ভাই-বোনের পবিত্র সম্পর্কের একটি উৎসব ভাইফোঁটা। এই দিন বোন ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দিয়ে তার দীর্ঘায়ু ও মঙ্গল কামনা করে। অপরদিকে ভাইরা তাদের বোনকে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দেয় এই দিন।
ভাই বোনের প্রতি ভালবাসা ও সম্মান প্রদর্শনের একটি বিশেষ উৎসব এইটি। স্থানভেদে এই উৎসব আবার ‘ভাই দুজ’, ভাই টিকা, যম দ্বিতীয়া নামেও পরিচিত।
সাধারণত প্রতি বছর কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয় দিনে পালিত হয় ভাইফোঁটা। তাই একে অনেকে ভ্রাতৃদ্বিতীয়াও বলেন। আবার কিছু জায়গায় প্রতিপদের দিনই ভাইফোঁটা পালিত হয়।
প্রতিপদে ভাইফোঁটা বিষয়টি অবাক করা হলেও পূর্ববঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বহু কাল ধরে প্রতিপদ এবং দ্বিতীয়া মিলে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে ভাইফোঁটা।
ভাইফোঁটা দেওয়ার দিন-ক্ষণ তিথি থেকে শুরু করে ফোঁটা দেওয়ার সময়ে বলা ছড়া, ইত্যাদির মধ্যে দুই বঙ্গের বেশ কিছুটা পার্থক্য আছে।
‘ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যম দুয়ারে পড়ল কাঁটা’র এই ছড়া প্রতিপদে বদলে হয়ে যায়, ‘প্রতিপদে ফোঁটা দ্বিতীয়াতে নীতা, আজ হতে ভাই আমার যম দুয়ারে তিতা।’
লোকমুখে এই ছড়ার মানে, প্রতিপদে ভাইকে ফোঁটা দেবে বোন। পর দিন দুপুরে ভাইবোনের এই উৎসব উপলক্ষে হবে খাওয়া দাওয়া আর আনন্দ।
পূর্ববঙ্গে ভাইফোঁটা প্রতিপদে দেওয়ার কারণ, আগে যাতায়াতের ভরসা ছিল কেবল জল। আর তাতে নৌকা বেয়ে বাড়ি ফেরা। তাই ফোঁটা নিতে এসে সেই দিনেই বাড়ি ফিরে যাওয়া ছিল অসম্ভব।
তাই আগের দিন ভাইদের ফোঁটা দিত বোনেরা। পর দিন শুধুই খাওয়া দাওয়া হত। সেই রীতি এখনও মেনে পালিত হয় প্রতিপদে ভাইফোঁটা। এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ