পাহাড়েশ্বরের শ্মশানকালী পুজোর অবাক করা নিয়ম রীতি তাক লাগিয়ে দিতে পারে অনেক তাবড় গল্প বলিয়েকেও! কালীপুজোর নানা রূপে ও নিয়মে পুজো হওয়া নতুন কিছুই নয়, তবে তাঁর মধ্যেও এই পুজো যেন নজর কাড়ে অন্য ভাবে! যদিও এই দেবী বৈষ্ণব, তাও তিনি পূজিতা হন শাক্তমতেই। পুজোর নিয়মও অবাক করা, অন্ধকার ঘরে কাঁটার আসনে উলঙ্গ হয়ে পুজো দিতে হয় পুরোহিতকে।অমাবস্যা তিথিতে পুজো হয় এই দেবীর, আর প্রতিমা থাকে মন্দিরেই সারা বছর। তাঁর নিরঞ্জন হয় দূর্গাপুজোর পরের একাদশীতে। অঞ্চলে শ্মশান থাকার দরুন দেবীর রূপ এখানে শ্মশানকালীর। কথিত যে প্রায় তিনশো বছর ধরে এই দেবীর পুজো হয়ে আসছে, আর প্রাচীন সময় এই পুজো প্রাঙ্গন ছিল ঘন জঙ্গল ও শ্মশানে ঘেরা। প্রায় ৪০০ বছর আগে হারাধন চক্রবর্তী নামে এক ব্যক্তি এই কালীমূর্তি নিয়ে এসেছিলেন কামাখ্যা থেকে, আর সেই পুজোই বংশপরম্পরায় করে আসছেন চক্রবর্তী পরিবার। যদিও চক্রবর্তী পরিবার পরে বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষা নেন, তবে দেবীর এই আরাধনা এখনও নিষ্ঠাভরে শাক্তমতেই হয়ে থাকে। তারাই তৈরি করেন দেবীর এই মূর্তি যা শ্মশান থেকে আনা কাঠ, অঙ্গার, হাড় সহ নানা জিনিস দিয়ে তৈরি করতে হয়। ঠাকুরের মুর্তি শুকোনোর কাজে ব্যবহার করতে হয় শ্মশানে আধপোড়া কাঠের অংশ, দেবীর সাজসজ্জা ও পুজোর জোগাড়ের সব সামগ্রী শ্মশানের নানা জিনিস দিয়েই করতে হয়। প্রতিমার অষ্ট অঙ্গে থাকে শ্মশানের হাড়, আর দুই পাশে থাকেন ডাকিনী ও যোগিনী। পুজোর সময় ব্যবহার করতে হয় কাঁটার আসন, আর অন্ধকার করা ঘরে হোমযজ্ঞ দেখতে পাওয়া গেলেও পুজো দেখার অনুমতি আজও কারও নেই।পুজো হয় সম্পূর্ণ তন্ত্রমতে, উপাচারও হয় তেমনই। দেবীর ভোগে নিবেদন করা হয় কারণবারি ও চ্যাং মাছ পোড়া! মন্দিরের পাশের একটি জল্কুন্ডকে ঘিরেও নানা গল্প আছে, সেই কুন্ডের কাছে অল্প খুড়লেই জলের দেখা মেলে, আবার দেবই মুর্তি তৈরি শেষ হয়ে গেলে নিজে থেকেই নাকি শুকিয়ে যায় সেই কুন্ডের জল! প্রতিমা নিরঞ্জনের দায়িত্বে আবার থাকেন স্থানীয় দাস পরিবারেরা! একাদশীর দিন ভাসান হয় এই ঠাকুরের, আর জমায়েত করে ধুমধামের সঙ্গে আজও বিসর্জন হয় এই প্রতিমার।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy