Advertisement

Associate Partner

Style Partner

Associate Partner

Weddings Partner

Food Partner

Kalikapur's Kali Temple

কালিকাপুরের মা অধিষ্ঠিত দুর্গা রূপে, অথচ কালিকাকল্পে

কালিকাপুরের কালীর বিচিত্র এক কাহিনি! তিনিই দুর্গা, তিনি কৌশিকী, তিনি কাত্যায়নী, তিনিই গৌরী, আবার তিনিই চণ্ডিকা। তিনিই কালী এবং তিনিই কালরাত্রি! এ লেখায় তারই বর্ণনা।

তমোঘ্ন নস্কর
শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২৩ ১৭:১৯
Share: Save:
০১ ১৪
মায়ের নির্দেশ পেয়ে বসে রইলেন না ব্রাহ্মণ। অবশ্য মায়ের ডাক এলে কী ভাবে উপেক্ষা করতে পারা যায়! একা একাই এলেন নদীর পাড়ে। ‘জয় মা’ বলে খরস্রোতা তটিনীর জলে ডুবসাঁতার দিয়ে হাতড়ালেন চারিপাশ। সময় বাড়ে, বুকে চাপা কষ্ট উঠে আসে। আর পারছেন না তিনি?  তবে কী তিনি পাবেন না? ঠিক, সেই সময়ই তলদেশে হতে দৃশ্যমান হয় এক অপূর্ব জ্যোতি! ঘন কালো শিলায় খোদিত এক অপরূপা মাতৃ মূর্তি!

মায়ের নির্দেশ পেয়ে বসে রইলেন না ব্রাহ্মণ। অবশ্য মায়ের ডাক এলে কী ভাবে উপেক্ষা করতে পারা যায়! একা একাই এলেন নদীর পাড়ে। ‘জয় মা’ বলে খরস্রোতা তটিনীর জলে ডুবসাঁতার দিয়ে হাতড়ালেন চারিপাশ। সময় বাড়ে, বুকে চাপা কষ্ট উঠে আসে। আর পারছেন না তিনি? তবে কী তিনি পাবেন না? ঠিক, সেই সময়ই তলদেশে হতে দৃশ্যমান হয় এক অপূর্ব জ্যোতি! ঘন কালো শিলায় খোদিত এক অপরূপা মাতৃ মূর্তি!

কুমরি নদী

০২ ১৪
তুলে আনেন সে মূর্তি। কিন্তু স্বপ্নে মা যে তাঁকে বলেছিলেন, তিনি কালী রূপে পূজিত হবেন। কিন্তু এ যে মায়ের অষ্টভুজা মহিষাসুরমর্দিনী মূর্তি! মোষের পৃষ্ঠে উঠে তাঁকে বধ করছেন মাতা দুর্গা। অবশ্য, সেই ভয়াবহ রণপ্রাঙ্গণে মাতা মুহুর্মুহু রূপ বদল করেছিলেন। সেখানেই তিনি মহামায়ার ব্যূহ রচনা করে দেখিয়েছিলেন, তিনিই দুর্গা, তিনি কৌশিকী, তিনি কাত্যায়নী, তিনিই গৌরী, আবার তিনিই চণ্ডিকা। তিনিই কালী এবং তিনিই কালরাত্রি!

তুলে আনেন সে মূর্তি। কিন্তু স্বপ্নে মা যে তাঁকে বলেছিলেন, তিনি কালী রূপে পূজিত হবেন। কিন্তু এ যে মায়ের অষ্টভুজা মহিষাসুরমর্দিনী মূর্তি! মোষের পৃষ্ঠে উঠে তাঁকে বধ করছেন মাতা দুর্গা। অবশ্য, সেই ভয়াবহ রণপ্রাঙ্গণে মাতা মুহুর্মুহু রূপ বদল করেছিলেন। সেখানেই তিনি মহামায়ার ব্যূহ রচনা করে দেখিয়েছিলেন, তিনিই দুর্গা, তিনি কৌশিকী, তিনি কাত্যায়নী, তিনিই গৌরী, আবার তিনিই চণ্ডিকা। তিনিই কালী এবং তিনিই কালরাত্রি!

মা কালিকা

০৩ ১৪
সেই দিন থেকে কুমরি নদীর তীরে সেই গ্রামে ‘মা’ অধিষ্ঠিত হলেন দুর্গা রূপে অথচ কালিকাকল্পে। মায়ের পূজা কালী ধ্যান ও পূজা মন্ত্রেই সাধিত হয়। দীপান্বিতা অমাবস্যা রাতেই মায়ের মহাপুজো হয়ে আসছে শতাধিক বৎসর ধরে। সেই ছোট্ট অজানা গ্রাম মায়ের পাদস্পর্শে খ্যাত হল,  কালিকাপুর জনপদ নামে। মহিষাসুরমর্দিনী মায়ের কালী হয়ে ওঠা সচরাচর দেখা যায় না। কিন্তু কাটোয়ার কালিকাপুরে অধিষ্ঠাত্রী মা কালী, অষ্টভুজা মহিষাসুরমর্দিনী কালী!

সেই দিন থেকে কুমরি নদীর তীরে সেই গ্রামে ‘মা’ অধিষ্ঠিত হলেন দুর্গা রূপে অথচ কালিকাকল্পে। মায়ের পূজা কালী ধ্যান ও পূজা মন্ত্রেই সাধিত হয়। দীপান্বিতা অমাবস্যা রাতেই মায়ের মহাপুজো হয়ে আসছে শতাধিক বৎসর ধরে। সেই ছোট্ট অজানা গ্রাম মায়ের পাদস্পর্শে খ্যাত হল, কালিকাপুর জনপদ নামে। মহিষাসুরমর্দিনী মায়ের কালী হয়ে ওঠা সচরাচর দেখা যায় না। কিন্তু কাটোয়ার কালিকাপুরে অধিষ্ঠাত্রী মা কালী, অষ্টভুজা মহিষাসুরমর্দিনী কালী!

কুমরি গ্রাম

০৪ ১৪
মায়ের প্রতিষ্ঠা নিয়ে একটি শতাধিক বৎসরের পুরাতন ভাষ্য পাওয়া যায়।  কালিকাপুরের অদূরে কুমরি নদী (অধুনা শীর্ণ কুমরির বিল) তীরে কুমরি গ্রাম। এই গ্রামেরই এক ব্রাহ্মণ স্বপ্নাদেশ পান কুমরি নদী থেকে মূর্তি তুলে এনে প্রতিষ্ঠা করার জন্য। কিন্তু তিনি বিষয়টি গোপন রাখেন। তাই অবিশ্বাসীকে মা ধরাও দেননি।

মায়ের প্রতিষ্ঠা নিয়ে একটি শতাধিক বৎসরের পুরাতন ভাষ্য পাওয়া যায়। কালিকাপুরের অদূরে কুমরি নদী (অধুনা শীর্ণ কুমরির বিল) তীরে কুমরি গ্রাম। এই গ্রামেরই এক ব্রাহ্মণ স্বপ্নাদেশ পান কুমরি নদী থেকে মূর্তি তুলে এনে প্রতিষ্ঠা করার জন্য। কিন্তু তিনি বিষয়টি গোপন রাখেন। তাই অবিশ্বাসীকে মা ধরাও দেননি।

০৫ ১৪
কালিকাপুরে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ এবার একই স্বপ্নাদিষ্ট হন। তিনি দ্বিধা করেননি। নদীতে নামেন এবং ওই অপরূপা মূর্তি পান। মা’কে নিজ গ্রামে প্রতিষ্ঠা করেন। সেই কাল হতেই ওই মূর্তি পুজো চলে আসছে।

কালিকাপুরে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ এবার একই স্বপ্নাদিষ্ট হন। তিনি দ্বিধা করেননি। নদীতে নামেন এবং ওই অপরূপা মূর্তি পান। মা’কে নিজ গ্রামে প্রতিষ্ঠা করেন। সেই কাল হতেই ওই মূর্তি পুজো চলে আসছে।

বৃক্ষপূজা

০৬ ১৪
একবার খরার সময় গ্রাম তখন শুষ্ক। তখন কোনওভাবে গ্রামে আগুন লেগে যায়। এবং শুকনো ঘাসের সে আগুন ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের রূপ নেয়। পুকুর, বিল সব শুষ্ক, জলহীন। কিছুতেই আগুন নেভানো যায় না। শুকনো খটখটে ঘর, বাড়ি, গাছপালা শুধু জ্বলতে থাকে।

একবার খরার সময় গ্রাম তখন শুষ্ক। তখন কোনওভাবে গ্রামে আগুন লেগে যায়। এবং শুকনো ঘাসের সে আগুন ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের রূপ নেয়। পুকুর, বিল সব শুষ্ক, জলহীন। কিছুতেই আগুন নেভানো যায় না। শুকনো খটখটে ঘর, বাড়ি, গাছপালা শুধু জ্বলতে থাকে।

০৭ ১৪
এমন সময় গ্রামের বাইরের ধানের জমির আল ধরে এক বাচ্চা মেয়েকে হেঁটে আসতে দেখা যায়। এক বুড়ো তাকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘কোথায় যাচ্ছো মা?  ওই গ্রামে আগুন লেগেছে, যেয়ো না। বিপদ হবে।“ বাচ্চা মেয়েটি উত্তর দেয়, ‘‘আমার কালিকাপুর পুড়ে যাচ্ছে, আর আমি যাব না?’’ মুহূর্তেই বজ্রগর্ভ মেঘের সঞ্চার হয় এবং ভীষণ বৃষ্টি নামে। সেই জলেই আগুন নেভে। শুষ্ক গ্রাম সজল হয়ে ওঠে। পুকুর জলে ভরে। চাষ শুরু হয়। অভুক্ত চাষীদের পেটের আগুনও নেভে তাতে।

এমন সময় গ্রামের বাইরের ধানের জমির আল ধরে এক বাচ্চা মেয়েকে হেঁটে আসতে দেখা যায়। এক বুড়ো তাকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘কোথায় যাচ্ছো মা? ওই গ্রামে আগুন লেগেছে, যেয়ো না। বিপদ হবে।“ বাচ্চা মেয়েটি উত্তর দেয়, ‘‘আমার কালিকাপুর পুড়ে যাচ্ছে, আর আমি যাব না?’’ মুহূর্তেই বজ্রগর্ভ মেঘের সঞ্চার হয় এবং ভীষণ বৃষ্টি নামে। সেই জলেই আগুন নেভে। শুষ্ক গ্রাম সজল হয়ে ওঠে। পুকুর জলে ভরে। চাষ শুরু হয়। অভুক্ত চাষীদের পেটের আগুনও নেভে তাতে।

০৮ ১৪
মূর্তিটি যে কত প্রাচীন,  তার কোনও লিখিত তথ্য পাওয়া যায় না! মূর্তির গঠনশৈলী, বিন্যাস, আভরণ দেবতাগণের উপস্থিতি দেখে অনুমান করা হয় মূর্তিটি পাল-সেন যুগের সমসাময়িক। পাল যুগের পাথরের তৈরি মূর্তিগুলির সঙ্গে এর গঠনগত সাদৃশ্য আছে! সেই হিসাবে অন্তত সহস্র বছরের প্রাচীন এই মূর্তি।

মূর্তিটি যে কত প্রাচীন, তার কোনও লিখিত তথ্য পাওয়া যায় না! মূর্তির গঠনশৈলী, বিন্যাস, আভরণ দেবতাগণের উপস্থিতি দেখে অনুমান করা হয় মূর্তিটি পাল-সেন যুগের সমসাময়িক। পাল যুগের পাথরের তৈরি মূর্তিগুলির সঙ্গে এর গঠনগত সাদৃশ্য আছে! সেই হিসাবে অন্তত সহস্র বছরের প্রাচীন এই মূর্তি।

পাল যুগের দুর্গামূর্তি

০৯ ১৪
গবেষকদের মতে, বর্তমানে যা কুমরি নদী আদতে সেটাই সপ্ত মাতৃকার এক মাতৃকা কৌমারী নদী। কৌমারী নদীর তীরে এক সময় ওই মূর্তি পূজিত হত বা এমনও হতে পারে এই মূর্তি কৌমারী হিসাবেই পূজিত হতেন।

গবেষকদের মতে, বর্তমানে যা কুমরি নদী আদতে সেটাই সপ্ত মাতৃকার এক মাতৃকা কৌমারী নদী। কৌমারী নদীর তীরে এক সময় ওই মূর্তি পূজিত হত বা এমনও হতে পারে এই মূর্তি কৌমারী হিসাবেই পূজিত হতেন।

১০ ১৪
কালের নিয়মে মন্দির এক সময় ধ্বংস হয়ে যায় এবং নদীর মধ্যে অবহেলায় পড়ে থাকে মূর্তিটি। পরে অষ্টাদশ শতকের গোড়ার দিকে কালিকাপুরের মানুষ মূর্তিটি উদ্ধার করে এনে কালিকাপুরে প্রতিষ্ঠা করেন এবং দেবীর নামে গ্রামের নাম হয় কালিকাপুর। বর্তমানে যে জায়গায় মন্দিরটি রয়েছে সেই জায়গাটি দান করেছিলেন যোগেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। কালিকাপুরের বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার এখনও নানা ভাবে মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণের সঙ্গে যুক্ত।

কালের নিয়মে মন্দির এক সময় ধ্বংস হয়ে যায় এবং নদীর মধ্যে অবহেলায় পড়ে থাকে মূর্তিটি। পরে অষ্টাদশ শতকের গোড়ার দিকে কালিকাপুরের মানুষ মূর্তিটি উদ্ধার করে এনে কালিকাপুরে প্রতিষ্ঠা করেন এবং দেবীর নামে গ্রামের নাম হয় কালিকাপুর। বর্তমানে যে জায়গায় মন্দিরটি রয়েছে সেই জায়গাটি দান করেছিলেন যোগেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। কালিকাপুরের বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার এখনও নানা ভাবে মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণের সঙ্গে যুক্ত।

প্রতিষ্ঠাতা জমিদার কুলের আদিবাস

১১ ১৪
বর্তমানে কালিকাপুরের কালীমন্দিরের সেবাইত রতন মুখোপাধ্যায়। তিনি জানান, তাঁর  প্রদাদা অর্থাৎ দাদামহাশয়ের পিতার সময় থেকে তাঁরা এই দেবীর বংশানুক্রমিক সেবাইত ও পূজারি। তার আগে বহু সন্ন্যাসী ও গৃহী এই মন্দিরের সেবার দায়িত্ব সামলেছেন।

বর্তমানে কালিকাপুরের কালীমন্দিরের সেবাইত রতন মুখোপাধ্যায়। তিনি জানান, তাঁর প্রদাদা অর্থাৎ দাদামহাশয়ের পিতার সময় থেকে তাঁরা এই দেবীর বংশানুক্রমিক সেবাইত ও পূজারি। তার আগে বহু সন্ন্যাসী ও গৃহী এই মন্দিরের সেবার দায়িত্ব সামলেছেন।

১২ ১৪
মায়ের প্রতি অগাধ বিশ্বাস এলাকার বাসিন্দাদের। কালিকাপুরে এই কালী মা ছাড়া অন্য কোনও কালীপুজো হয় না। এমনকি পাশের গ্রাম থেকে কোনও কালীর বিসর্জন শোভাযাত্রাও ঢোকে না কালিকাপুরে। কুমরি গ্রামের বাসিন্দারাও এই দেবী ছাড়া অন্য কালীর আরাধনা করেন না।

মায়ের প্রতি অগাধ বিশ্বাস এলাকার বাসিন্দাদের। কালিকাপুরে এই কালী মা ছাড়া অন্য কোনও কালীপুজো হয় না। এমনকি পাশের গ্রাম থেকে কোনও কালীর বিসর্জন শোভাযাত্রাও ঢোকে না কালিকাপুরে। কুমরি গ্রামের বাসিন্দারাও এই দেবী ছাড়া অন্য কালীর আরাধনা করেন না।

মায়ের পাশে বিশ্বেশ্বর

১৩ ১৪
কালিকাপুরে দীপান্বিতা অমাবস্যায় এবং মাঘ মাসে কুমরি গ্রামে দেবীর বিশেষ পুজোপাঠ হয়। কালীপুজো ছাড়াও সব পুজোতেই বিশেষ পুজো পাঠ হয় কালিকাপুরের কালী মন্দিরে। তবে, দীপান্বিতা অমাবস্যা বাৎসরিক পূজা হলেও বলি হয় না। মানসিক বলি হয়, অন্যান্য তিথিতে।

কালিকাপুরে দীপান্বিতা অমাবস্যায় এবং মাঘ মাসে কুমরি গ্রামে দেবীর বিশেষ পুজোপাঠ হয়। কালীপুজো ছাড়াও সব পুজোতেই বিশেষ পুজো পাঠ হয় কালিকাপুরের কালী মন্দিরে। তবে, দীপান্বিতা অমাবস্যা বাৎসরিক পূজা হলেও বলি হয় না। মানসিক বলি হয়, অন্যান্য তিথিতে।

মহিষমর্দিনী

১৪ ১৪
পথ নির্দেশ:  হাওড়া কাটোয়া ট্রেন রুটে অগ্রদ্বীপ স্টেশন থেকে পনেরো মিনিটের অটোপথ। ঋণ: সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য।  এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

পথ নির্দেশ: হাওড়া কাটোয়া ট্রেন রুটে অগ্রদ্বীপ স্টেশন থেকে পনেরো মিনিটের অটোপথ। ঋণ: সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য। এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

মন্দির

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy