The Fascinating Story Behind the Green Kali in Hooghly dgtl
Green Kali of Hoogly
কালো কিংবা শ্যামা বর্ণ নয়, কালীর গায়ের রং দূর্বার ন্যায় সবুজ, নেপথ্যে লুকিয়ে কোন গল্প?
দেবীর গায়ের রং দূর্বার মতো সবুজ। হুগলি জেলার শ্রীপতিপুর নামক এক গ্রামে দেখা মেলে এই সবুজ কালীর।
আনন্দ উৎসব ডেস্ক
হুগলিশেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:৩২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১২
মা কালীর নাম নিলেই আমাদের মনে কৃষ্ণবর্ণা, কালো কিংবা নীল রঙের বিগ্রহের কথায় মাথায় আসে। আমরা আবার শ্বেত কালীরও কথা শুনেছি। কিন্তু কখনও কি সবুজ কালীর নাম শুনেছেন?
০২১২
হ্যাঁ আপনি ঠিকই শুনছেন সবুজ কালী! দেবীর গায়ের রং দূর্বার মতো সবুজ। হুগলি জেলার শ্রীপতিপুর নামক এক গ্রামে দেখা মেলে এই সবুজ কালীর। দেবীর এই রূপের পিছনে আছে অলৌকিক কারণ।
০৩১২
এই শ্রীপতিপুর গ্রামের অধিকার পরিবারেই পূজিত হন এই কালী। এই দেবীর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বটকৃষ্ণ অধিকারী।
০৪১২
বটকৃষ্ণ অধিকারী লেখাপড়া শেষ করে চাকরিতে যোগ দিলেও বেশিদিন তাতে মন বসাতে পারেননি। গ্রামে ফিরে গরু পালন, চাষবাস প্রভৃতি নিয়েই বেশি থাকতে ভালবাসতেন ।
০৫১২
গ্রামের কাছেই ছিল এক শ্মশান। সেখানে গোরু বেঁধে শ্মশানের কাছেই মাঠে বসে বাঁশি বাজাতেন বটকৃষ্ণ আর সবাই তা মুগ্ধ হয়ে শুনতেন। সেই সময় থেকেই সাধনার আশ্রয় নেন তিনি। অগত্যা সেই শ্মশানেই সাধনা শুরু করেন ।
০৬১২
একদিন শ্মশানের কাছে গরুর খুঁটি বাঁধতে গিয়ে বটকৃষ্ণ অধিকারী বুঝতে পারেন তাকে কেউ পিছন থেকে নাম ধরে ডাকছেন। পিছন ফিরে তাকাতেই তিনি দেখতে পান একজন পুরুষ তাঁকে দীক্ষা দেবেন বলে ডাকছেন।
০৭১২
সেই সাধকের নির্দেশে তিনি বাড়ি ফিরে এসে তাঁর মায়ের অনুমতি নেন এবং পরবর্তীতে সেই সাধকের কাছে গিয়েই তিনি দীক্ষা গ্রহণ করেন। এর পরে একদিন বটকৃষ্ণ অধিকারী স্বপ্নাদেশ পান। সেই স্বপ্নে দেখেন দেবী তাঁকে মূর্তি এনে বাড়িতে পুজো করার নির্দেশ দিচ্ছেন।
০৮১২
কিন্তু বৈষ্ণব পরিবার ও প্রতিবেশীদের বাধার মুখে পড়ে সেই সময় তিনি কালীমূর্তি পুজো করা থেকে পিছিয়ে যান। ফের তিনি শ্মশানে সাধনা করতে যান এবং তিনি দেখতে পান কচি দূর্বা ঘাসের ওপর শ্রীকৃষ্ণ এবং শ্যামা একসঙ্গে দাঁড়িয়ে আছেন।
০৯১২
তাঁরা বটকৃষ্ণকে বলেন শ্যামা এবং শ্যাম অভিন্ন। এটি বলার পরেই দু’টি মূর্তি পরস্পরের সঙ্গে মিশে যায় এবং তৈরি হয় এক দেবী মূর্তির। যে মূর্তির রং ছিল সবুজ।
১০১২
সেই থেকেই তিনি সবুজ কালীপুজো করার সিদ্ধান্ত নেন। এর পরেই রটন্তী কালীপুজোর দিন অধিকারী বাড়িতে প্রতিষ্ঠা হয় সবুজ কালীর বিগ্রহ।
১১১২
পুজোর বিধি: মায়ের অঙ্গরাগ হয় দূর্বাঘাসের ভিতরের কচি সবুজ পাতার রং মিশিয়ে। দীপান্বিতা শ্যামা পুজোর দিন মায়ের বিশেষ ষোড়শ উপাচারে পুজো, আরতি, আমিষ ভোগ ও হোম নিবেদন হয়। আগের দিন ভূত চতুর্দশী তিথিতে, কৃষ্ণকালী মায়ের কাছে চোদ্দপ্রদীপ জ্বালিয়ে মানত করলে নাকি মা ফেরান না। শ্যামা পুজোর দিন রাত্রি দ্বিতীয় প্রহরে মা’কে বাঁশি বাজিয়ে শোনানো হয়। রাত ন’টা থেকে বারোটা পর্যন্ত অবিচ্ছিন্ন বাঁশি বাজে। সে এক অপূর্ব দৃশ্য। ওই দিন ভোগ হিসাবে ইলিশ মাছ থাকে। কারণ এই মায়ের প্রিয় ভোগ ইলিশ মাছ আর প্রিয় পুস্পার্ঘ্য জুঁই।
১২১২
ঠিকানা: হুগলি জেলার নালিকুল স্টেশন থেকে শিয়াখালা যাবার অটো চেপে নারকেলতলা স্টপেজ় ঠনঠনেপাড়া। অধিকারী ঠাকুর বাড়ি।