Advertisement

Associate Partner

Style Partner

Associate Partner

Weddings Partner

Food Partner

Fatakesto Kali Puja 2023

ঘোড়ার গাড়িতে করে মণ্ডপে এল ফাটাকেষ্টর ‘কালী’! এ পুজোর সাক্ষী বচ্চন থেকে উত্তমকুমার

তিনি কৃষ্ণচন্দ্র দত্ত। লোকে তাঁকে চেনে ‘ফাটাকেষ্ট’ নামে। কলকাতায় তাঁর পুজো ঘিরে মাতামাতির গল্প শুনলে তাজ্জব হতে হয়। এ বারে পুজোয় এই পুজোয় কী হতে চলেছে, খবর নিল আনন্দবাজার অনলাইন।

আনন্দ উৎসব ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২৩ ১৫:৫০
Share: Save:
০১ ১৮
তিনি কৃষ্ণচন্দ্র দত্ত। কিন্তু এ নাম আওড়ালে ক’জন তাঁকে চিনবেন, ঈশ্বর জানেন!  তিনি ‘ফাটাকেষ্ট’। বললেই লোকজনের মুখে বুলি ফুটবে!

তিনি কৃষ্ণচন্দ্র দত্ত। কিন্তু এ নাম আওড়ালে ক’জন তাঁকে চিনবেন, ঈশ্বর জানেন! তিনি ‘ফাটাকেষ্ট’। বললেই লোকজনের মুখে বুলি ফুটবে!

০২ ১৮
ফাটাকেষ্ট। এক সময়ে কলকাতার দাপুটে নাম। আর কলকাতাবাসীর মনে গেঁথে আছে,  তাঁর কালী পুজো। এমন জাঁকজমকের পুজো পুরনো কলকাতা ক’টা দেখেছে, জানা নেই। যে পুজো এখন বহমান। কিন্তু তিনি আর ইহলোকে নেই!

ফাটাকেষ্ট। এক সময়ে কলকাতার দাপুটে নাম। আর কলকাতাবাসীর মনে গেঁথে আছে, তাঁর কালী পুজো। এমন জাঁকজমকের পুজো পুরনো কলকাতা ক’টা দেখেছে, জানা নেই। যে পুজো এখন বহমান। কিন্তু তিনি আর ইহলোকে নেই!

০৩ ১৮
 নব যুবক সঙ্ঘ। সীতারাম ঘোষ স্ট্রিট। উত্তর কলকাতার এই গলিটির এক দিকে বড় রাস্তা বলতে আমহার্স্ট স্ট্রিট, আর অন্য দিকে একটু এগোলেই কলেজ স্ট্রিটের বই পাড়া। ফাটাকেষ্টর কালীপুজো এই দশ ফুটিয়া গলিতেই দীর্ঘ কাল ধরে হয়ে আসছে।

নব যুবক সঙ্ঘ। সীতারাম ঘোষ স্ট্রিট। উত্তর কলকাতার এই গলিটির এক দিকে বড় রাস্তা বলতে আমহার্স্ট স্ট্রিট, আর অন্য দিকে একটু এগোলেই কলেজ স্ট্রিটের বই পাড়া। ফাটাকেষ্টর কালীপুজো এই দশ ফুটিয়া গলিতেই দীর্ঘ কাল ধরে হয়ে আসছে।

০৪ ১৮
এঁদের পুজো মণ্ডপে প্রতি বছর ভিড় জমান লাখ লাখ মানুষ। এই পুজো ছাড়া কলকাতার কালী পুজো যেন অসম্পূর্ণ। আড়ম্বরে ছটা হার মানায় বড় বড় নেতাদের পুজোকেও।

এঁদের পুজো মণ্ডপে প্রতি বছর ভিড় জমান লাখ লাখ মানুষ। এই পুজো ছাড়া কলকাতার কালী পুজো যেন অসম্পূর্ণ। আড়ম্বরে ছটা হার মানায় বড় বড় নেতাদের পুজোকেও।

০৫ ১৮
এ পুজোর পরিচিতি দিতে লোকে এখনও বলে, ‘ফাটাকেষ্টর পুজো’। তাঁর উত্তরসূরীরা বলেন, ‘‘শুধু আড়ম্বর নয় ভক্তি ভরে মা পূজিত হন এখানে। বারোয়ারি পুজো হলে কী হবে,  নিয়ম নিষ্ঠায় কোনও ফাঁক থাকে না। পুজো শুরু হয় রাত ৮ থেকে সাড়ে ৮টার সময় এবং শেষ হতে হতে পরের দিন সকাল।’’

এ পুজোর পরিচিতি দিতে লোকে এখনও বলে, ‘ফাটাকেষ্টর পুজো’। তাঁর উত্তরসূরীরা বলেন, ‘‘শুধু আড়ম্বর নয় ভক্তি ভরে মা পূজিত হন এখানে। বারোয়ারি পুজো হলে কী হবে, নিয়ম নিষ্ঠায় কোনও ফাঁক থাকে না। পুজো শুরু হয় রাত ৮ থেকে সাড়ে ৮টার সময় এবং শেষ হতে হতে পরের দিন সকাল।’’

০৬ ১৮
এই পুজোয় এসে ঘুরে গিয়েছেন অমিতাভ বচ্চন থেকে উত্তম কুমার। আরডি বর্মন থেকে আশা ভোঁসলে, বিনোদ খন্না সহ আরও অনেকে। এমনই ছিল এই ফাটাকেষ্টর রমরমা। আর তাজ্জবের কথা হল এই যে, কোনও দিন নাকি কোনও তারকা তাঁদের হাজিরার জন্য একটা কানাকড়িও নেননি!

এই পুজোয় এসে ঘুরে গিয়েছেন অমিতাভ বচ্চন থেকে উত্তম কুমার। আরডি বর্মন থেকে আশা ভোঁসলে, বিনোদ খন্না সহ আরও অনেকে। এমনই ছিল এই ফাটাকেষ্টর রমরমা। আর তাজ্জবের কথা হল এই যে, কোনও দিন নাকি কোনও তারকা তাঁদের হাজিরার জন্য একটা কানাকড়িও নেননি!

০৭ ১৮
শোনা গেল, ঘড়ি ধরে পঞ্জিকা মতে সব নিয়ম কানুন পালন করে মায়ের পুজো সম্পন্ন হয় এখানে। এমনকি প্রতিমা নিয়ে আসা বা বিসর্জনেও রয়েছে নানা নিয়ম। এই বছরে এই পুজোর ৬৭ বছর।

শোনা গেল, ঘড়ি ধরে পঞ্জিকা মতে সব নিয়ম কানুন পালন করে মায়ের পুজো সম্পন্ন হয় এখানে। এমনকি প্রতিমা নিয়ে আসা বা বিসর্জনেও রয়েছে নানা নিয়ম। এই বছরে এই পুজোর ৬৭ বছর।

০৮ ১৮
পুজোয় আজ আর নেই ফাটাকেষ্ট। নেই কালীপুজোয় তাঁর সব থেকে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস-নেতা সোমেন মিত্র। যাঁর পুজোও এই আমহার্স্ট স্ট্রিট অঞ্চলেই। কিন্তু তাঁদের পুজো রয়ে গিয়েছে।

পুজোয় আজ আর নেই ফাটাকেষ্ট। নেই কালীপুজোয় তাঁর সব থেকে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস-নেতা সোমেন মিত্র। যাঁর পুজোও এই আমহার্স্ট স্ট্রিট অঞ্চলেই। কিন্তু তাঁদের পুজো রয়ে গিয়েছে।

০৯ ১৮
ফাটাকেষ্টর পুজো শুরু হয়েছিল গুরুপ্রসাদ চৌধুরী লেনে। সাত বন্ধুর হাত ধরে। ফাটাকেষ্টর সময়েই বাড়ে তার বোলবোলা। তার পরে কী যে এ পুজো সীতারাম ঘোষ স্ট্রিটে গেল, সে ইতিহাসে নয় নাই-ই ঢুকলাম। বরং বলি এ পুজো ঘিরে আজও মাতামাতি কী পর্যায়ে, তার কথা।

ফাটাকেষ্টর পুজো শুরু হয়েছিল গুরুপ্রসাদ চৌধুরী লেনে। সাত বন্ধুর হাত ধরে। ফাটাকেষ্টর সময়েই বাড়ে তার বোলবোলা। তার পরে কী যে এ পুজো সীতারাম ঘোষ স্ট্রিটে গেল, সে ইতিহাসে নয় নাই-ই ঢুকলাম। বরং বলি এ পুজো ঘিরে আজও মাতামাতি কী পর্যায়ে, তার কথা।

১০ ১৮
এমনও শোনা যায়, কুমোরটুলি থেকে ফাটাকেষ্টর ঠাকুর না বেরোলে নাকি অন্য কোনও ঠাকুর মণ্ডপে যায় না। সেই মতোই এই বছরে ঠাকুর নিয়ে আসা হয়েছে মণ্ডপে।

এমনও শোনা যায়, কুমোরটুলি থেকে ফাটাকেষ্টর ঠাকুর না বেরোলে নাকি অন্য কোনও ঠাকুর মণ্ডপে যায় না। সেই মতোই এই বছরে ঠাকুর নিয়ে আসা হয়েছে মণ্ডপে।

১১ ১৮
আগের দিন রাতে কুমোরটুলিতেই নিয়ম মেনে অলংকার পরিয়ে, মোমবাতি দিয়ে আরতি করে, হাতে পান দিয়ে আবাহন করা হয় মায়ের।পঞ্জিকা মেনে ২৯ তারিখ রাতে প্রতিমা নিয়ে আসার তোড়জোড় শুরু করা হয়।

আগের দিন রাতে কুমোরটুলিতেই নিয়ম মেনে অলংকার পরিয়ে, মোমবাতি দিয়ে আরতি করে, হাতে পান দিয়ে আবাহন করা হয় মায়ের।পঞ্জিকা মেনে ২৯ তারিখ রাতে প্রতিমা নিয়ে আসার তোড়জোড় শুরু করা হয়।

১২ ১৮
পরের দিন সকালে ঘড়ি ধরে ৭টা ২৬ মিনিটের পরে শুরু হয় প্রতিমা নিয়ে মণ্ডপের দিকে যাত্রা। বিশাল শোভাযাত্রার মাধ্যমে মাতৃমূর্তিকে নিয়ে আসা হয় মণ্ডপে। প্রথা মেনে শোভাযাত্রার সামনে ছিল এক সুসজ্জিত ঘোড়ার গাড়ি। সেখানে ছিল সানাই বাদক।  তার পর ব্যান্ড বাদকের দল।

পরের দিন সকালে ঘড়ি ধরে ৭টা ২৬ মিনিটের পরে শুরু হয় প্রতিমা নিয়ে মণ্ডপের দিকে যাত্রা। বিশাল শোভাযাত্রার মাধ্যমে মাতৃমূর্তিকে নিয়ে আসা হয় মণ্ডপে। প্রথা মেনে শোভাযাত্রার সামনে ছিল এক সুসজ্জিত ঘোড়ার গাড়ি। সেখানে ছিল সানাই বাদক। তার পর ব্যান্ড বাদকের দল।

১৩ ১৮
শাঁখ হাতে প্রতিমার গাড়ির আগে ছিলেন এলাকার মহিলারা। মায়ের গাড়ির সামনে ছিল রাস্তা পরিশুদ্ধ করার ব্যবস্থা। যাত্রা পথে গঙ্গা জল এবং ফুল ছড়িয়ে আনা হয় মাতৃ মূর্তি। এই প্রথার চালু হয় নাকি সেই ফাটাকেষ্টর আমলেই।

শাঁখ হাতে প্রতিমার গাড়ির আগে ছিলেন এলাকার মহিলারা। মায়ের গাড়ির সামনে ছিল রাস্তা পরিশুদ্ধ করার ব্যবস্থা। যাত্রা পথে গঙ্গা জল এবং ফুল ছড়িয়ে আনা হয় মাতৃ মূর্তি। এই প্রথার চালু হয় নাকি সেই ফাটাকেষ্টর আমলেই।

১৪ ১৮
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিমা নিয়ে পৌঁছতে হবে মণ্ডপে। সময় পেরিয়ে গেলে যেখানে মূর্তি রয়েছে, সেখানেই অপেক্ষা করতে হবে পরবর্তী সময়ের জন্য। এখানকার এমনই নিয়ম। তাই ঘড়ি ধরে নির্ধারিত সময়ে মূর্তি নিয়ে আসা হয় মণ্ডপে।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিমা নিয়ে পৌঁছতে হবে মণ্ডপে। সময় পেরিয়ে গেলে যেখানে মূর্তি রয়েছে, সেখানেই অপেক্ষা করতে হবে পরবর্তী সময়ের জন্য। এখানকার এমনই নিয়ম। তাই ঘড়ি ধরে নির্ধারিত সময়ে মূর্তি নিয়ে আসা হয় মণ্ডপে।

১৫ ১৮
বিসর্জনের সময় ফুলের চাদর দিয়ে মুড়ে দেওয়া হয় মায়ের যাত্রা পথ। পুজোর উদ্যোক্তা ফাটাকেষ্টর সহযোদ্ধা প্রবন্ধ রায় ওরফে ফান্টা দা জানালেন, ‘‘মূর্তি যে রাস্তায় নামানো হয়, সেখানে প্রায় ১৫ থেকে ২০ ফুট রাস্তা প্রথমে গঙ্গা জলে ধোওয়া হয়। তার পর ফুল বিছিয়ে দেওয়া হয় সেই রাস্তায়। আপনাদের দেখলে মনে হবে ফুলের কার্পেট।“

বিসর্জনের সময় ফুলের চাদর দিয়ে মুড়ে দেওয়া হয় মায়ের যাত্রা পথ। পুজোর উদ্যোক্তা ফাটাকেষ্টর সহযোদ্ধা প্রবন্ধ রায় ওরফে ফান্টা দা জানালেন, ‘‘মূর্তি যে রাস্তায় নামানো হয়, সেখানে প্রায় ১৫ থেকে ২০ ফুট রাস্তা প্রথমে গঙ্গা জলে ধোওয়া হয়। তার পর ফুল বিছিয়ে দেওয়া হয় সেই রাস্তায়। আপনাদের দেখলে মনে হবে ফুলের কার্পেট।“

১৬ ১৮
সংগঠকদের দাবি, আজও প্রচুর মানুষের আবেগ জড়িয়ে রয়েছে এই পুজোর সঙ্গে। কলকাতার এবং কলকাতার বাইরের বহু মানুষ মানত করেন এই দেবীর কাছে। মনস্কামনা পূরণ হলে দেবীর কাছে ছুটে আসেন তাঁরা। প্রায় ১৫০০হাজার লোক অঞ্জলি দেন এই মন্ডপে। পুজোর শেষে থাকে সবার জন্য ভোগের ব্যবস্থা।

সংগঠকদের দাবি, আজও প্রচুর মানুষের আবেগ জড়িয়ে রয়েছে এই পুজোর সঙ্গে। কলকাতার এবং কলকাতার বাইরের বহু মানুষ মানত করেন এই দেবীর কাছে। মনস্কামনা পূরণ হলে দেবীর কাছে ছুটে আসেন তাঁরা। প্রায় ১৫০০হাজার লোক অঞ্জলি দেন এই মন্ডপে। পুজোর শেষে থাকে সবার জন্য ভোগের ব্যবস্থা।

১৭ ১৮
ভোগ রান্নাতেও আছে বিশেষ নিয়ম। মা’কে নিবেদন করার ভোগ রান্না করেন পুরোহিত নিজেই। বাকি ভোগ যাঁরা রান্না করেন, তাঁরাও স্নান করে শুদ্ধ ধুতি পরে তবেই হাত দিতে পারেন কাজে।

ভোগ রান্নাতেও আছে বিশেষ নিয়ম। মা’কে নিবেদন করার ভোগ রান্না করেন পুরোহিত নিজেই। বাকি ভোগ যাঁরা রান্না করেন, তাঁরাও স্নান করে শুদ্ধ ধুতি পরে তবেই হাত দিতে পারেন কাজে।

১৮ ১৮
সময়ের সঙ্গে আজ হয়তো এই পুজোয় কমেছে তারকাদের আনাগোনা। তবে তার অন্য সব ঔজ্জ্বল্য আজও একই রকম। লক্ষ লক্ষ মানুষ তাই পুজোর দিনে ছুটে আসেন এই মণ্ডপে। এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

সময়ের সঙ্গে আজ হয়তো এই পুজোয় কমেছে তারকাদের আনাগোনা। তবে তার অন্য সব ঔজ্জ্বল্য আজও একই রকম। লক্ষ লক্ষ মানুষ তাই পুজোর দিনে ছুটে আসেন এই মণ্ডপে। এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy