ভাটুপাড়া সর্বজনীন
ঢাকের বাদ্যি বাজছে কানে, দেবীর আগমনে...
প্রতি বছর শরৎ কালে বাঙালি মেতে ওঠে দুর্গাপুজোয়। যে উৎসবে মিলে-মিশে যায় নানান সম্প্রদায়ের মানুষ। নিয়ম করে শারদপ্রাতে তেমনই সম্প্রীতির নজির দেখা যায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে। কাঁটাতারের বেড়া থেকে মাত্র ১৫ ফুট দূরে, মাতৃ আরাধনায় মেতে ওঠেন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ।কী ভাবে শুরু হয়েছে এই পুজোর?
শোনা যায়, দেশভাগের আগে তৎকালীন মেহেরপুরে জমিদার ছিলেন সুভাষ বোস। নদিয়ার তেহট্টের ভাটুপাড়া গ্রামে প্রথম দুর্গাপুজো শুরু করেন তিনি।
দেশভাগের সময় অর্থের অভাবে পুজো যখন বন্ধের মুখে, তখন স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের কিছু মানুষ চাঁদা তুলে পুজোর আয়োজনে এগিয়ে এসেছিলেন। পাশ্ববর্তী এলাকা যেমন, লালবাজার, ইলসামারি, মোবারকপুর গ্রামের মুসলিম সম্প্রদায়ের বহু মানুষ চাঁদা দিয়ে এই পুজো বন্ধ হতে দেননি। এর পরে পেরিয়ে গিয়েছে বহু সময়। এখনও এই এলাকাতে পুজো হয়। তবে সেই পুজো প্রাণভরে উদযাপন করেন স্থানীয়রা।
দেশের নিরাপত্তায় কাঁটাতারের বেড়া হলেও পুজো বন্ধ হয়নি কখনও। এবং এখন সেই পুজোই ভাটুপাড়া আদি বারোয়ারি নামে পরিচিত। অবিভক্ত ভারতে ১৮৬৭-তে দুর্গাপুজো শুরু হয় ভাটুপাড়ায়। নদিয়ার তেহট্ট থানার বেতাই ভাটুপাড়া গ্রাম। ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের ১২৫ ও ১২৬ নম্বর পিলারের মাঝ বরাবর কাঁটাতারের বেড়া ঘেঁষে এই পুজো হয়।
প্রতি বছর নিয়ম করে, সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জওয়ানরা অঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণে অংশ নেন এবং মেতে ওঠেন পুজোর আনন্দে। এই বছরেও সেই উচ্ছ্বাস চোখে পড়ার মতো। আর ক’দিন পরেই পুজো। সীমান্তে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। শোনা যায়, গ্রামবাসীরা ভাটুপাড়া গ্রাম থেকে বেশ কয়েক মাইল পথ হেঁটে বন জঙ্গল পেরিয়ে জমিদার বাড়ির পুজো দেখতে যেত। সঙ্গে বন্য পশুর আতঙ্কও কম ছিল না। তবে, সূর্য ডোবার আগে গ্রামে ফিরে যেত গ্রামবাসীরা। যদিও পরবর্তীকালে প্রজাদের কষ্ট অনুভব করে ভাটুপাড়া গ্রামে আলাদা পুজো শুরু করেন সেখানকার জমিদার।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy