়িয়েছে। তার জেরে চড়েছে ঋণের খরচ। তার ফলে এ বছর ঋণ বৃদ্ধির হার ১৫% থেকে নেমে কিছুটা নেমে হয়েছে ১৩%-১৩.৬%। একাংশ আবার বলছে, নতুন অর্থবর্ষে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের নতুন নিয়ম চালু হতে পারে। সে ক্ষেত্রে প্রকল্পে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে এনপিএ খাতে সংস্থান বাড়াতে হবে ব্যাঙ্কগুলিকে। ফলে ঋণের পুঁজি কমবে। শক্তিকান্ত দাস গভর্নর থাকাকালীন এই সমস্ত প্রস্তাব দিয়েছিল শীর্ষ ব্যাঙ্ক। নতুন গভর্নর সঞ্জয় মলহোত্রের আমলে প্রস্তাবের কড়াকড়িগুলি কিছুটা কমানো হলেও একেবারে তরল হয়তো হবে না।