Advertisement

Associate Partner

Style Partner

Associate Partner

Weddings Partner

Food Partner

Mouliksha Devi Temple Tour

তারা মায়ের বড় বোন, রহস্যময়ী মৌলীক্ষা দেবীর গল্প জানেন? ঘুরে আসুন দুমকার মুলুটী গ্রাম থেকে

এই মুলুটীর মৌলীক্ষা মায়ের দেহহীন এক রহস্যময় মুখমণ্ডলের মূর্তি দেখা যায়। এই মূর্তির রূপ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকম, যা অনেক দর্শনার্থীও অনুভব করেছেন।

মৌলীক্ষা মা

মৌলীক্ষা মা

দুমকা শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২৪ ২৩:০৬
Share: Save:

তারাপীঠে যাননি, এমন বাঙালির সংখ্যা খুব বেশি নয়। কিন্তু এই তারাপীঠে থেকে মাত্র ৯‌ কিলোমিটার এবং রামপুরহাট স্টেশন থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরে মুলুটী গ্রামে অধিষ্ঠান দেবী মৌলীক্ষার। তাঁর কথা হয়তো জানেন না বহু মানুষই।

ঝাড়খণ্ডের দুমকা জেলায় এই মুলুটী গ্রাম। এটি একটি সিদ্ধপীঠ, যেখানে স্বমহিমায় আছেন অধিষ্ঠাত্রী দেবী মা মৌলীক্ষা। অনেকে বলেন, তিনি তারা মায়েরই বোন। শোনা যায়, এক সময়ে সাধক বামদেব এই নাকি নিজে হাতে মৌলীক্ষা মায়ের পুজো করতেন। এমন অনেক দিন গিয়েছে, বামদেব সারা দিন কাটিয়েছেন এই মন্দিরেই, স্বহস্তে খাইয়েছেন মাকে। এই মৌলীক্ষা মন্দিরকেও বামাক্ষ্যাপার সাধনার অন্যতম উৎসস্থল বলা যায়। কথিত, বামাক্ষ্যাপা তাঁর অনুগামী ও শিষ্যদের বলতেন, ‘আগে মৌলীক্ষা মায়ের কাছে যা শিক্ষা নিয়ে আয়, তার পরে তারাপীঠে আসবি!’ এই কথার মধ্যেই লুকিয়ে ছিল মা মৌলীক্ষার শক্তি ও মাহাত্ম্যের কথা।

ছবি সৌজন্যে: দিব্যজ্যোতি দাস

ছবি সৌজন্যে: দিব্যজ্যোতি দাস

এই মন্দিরে বহু তান্ত্রিক ও সাধকদের আনাগোনা লেগেই থাকত এক সময়ে। শোনা যায়, আশ্চর্য ক্ষমতার অধিকারী হঠযোগী ভাতু গোঁসাই মা মৌলীক্ষার মন্দিরে অনেক দিন কাটিয়েছেন। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, তিনি নাকি নিজের নাড়িভুড়ি পেটের ভিতর থেকে বাইরে‌ এনে‌ পরিষ্কার করে আবার শরীরের মধ্যে ঢুকিয়ে দিতেন।

বিভিন্ন বই ও পাওয়া তথ্য সূত্রে জানা যায়, এই ঐতিহাসিক ও সিদ্ধপীঠের নাম এক সময়ে ছিল মহুলটী। যার অপভ্রংশে মুলুটী নামের প্রচলন। ইতিহাস বলছে, কোনও এক সময়ে মুলুটী ছিল মল্ল রাজপাটের অংশ। এই কারণেই মুলুটীর বহু মন্দিরের গায়ে টেরাকোটার ফলক। মন্দিরের গঠনশৈলী এবং গ্রামে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা শিব মন্দিরের মধ্যে মল্ল রাজত্বের ছাপ সুস্পষ্ট ভাবে দেখা যায়। এই মুলুটীর মৌলীক্ষা মায়ের দেহহীন এক রহস্যময় মুখমণ্ডলের মূর্তি দেখা যায়। এই মূর্তির রূপ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকম, যা অনেক দর্শনার্থীও অনুভব করেছেন। মন্দিরের গর্ভগৃহ এতটাই ছোট যে, এর ভিতরে এক জন পুরোহিত ও তাঁর সঙ্গে এক-দু’জন মানুষই প্রবেশ করতে পারেন। দুর্গাপুজো ও কালীপুজো এখানে মহা ধুমধাম করে উদযাপিত হয়। ভিড় করেন পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ড, দুই রাজ্যেরই মানুষের। তা ছাড়াও রোজ থাকে নিত্যপুজো ও প্রসাদ খাওয়ার সুব্যবস্থা। মনে করা হয়, বীরভূমের মা তারার দর্শনের পরে মৌলীক্ষা মায়ের দর্শন না করলে তীর্থ অসম্পূর্ণই থেকে যায়।

এই মুলুটী গ্রামের চার দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অসংখ্য প্রাচীন শিব মন্দির। সেগুলির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া। এই গ্রামে তাই ইতিহাস ও আধ্যাত্মিকতার এক অপরূপ মেলবন্ধন।

কী ভাবে যাবেন?

তারাপীঠ থেকে যে কোনও গাড়িতে মুলুটী গ্রামে পৌঁছতে পারেন। তা ছাড়া রামপুরহাট থেকে গাড়ি ভাড়া করেও যাওয়া যায়।

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE