রায়বাড়ির দুর্গাপুজোর বিসর্জন
টালিগঞ্জের রিজেন্ট কলোনিতে রায়বাড়ি। কলকাতার হাতেগোনা যৌথ পরিবারগুলির একটি। গত তিন বছর ধরে এই পরিবারের সদস্যরা দুর্গাপুজো করে আসছেন নিজেদের বাড়ির ছাদে। একেবারেই পারিবারিক উদ্যোগে এই পুজো ইতিমধ্যেই সাড়া ফেলেছে ঘরোয়া আমেজ ও আতিথেয়তার কারণে। তবে এ বছর এক অন্য কারণে সারা বাংলায় নজির গড়ল এই পুজো। রায়বাড়ির শারদীয়ায় মিলেমিশে গেল উৎসব ও প্রতিবাদ।
পুজোর কিছু দিন আগে থেকেই রায়বাড়ির আত্মীয়-বন্ধুরা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে জড়ো হন কলকাতায়। আট থেকে আশির প্রত্যেকেই হাতে হাতে কাজ করেন এই পুজোয়। প্রতি বছরই নাচে, গানে, অনুষ্ঠানে ভরে থাকে রায়বাড়ির উদযাপন। বিসর্জনের শোভাযাত্রা তার অন্যতম। গানের তালে নাচতে নাচতে মা দুর্গাকে কৈলাসে পাঠান পরিবারের সদস্যরা।
কিন্তু এ বছর ছবিটা একটু অন্য রকম। আরজি করের ডাক্তারি পড়ুয়ার সঙ্গে ঘটে যাওয়া নির্মম ঘটনার বিচারের দাবিই যেন হয়ে উঠেছিল এই পুজোর মূল উদ্দেশ্য। আনন্দ নয়, বিদ্রোহ। তাঁদের এ বছরের পুজোর ভাবনাই ছিল ‘পুজো করব নিয়ম মেনে, উৎসব করব বিচার পেলে’।
তাই এ বার চেনা উল্লাস অথবা মন খারাপ নয়, বিসর্জনে দেখা গেল দ্রোহের ছবি। না ছিল আতিশয্য, না শোনা গেল ঢাকের আওয়াজ। পরিবারের সবাই কালো পোশাকে পা মেলালেন মৌনমিছিলে। বাড়ির মেয়েরা তিলোত্তমার নাম লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে সামনে হাঁটলেন। মা দুর্গা রইলেন সবার পিছনে।
ভাসান নাচ নয়, হাঁটতে হাঁটতে স্লোগান দিলেন পরিবারের সদস্যরা। অভয়ার বিচারের দাবিতে গর্জে উঠল গলা। কেউ বা গেয়ে উঠলেন ‘আগুনের পরশমণি’।
বিসর্জন কালে সকলের একটাই প্রার্থনা, ‘অভয়া যেন তাঁর যোগ্য বিচার পান। আর একটি মেয়েকেও যেন অভয়ার মতো অন্ধকার দিন দেখতে না হয়।’ ভক্তদের এই আর্জি শুনতে শুনতেই এ বারের মতো বিদায় নিলেন মা দুর্গা।
এই প্রতিবেদনটি আনন্দ উৎসব ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy