গৌতম আদানি। —ফাইল চিত্র।
আবার ফাঁপরে গৌতম আদানি এবং তাঁর মালিকানাধীন আদানি গোষ্ঠী। আমেরিকায় ভারতীয় শিল্পপতি-সহ সাত জনের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকার ঘুষ এবং আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠার পরই বৃহস্পতিবার আদানি গোষ্ঠীর সংস্থাগুলির শেয়ার দর ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। গৌতম এবং বাকিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ভারতের সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প, যা থেকে ২০ বছরের ২০০ কোটি ডলার লাভ করা সম্ভব হত, সেই প্রকল্পের চুক্তি নিজেদের হাতে করতে ভারতের সরকারি কর্তাদের প্রায় ২২৩৭ কোটি ঘুষের প্রস্তাব দিয়েছিলেন তাঁরা। নিউ ইয়র্কের ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্টের ইউএস অ্যাটর্নি অফিস থেকে জারি করা একটি বিজ্ঞপ্তিতে সেই অভিযোগের কথা বলা হয়েছে। আর তার পরেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারের দরেও পতন দেখা গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার বাজার খুলতেই আদানি এন্টারপ্রাইজ়ের শেয়ারের দাম ১০ শতাংশ কমে ২,৫৩৯.৩৫ টাকা হয়েছে। আদানি গ্রিন এনার্জির শেয়ারের দর ১৭ শতাংশ কমে হয়েছে ১১৭২.৫০ টাকা। আদানি এনার্জি সলিউশনের দাম পড়েছে সবচেয়ে বেশি। ওই সংস্থার শেয়ারের দাম ২০ শতাংশ কমে ৬৯৭.২৫ টাকা হয়েছে। আমেরিকার অভিযোগের তির গৌতমের দিকে পড়তেই আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারের দর হু হু করে নামতে থাকে। ভারতীয় শেয়ার বাজার থেকে এক ঘণ্টায় দু’লক্ষ কোটি টাকার সম্পদ হারিয়েছে আদানি গোষ্ঠী।
ঘুষ-কাণ্ডে নাম জড়িয়েছে গৌতমের ভাইপো সাগর আদানিরও। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, গৌতম এবং তাঁর ভাইপো, দু’জনের বিরুদ্ধেই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আমেরিকার প্রশাসন। বাকি ছয় অভিযুক্তের মধ্যে রয়েছেন ‘আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেড’-এর সিইও বিনীত জৈন, রঞ্জিত গুপ্ত, রূপেশ আগরওয়াল, অস্ট্রেলিয়া ও ফ্রান্সের নাগরিক সিরিল ক্যাবানেস, সৌরভ আগরওয়াল এবং দীপক মলহোত্র। আদানি গোষ্ঠীর এক মুখপাত্র সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, শীঘ্রই সংস্থার পক্ষ থেকে এই অভিযোগ সম্পর্কে একটি বিবৃতি জারি করা হবে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে প্রকাশিত হয় হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট। সেই রিপোর্টে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে শেয়ার দরে কারচুপির অভিযোগ ওঠে। ধস নামে শিল্পপতি গৌতম আদানির বিভিন্ন সংস্থার শেয়ারদরে। অনেকে বলতে শুরু করেন, আদানির সাম্রাজ্যের ইতি ঘটল। রাতারাতি এই গোষ্ঠীর বাজারদর পড়ে যায়। অর্থাৎ, যে সংস্থার বাজারদর ছিল ১৯ লক্ষ কোটি টাকা, তা প্রায় ৭ লক্ষ কোটি টাকা হারিয়ে সাড়ে ১২ লক্ষ কোটি টাকায় এসে পৌঁছয়। এক বছর পর পরিস্থিতি কিন্তু অনেকটাই সামলে নিয়েছিলেন আদানি। ফিরছিলেন স্বমহিমায়। কিন্তু এক বছরের মধ্যেই আবার কালি লাগল আদানির নামে।