১. কাজিরাঙ্গা রাষ্ট্রীয় উদ্যান: প্রথমেই গুয়াহাটি যান। গুয়াহাটি থেকে বাস নিয়ে বা গাড়িতে কাজিরাঙা। যেখানকার সংরক্ষিত জঙ্গলে এক শৃঙ্গি গণ্ডার জগদ্বিখ্যাত। এটা বিরলতম প্রজাতির গণ্ডার। কাজিরাঙার জঙ্গলে ঘুরতে হবে হাতির পিঠে চেপে অথবা জিপে চড়ে। এখানে পশু-পাখি কিছুই খাঁচায় বন্দি থাকে না। এ ছাড়াও নভেম্বর থেকে এপ্রিলের মধ্যে এখানে বেড়াতে যেতে হবে। বছরের বাদ বাকি সময় বন্ধ থাকে কাজিরাঙা।
৩. মাজুলি: বিশ্বের সর্ব বৃহৎ নদী-দ্বীপ। এখানে বেশ কিছু 'বৈষ্ণব সত্র' অর্থাৎ অসমের একদা নব বৈষ্ণব ধর্ম প্রচারের প্রতিষ্ঠান, সেগুলি আছে। এখানে কিছু গ্রামে মুখোশ তৈরির কাজ হয়। এগুলি সাধারণ মুখোশ নয়। পঞ্চদশ শতাব্দীতে শ্রীমন্ত শঙ্করদেব রচিত 'অঙ্কিয়া ভাওনা' পালা বা নাটকে এই ধরনের মুখোশ ব্যবহৃত হত। এত প্রাচীন শিল্পকলাকে এখনও মাজুলির মানুষ ধরে রেখেছেন। জোরহাটের সঙ্গেই মাজুলি ঘুরে নিতে পারেন।
৪. কামাখ্যা: কামাখ্যা হচ্ছে পৌরাণিক বিশ্বাস অনুযায়ী, সতীর ৫১ পীঠের অন্যতম পীঠস্থান। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, কামাখ্যা দর্শনের আগে উমানন্দ দর্শন করতে হয়। ময়ূর দ্বীপে অবস্থিত সেই মন্দির যেতে হলে ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে এক নির্দিষ্ট জায়গা থেকে ফেরি নিয়ে উমানন্দ যেতে হয়। ব্রহ্মপুত্রের বুকে ফেরি চড়ে বেড়াতেও বেশ মজা লাগে। আর কামাখ্যা পাহাড়ের চুড়োয় অবস্থিত কামাখ্যা মন্দির গাড়ি করে যাওয়া যায়। গুয়াহাটিতে থেকে এই দু’টি জায়গাই স্বচ্ছন্দে যাওয়া যায়।
৫. মানস রাষ্ট্রীয় উদ্যান: 'ইউনেস্কো'র দ্বারা স্বীকৃত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ অর্থাৎ প্রাকৃতিক বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান এই উদ্যান। যার অন্তর্গত হিসেবে রয়েছে ব্যাঘ্র প্রকল্প সংরক্ষিত বনাঞ্চল বা টাইগার রিজার্ভ প্রোজেক্ট এবং হাতি সংরক্ষিত বনাঞ্চল। বনাঞ্চলের উত্তরে মানস নদী তথা ভূটান রাজ্য থেকে দক্ষিণে বাঁহবাড়ি, পালসিগুরি ও কাটাঝাড় গাঁও এবং পশ্চিমে সোনকোশ নদী থেকে পূর্বে ধনশিরি নদী পর্যন্ত এই সুবিশাল রাষ্ট্রীয় উদ্যানটি বিস্তৃত। কাজিরাঙার মতো এটাও বেড়াতে যেতে হবে নভেম্বর থেকে এপ্রিলের ভিতর। বছরের বাকি সময় বন্ধ থাকে। আর মানস রাষ্ট্রীয় উদ্যান বেড়াতে বিশেষ 'পারমিট' নিতে হবে।
৬. সিংফো চা বাগান: সিংফো চা বাগান দেখতে হলে প্রথমে ডিব্রুগড় যান। সেখান থেকে বাসে সিংফো গ্রাম! চায়ের চারা গাছ লাগানো থেকে শুরু করে চা-পাতা তুলে চা উৎপাদনের প্রতিটি পদক্ষেপ দেখতে পাবেন এখানে। কথিত আছে, ভারত শাসনকালে ব্রিটিশরাও নাকি প্রথম এই সিংফো আদিবাসীদের থেকেই চা গাছ লাগানো শিখেছিল। পর্যটকদের জন্য সিংফো চা বাগানে 'টি টেস্টিং সেশন' অর্থাৎ বিভিন্ন রকমের স্বাদের চা চেখে দেখার সুবন্দোবস্ত আছে।
৭. হাফলং: হাফলং পড়ে অসমের ডিমাহাসাও জেলায়। উচ্চতা ৫১২ মিটার। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর মনোরম জলবায়ুর জন্য হাফলং-কে উত্তর পূর্ব ভারতের সুইজারল্যান্ড বলা হয়। অবশ্য বরফ পড়ে না। তবে গুয়াহাটি থেকে জায়গাটি বেশ দূরে। শিলচর থেকে হাফলং গেলে সুবিধে হয়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের স্বাদ পেতে হলে অবশ্যই হাফলং যান। সেই সঙ্গে ঘুরে নিন জাটিঙ্গা। হাফলং থেকে মাত্র ৯ কিলোমিটার দূরের এই গ্রাম নানান ধরনের পাখিদের জন্য বিখ্যাত। তবে শোনা যায়, কোনও অজানা কারণে অগস্ট থেকে নভেম্বরের মধ্যে অনেক পাখি এখানে এসে আত্মহত্যা করে।
৮. মাইবং: হাফলং থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে মাইবং। জায়গাটা এক কালে অসমের কাছাড়ি রাজাদের আমলের রাজধানী ছিল। সেই প্রাসাদের কিছু অংশ এখনও দেখা যায় মাইবং বেড়াতে গেলে। এ ছাড়াও রয়েছে রামচন্ডী মন্দির। রাস্তায় যেতে যেতে অনেক সুন্দর ঝর্না দেখতে পাবেন। হাফলং বেড়াতে গেলে ৩-৪ দিনের পরিকল্পনা নিয়ে যান, এক সঙ্গেই মাইবং ঘুরে নিতে পারবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy