প্রতীকী চিত্র
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে গিয়েছে রিয়েল এস্টেট শিল্প। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে অনেকটাই সহজ হয়ে গিয়েছে বাড়ি কেনা। সরল হয়ে গিয়েছে গৃণঋণের বিষয়টিও। কিছু দিন আগে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া ব্যাঙ্কগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে, গ্রাহকেরা তাঁদের সুবিধা মতো ঋণের সুদের হার স্থির করতে পারবেন।
বিষয়টা আরও একটু সহজ করে বলা যাক। গৃহঋণ নেওয়ার সময়ে ব্যাঙ্ক বা কোনও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তরফে পরিশোধের সুদের ক্ষেত্রে দু’টি বিকল্প দেওয়া হয়। একটি হল ফিক্সড রেট। অপরটি ফ্লোটিং। গ্রাহকেরা নিজেদের সুবিধা মতো ঋণ নেওয়ার সময়ে যে কোনও একটি পথ বেছে নিতে পারেন। প্রশ্ন হল, কোনটি বাছবেন? কোন ধরনের বিকল্পে গ্রাহকদের সুবিধা বেশি? চলুন, দেখে নিই।
মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া গত দু’-তিন বছরে প্রায় আড়াই থেকে তিন শতাংশ সুদের হার বাড়িয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে ব্যাঙ্কগুলিতেও। সব রকম ঋণের ক্ষেত্রেই বেড়েছে সুদের হার। আগেই বলা হয়েছে, গৃহঋণের ক্ষেত্রে সাধারণত দু’রকম ভাবে সুদের হার নির্ধারণ করা হয়ে থাকে— ফিক্সড রেট ও ফ্লোটিং রেট। প্রথমেই জানতে হবে এদের পার্থক্য কী।
ফ্লোটিং রেটে গৃহঋণের সুদের হার বাজারের পরিস্থিতির উপরে নির্ভর করে। অর্থাৎ রেপো রেটের হার বদলালে সুদের হারও বদলায়। আরও সহজ করে বললে, যদি রেপো রেট বেড়ে যায়, সুদের হারও বাড়তে থাকে। আবার রেপো রেট কমে গেলে, সুদের হারও কমে যায়। প্রথম ক্ষেত্রে এর ফলে ঋণের মাসিক কিস্তি বা ইএমআই বাড়ে। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে কিস্তির পরিমাণ কমে।
অন্য দিকে, ফিক্সড রেটের ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কের তরফে ঋণ দেওয়ার সময়ে প্রথমেই ঠিক করে দেওয়া হয়, কত শতাংশ সুদের হার নেওয়া হবে। এই ক্ষেত্রে রেপো রেটের পরিবর্তনের সঙ্গে ইএমআই বা মাসিক কিস্তি পরিবর্তনের কোনও সম্পর্ক নেই। সম্পূর্ণ মেয়াদ জুড়ে সুদের হার একই থাকে। এই ধরনের ঋণের ক্ষেত্রে ঋণগ্রহীতা প্রথমেই আন্দাজ করতে পারেন তিনি কত দিন ধরে কত টাকা দিয়ে তা পরিশোধ করতে পারবেন। এই ক্ষেত্রে ঋণের মেয়াদ ও কিস্তির পরিমাণ কখনই পরিবর্তন হয় না।
যদিও বিভিন্ন রিপোর্ট অনুসারে, ফ্লোটিং রেটের তুলনায় ফিক্সড রেটের ক্ষেত্রে ঋণে সুদের হার অন্তত ১ শতাংশ বেশি হয়।
সাধারণত, কোনও ঋণগ্রহীতা তখনই ফিক্সড রেটে ঋণ নেন, যখন তাঁর মনে হয় ভবিষ্যতে সুদের হার তেমন কমবে না। যদিও সুদের হার ও কিস্তির পরিমাণ সঠিক ভাবে নির্ধারণ করা খুবই কঠিন। অন্য দিকে, কোনও ব্যক্তি যদি এক ব্যাঙ্ক থেকে অন্য ব্যাঙ্কে গৃহঋণ স্থানান্তর করেন, তা হলে অবশ্যই দেখে নেওয়া উচিত সুদের হারের ফারাক যেন ২ শতাংশের বেশি না হয়। তবে এ ক্ষেত্রে কিছু টাকা অতিরিক্ত খরচও করতে হয়।
বর্তমানেই সেমি-ফিক্সড হারে গৃহঋণ নেওয়ারও চল বেড়েছে। এই ক্ষেত্রে ফিক্সড ও ফ্লোটিং রেট, উভয়েরই সুবিধা পাওয়া যায়। এই ধরনের ঋণের ক্ষেত্রে ২, ৩, ৫ এবং ১০ বছর পর্যন্ত সুদের হার স্থির থাকে। সংশ্লিষ্ট সময় পার হয়ে গেলে সুদের হার পরিবর্তিত হতে থাকে।
মনে রাখবেন, ফিক্সড ও ফ্লোটিং রেটের মধ্যে সুদের হারের একটা পরিবর্তন থেকেই যায়। আসলে ব্যাঙ্কও ফ্লোটিং রেটে ঋণ দিতেই বেশি পছন্দ করে। তবে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্দেশ অনুসারে, বর্তমানে গ্রাহকেরা ইচ্ছা মতো ফিক্সড রেটে ঋণ পরিবর্তন করতে পারেন। তবে সুদের হারের বিরাট কিছু পরিবর্তন না হলে গ্রাহকদের এ ক্ষেত্রে তেমন কোনও সুবিধা নেই।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy