ডিজিটাল প্রতারণা বন্ধ করতে এ বার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য নিচ্ছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই)। তৈরি হয়েছে ‘মিউল হান্টার ডট এআই’ নামের কৃত্রিম মেধার মডেল। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস জানিয়েছেন, এআই মডেলটির সাহায্যে অতি সহজেই ঠেকানো যাবে ডিজিটাল জালিয়াতি। চিহ্নিত করা যাবে অর্থ পাচারের অ্যাকাউন্টগুলিকে।
একটা সময় ছিল যখন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বিপুল অর্থ লেনদেন করার উপর ছিল না কড়া আইন। কিন্তু বর্তমানে সেই অবস্থার বদল ঘটিয়েছে আরবিআই। মিউল হান্টার এআই প্রযুক্তিটি তৈরি করেছে বেঙ্গালুরুর আরবিআইয়ের উদ্ভাবনী হাব। আগামী দিনে এই প্রযুক্তিকে আরও উন্নত করার চেষ্টা চলবে বলে জানিয়েছেন রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর।
আরবিআই জানিয়েছে, মিউল হান্টার ডট এআই একাধিক ক্ষেত্রে আর্থিক সুরক্ষা প্রদানের কাজ করবে। এর মধ্যে অন্যতম হল সাইবার নিরাপত্তা। দ্বিতীয়ত, জালিয়াতির জন্য প্রতারকদের ব্যবহৃত অ্যাকাউন্টগুলির চিহ্নিতকরণ। বর্তমানে দু’টি বড় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সুরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করছে। এই ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য অন্য ব্যাঙ্কগুলিকেও উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।
দীর্ঘ দিন আর্থিক প্রতারণাকে শূন্যে নামিয়ে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। মিউল হান্টার ডট এআইকে সেই লক্ষ্যে অন্যতম বড় পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন ‘অ্যাসোসিয়েশন অফ সার্টিফায়েড ফিন্যান্সশিয়াল ক্রাইম স্পেশালিস্ট’-এর কার্যনির্বাহী সদস্য শীতল আর ভরদ্বাজ। তাঁর কথায়, ‘‘জালিয়াতেরা সাধারণ ভাবে হ্যাকিং বা সাইবার প্রতারণায় পাওয়া অর্থ অন্য অ্যাকাউন্ট স্থানান্তরিত করে থাকে। এর জন্য একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে তাঁরা। আর সেই ফাঁদে পা দেন নিরীহ নাগরিকদের একাংশ।’’
সাইবার বিশেষজ্ঞদের দাবি, চাকরি বা কাজের লোভ দেখিয়ে অনেককে অ্যাকাউন্ট খুলতে উৎসাহিত করে প্রতারকদের গ্যাং। এর পর ওই অ্যাকাউন্টগুলিই টাকা লেনদেনের জন্য ব্যবহার করেন তাঁরা। আর তাই এগুলিকে বলা হয় মিউল (খচ্চর) অ্যাকাউন্ট।
সাইবার প্রতারণাকাণ্ডে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করলেও গোয়েন্দাদের পক্ষে টাকা উদ্ধার করা বেশ কঠিন। কারণ খচ্চর অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করা প্রায় অসম্ভব। মিউল হান্টার ডট এআই সেই কাজটাই করবে বলে জানিয়েছে আরবিআই।