বৃষ্টি দিনে মাইথন যেন তন্বী! পুজোয় বৃষ্টি পড়লে নির্দ্বিধায় পাড়ি দিন অল্প দূরের এই ঠাঁইয়ে। মন সাফা হয়ে যাবে।
প্রদীপ্ত চক্রবর্তী
শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৬:৩০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
ঝিম ঝিমে বৃষ্টির সময় কিন্তু মাইথন অপরূপা! হাতে দু’দিন ছুটি পেলেও ঘুরে আসতে পারেন। ক’দিন ধরে বৃষ্টির যা বহর, তাতে মাইথন যাওয়ার আদর্শ সময় ঘনিয়ে উঠছে। হুট বলে ছুট লাগান।
০২১৬
মাইথনে ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্যুরিজমের ট্যুরিস্ট লজ আছে। টিলার উপর মন ভোলানো সে ঠাঁই। বিশেষত কটেজগুলি দুর্দান্ত।
০৩১৬
যেতে পারেন গাড়িতে। অথবা ট্রেনে। ট্রেনে গেলে ব্ল্যাক ডায়মন্ড এক্সপ্রেস। হাওড়া থেকে ঘন্টা চারেকের মামলা।
০৪১৬
বরাকরে সকাল দশটায় ট্রেন থেকে নেমে একটা অটো নিয়ে ট্যুরিস্ট লজ-এ চলে যান সোজা। ঘর থেকেই দেখছি আলসেমি করতে করতে দেখবেন, নৌকার দল বয়ে যাচ্ছে লেকের জলে।
০৫১৬
দুপুরের খাওয়ার ব্যাপারটা বলে দিয়েই একটু পায়ে হেঁটে দেখার জন্য বেরিয়েও পড়তে পারেন বাঁধের দিকে। মাইথন যাবেন, আর বোটে চড়বেন না, তাই কি হয়! হয় না তা!
০৬১৬
অত এব একটা বোট নিয়ে জলাধারের বিপুল জলরাশির মধ্যে ভেসে পড়ুন। যদি বৃষ্টি তেমন নাগাড়ে না থাকে। আর আকাশ ফাটা বৃষ্টি হলে, লজেই এলিয়ে দুলিয়ে থাকুন। তাতেও তোফা লাগবে।
০৭১৬
বৃষ্টি ধরে গিয়ে মেঘমুক্ত আকাশ থাকলে নানা রঙের বোটের গায়ে রঙের ঝলকানি দেখবেন শুধু। তবে আকাশে মেঘ থাকলে নানা রঙে সাজানো বোটগুলিকে বিবর্ণ লাগে। সাদা কালোর মেলামেলি সে’ও এক অন্য রূপ।
০৮১৬
অদ্ভুত লাগে বিশাল জলরাশির মধ্যে ইতিউতি জেগে থাকা ছোট্ট ছোট্ট টিলাগুলিকে। এরাই মাঝে মাঝে দ্বীপের মত তৈরি জমি তৈরি করেছে। তাদেরই একটি হল সবুজ দ্বীপ। এখানে বোট কিছুক্ষণের জন্য বিরতি দেয়।
০৯১৬
নেমে ঘুরে দেখুন। ভারী ভাল লাগে আধডোবা গাছের দল, জলের তরঙ্গে তাদের ভাঙা ভাঙা প্রতিফলন। সবটা জুড়ে বড় মায়া। দেখা, আবার না দেখাও সেই মায়া।
১০১৬
নীল জলে সবুজ টিলা তো অচেনা নয়, কিন্তু এই অচেনা ছবি তো আশাতীত প্রাপ্তি। কিছু অর্থ বেশি দিয়ে মাঝিকে আরও একটু দূরে নিয়ে যেতে বলুন।
১১১৬
দেখবেন পানকৌড়ির দল জল ছুঁয়ে উড়ে যাচ্ছে, জলের সরসরে শব্দ, সোঁ সোঁ হাওয়ার ডাক আপনাকে বুঁদ করে দেবে। ঘড়ি যখন তাড়া দেবে, তখন ফিরতে থাকুন। দুপুরের খাওয়া বাকি যে।
১২১৬
বিকেলটা ঘরে বসে কাটিয়ে দিন। লাগোয়া বারান্দায় বসে দেখুন ধীরে ধীরে সন্ধ্যা নামছে। সূর্যদেবের সঙ্গে রঙিন বোটের দল রঙ ছড়াবে। তার পর অন্ধকারের দখলদারি।
১৩১৬
সকালে ঘুম ভেঙে দেখুন লেকের ঘুম ভাঙছে ফুলের পাপড়ির মতো। ক্যামেরা বাগিয়ে বেরিয়ে পড়ুন। কাল যে দিকে গিয়েছিলেন তার উল্টো দিকে। লজের পাশ দিয়ে একটা পাকদন্ডি মত নেমে গিয়েছে চোরা পথে সোজা জলের ধারে।
১৪১৬
বোটের দল তখনও সার বেঁধে দাঁড়িয়ে। নরম আলোয় জলে টিলার সেই পুরনো ছবি, পাম্পিং ষ্টেশনের জন্য যাওয়া জলের পাইপের প্রতিচ্ছবি। আরও এক আস্ত মায়ার আস্তরণ। শান্তির, নীরবতার চিত্ররূপ যেন।
১৫১৬
অনেকটা সময় কাটিয়ে ফিরে আসুন হোটেলে। বারান্দায় আলস্য ভরে বসে থাকুন। দশটা নাগাদ গাড়ি নিয়ে কল্যাণেশ্বরী মন্দির, পাঞ্চেত দেখে নিন।
১৬১৬
তবে সুবিশাল পাঞ্চেত মাইথনের প্রাণ চাঞ্চল্যের কাছে নিষ্প্রাণ লাগতে পারে। আসলে আবিষ্ট করে রাখা মাইথন সারাক্ষণ মাথার মধ্যে বোঁ বোঁ করে চক্কর মারে যে!