রয়্যাল প্যালেস থেকে মেট্রো স্টেশন, সুইডেনের আকাশে-বাতাসে কান পাতলে শোনা যায় নানা শিহরণ জাগানো ঘটনা
আমাদের চারপাশে কি আমরা একাই আছি নাকি আরও কিছু আছে? আর যদি কিছু থেকেই থাকে, তা হলে সেটা কী? কী পরিচয় সেই জগতের? এ রকম নানা কথা মাঝে মধ্যেই উঠে আসে নানা তথ্যের মাধ্যমে।
শীর্ষেন্দু সেন
সুইডেনশেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ২২:৩৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
কী আছে মৃত্যুর পরে? সারা জীবনে এ কথাটা ভাবেননি, এ রকম মানুষ খুব কমই আছেন। কিন্তু এর কোনও সদুত্তর কেউ দিতে পারেননি আজ পর্যন্ত। আমাদের চারপাশে কি আমরা একাই আছি নাকি আরও কিছু আছে? আর যদি কিছু থেকেই থাকে, তা হলে সেটা কী? কী পরিচয় সেই জগতের? এ রকম নানা কথা মাঝে মধ্যেই উঠে আসে নানা তথ্যের মাধ্যমে।
০২১৫
সুইডেনের বয়ভাটনেটে উপাচার্যদের থাকার একটি জায়গা রয়েছে। লোকে বলে, জায়গাটি নাকি অভিশপ্ত। এখানে নানা রকমের ভয়ের ঘটনার উল্লেখ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। যেমন, হঠাৎ একটি আরামকেদারা জোরে জোরে দুলতে থাকে। শুকোতে দেওয়া জামা আড়াআড়ি ভাবে ছিঁড়ে যায়।
০৩১৫
খুব জোরে কেউ দরজায় আঘাত করে, অথচ বাইরে কেউ নেই। কিংবা আপনি হয়তো দুপুরে ঘুমোচ্ছেন। হঠাৎ আপনার চোখ খুলে যাবে, দেখবেন আপনার মুখের দিকে কেউ তাকিয়ে আছে! আপনি ভয়ে চিৎকার করে উঠবেন, আর তার পরেই দেখবেন কেউ কোথাও নেই। কিন্তু ঘরে কেউ হাততালি দিচ্ছে!
০৪১৫
এতটাই ভয়ানক এ সব ঘটনা যে ১৯৮০ সালে এক পাদ্রি এসে চেষ্টা করেন এই জায়গাকে অভিশাপ মুক্ত করতে। কিন্তু সমস্ত চেষ্টাই নাকি বিফলে যায়। এখন এই এলাকায় একটি ছোট হোটেল খোলা হয়েছে। সাহস থাকলে আপনিও গিয়ে কাটিয়ে আসতে পারেন কয়েকটি রাত। প্রেতাত্মাদের সঙ্গে।
০৫১৫
দ্বিতীয় ঘটনাটি হল স্টকহোমের রয়্যাল প্যালেসের। যে কোনও রাজবাড়িতেই কমবেশি কিছু প্রেতাত্মা থাকে বলে শোনা যায়। এ নতুন কিছু নয়। কিন্তু যদি একসঙ্গে যদি অনেকগুলো প্রেতাত্মা থাকে? স্টকহোমের রয়্যাল প্যালেসকে বাইরে থেকে দেখে কিছু বোঝার উপায় নেই যে, ভিতরে কী হচ্ছে।
০৬১৫
অথচ মাঝে মধ্যেই নাকি এক জন অত্যধিক ফর্সা মহিলাকে এখানে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। কথিত, প্যালেসের কেউ যখন মারা যায়, তখনই নাকি তাঁকে দেখা যায়। তিনি একটি গাউন পরে থাকেন। এই মহিলা সম্ভবত জার্মানির।
০৭১৫
বর্তমান রাজা ষোড়শ কার্ল গুস্তাভ জানিয়েছেন, তিনি ওই মহিলাকে দেখেছেন ঠিক তাঁর দাদু মারা যাওয়ার পরেই। প্রশ্ন উঠতেই পারে, কে এই মহিলা? কী উদ্দেশ্য তাঁর? তিনি কি মৃত্যুকে সঙ্গে নিয়ে ঘোরেন? এ ছাড়াও এক জন ধূসর চুলের মানুষকেও দেখা যেত। তিনি হেঁটে বেড়াতেন উত্তরের করিডর ধরে।
০৮১৫
তৃতীয়টি চূড়ান্ত অস্বাভাবিক একটি ঘটনা। ধরুন স্টকহোমের একটি মেট্রো স্টেশনে আপনি দাঁড়িয়ে আছেন। ঠিক তখনই একটি রুপোলি রঙের ট্রেন এল। আস্তে আস্তে ট্রেনটি যাচ্ছে আর আপনার পা যেন আপনা থেকেই ট্রেনটির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আর ঠিক তখনই আপনি অনুভব করবেন আপনার দেহ যেন অনেকটা হাল্কা। তবে কি আপনি আর বেঁচে নেই?
০৯১৫
লোকে বলে, এই ট্রেন সাক্ষাৎ যমদূত! যারা যারা এই ট্রেন দেখে চড়তে গিয়েছে, কেউই আর ফিরে আসেনি। ১৯৬৬ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত একটি রুপোলি ট্রেন চলত স্টকহোমের মাটির তলা দিয়ে। এখন একটি মিউজিয়াম আছে, যেখানে এই ট্রেনটির কিছু অংশ রাখা আছে।
১০১৫
এর পরের ঘটনাটি ইতিহাসের একটি নৃশংসতম ঘটনার সঙ্গে জড়িত। ১৫২০ সালে ড্যানিশ রাজা দ্বিতীয় ক্রিশ্চিয়ান সুইডেন আক্রমণ করেন। তাঁকে পাল্টা আক্রমণ করতে এগিয়ে আসেন সুইডিশ যোদ্ধারাও। সেই যুদ্ধে রাজা দ্বিতীয় ক্রিশ্চিয়ান নৃশংস ভাবে হত্যা করেন ৯২ জন সুইডিশ যোদ্ধাকে।
১১১৫
ঘটনাটি ঘটে গামলাস্তান নামে শহরের একটি চৌমাথার মোড়ে। সুইডিশ শব্দ ‘গামলা’ মানে পুরনো। এখনও নাকি নভেম্বরের সন্ধ্যার অন্ধকার ঘনিয়ে এলে প্রায়ই দেখা যায় রক্ত বয়ে যাচ্ছে ওই চৌমাথায়। আর রাতে শোনা যায় ৯২টি ঘোড়ার পায়ের শব্দ। অনেক সময়ে নাকি গভীর রাতে গলাকাটা ঘোড়সওয়ারও দেখা যায়!
১২১৫
আরও একটি শিহরণ জাগানো ঘটনা শোনা যায় সুইডেনের একটি জায়গা সম্পর্কে। এ জায়গাটি নিয়ে সুইডিশরা যে কী রকম আতঙ্কিত, তা তাদের কথা বলার ধরণেই টের পাওয়া যায়। চার দিকে বাগান আর মধ্যিখানে একটি সুন্দর অট্টালিকা। বাড়িটির নাম ‘শেফলার প্যালেস’।
১৩১৫
১৪১৫
১৭৯৬ সালে জ্যাকব নামে এখানকার এক প্রাক্তন মালিক হঠাৎ উধাও হয়ে গিয়েছিলেন রহস্যজনক ভাবে। শোনা যায়, তিনি নাকি শয়তানের পূজারী ছিলেন। এর পরে এখানে অনেক কিছু ঘটনা ঘটে গিয়েছে। যেমন খুন, অত্যাচার ইত্যাদি। এর মধ্যে এক তরুণ প্রেমিক যুগলকে হত্যা করা হয়েছিল। গুস্তাভ নামে এক অপেরা গায়কও এখানে আত্মহত্যা করেছিলেন। শোনা যায়, লুকিয়ে রাত কাটাতে গিয়ে বেশ কয়েক জন যুবক বেঘোরে প্রাণ হারান এই প্রাসাদে।
১৫১৫
বর্তমানে এই প্রাসাদটি স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয় দেখাশোনা করে। সাধারণের প্রবেশ নিষেধ। এ রকম নানা ঘটনাই সুইডেনের বাতাসে ভেসে বেড়ায়। কত কিছু ঘটে এই ইহজগতে। সবকিছু কি স্থূল চোখে দেখা যায়? হয়তো একটা অন্য জগত সত্যিই আছে। সে সুইডেন হোক বা ভারত! এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।