শারদীয়া আগমনীর সুর, বাতাসে শরতের আমেজ এবং নতুন পুজাবার্ষিকীর গন্ধ কোথায় যেন মিলে মিশে একাকার হয়ে যায়। তবে এখন আশ্বিন আসার অনেক আগেই পাঠকের হাতে চলে আসে রকমারি পুজাবার্ষিকী সংখ্যা। বিগত কয়েক বছরে শারদ সাহিত্য ধাঁচের লেখার পাঠক বেড়েছে অনেক, তারই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে লেখার চাহিদা, ছোট বড় নানা রকম পুজাসংখ্যার আনাগোনা।
২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ 'দি কনক্লেভ' এ অনুষ্ঠিত হল প্রভা খৈতান ফাউন্ডেশন ও পুর্ব পশ্চিম নাট্য দলের যৌথ উদ্যোগে 'আখর', যেখানে বক্তা হিসেবে আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন লেখিকা তিলোত্তমা মজুমদার ও কবি তন্ময় চক্রবর্তী। তাঁদের বক্তব্যে প্রকাশ পেয়েছে শারদ সাহিত্যের একাল-সেকাল। আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন আরও অনেক বিশিষ্ট অতিথিরা।
অনুষ্ঠানটির সুচনা করেছিলেন নাট্যব্যক্তিত্ব সৌমিত্র মিত্র। তাঁর ভাবনায় উঠে এসেছিল কী ভাবে শারদ সাহিত্য নিজের প্রভাব বিস্তার করেছে বাঙালি পাঠকবর্গের মননে। তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দ্বারা এই অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য তুলে ধরেছিলেন দর্শকমন্ডলীর কাছে। আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইনের কাছে তিনি জানান যে ২০২০-এর অতিমারির সময় থেকেই বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রচার ও প্রসারের জন্য প্রভা খৈতান ফাউন্ডেশন ও পুর্ব পশ্চিম নাট্যদল এগিয়ে এসেছে। তাঁদের এই প্রচেষ্টায় অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন প্রখ্যাত সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়।
সাহিত্যিক তিলোত্তমা মজুমদার ও কবি তন্ময় চক্রবর্তীর প্রাণোচ্ছ্বল আলোচনায় সভা সুন্দর ও প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছিল। বিভিন্ন আলোচনা, গল্প ও স্মৃতির মাধ্যমে শারদ সাহিত্যের উৎপত্তি এবং তার জনপ্রিয়তার শিখর ছোঁয়ার যাত্রা ফুটিয়ে তোলেন দু’জনেই। তিলোত্তমা আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইনের কাছে অকপটেই স্বীকার করলেন যে বর্তমান দৃশ্যপটে শারদ সাহিত্যের মান আগের তুলনায় যথেষ্ট কমে গিয়েছে। আগের মতো অতুলনীয় সাহিত্য সৃষ্টি খুব কম চোখে পড়ে তাঁর। এবং এই অধঃপতন তাঁর কাছে খুবই আক্ষেপের। তবে তিনি আরও বললেন যে শারদ সাহিত্যের বিনোদনমুলক গুনাগুণকে কখনই অস্বীকার করা যায় না।
কবি তন্ময় চক্রবর্তীর আবার তাঁর বক্তব্যে তুলে ধরলেন বাংলা সাহিত্যে কীভাবে পূজাবার্ষিকীর সংখ্যা পাল্লা দিয়ে বেড়েই চলেছে প্রতি বছর। অথচ সেই অনুযায়ী পাঠক বাড়ছে কিনা তা নিয়ে তিনি দ্বন্দে আছেন। এই বছরের আনন্দমেলায় প্রকাশিত শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের লেখাটি তাঁর সবচেয়ে পছন্দ হয়েছে এবং তাঁর বিশ্বাস শারদ সাহিত্যের হাত ধরে নতুন লেখক লেখিকার প্রজন্ম উঠে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
দর্শকদের মধ্যেও বিষয়টিকে ঘিরে যথেষ্ট আগ্রহের সঞ্চার হতে দেখা গিয়েছিল। তাঁদের প্রশ্নে ও আলোচনার মাধ্যমে শারদ সাহিত্যের বিনোদনের দিকগুলি উঠে এসেছে। এমনই একজন পুর্ব-পশ্চিম থিয়েটার দলের সঙ্গে যুক্ত দর্শক আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইনকে জানালেন, পাঠক হিসেবে লেখক-লেখিকাদের অকপট স্বীকারোক্তি, “অমনোনীত” লেখার দুঃখ সব কিছুর থেকেই তিনি উপলব্ধি করলেন, যে অনেক সময়ই বাড়তি শারদ সাহিত্যের চাপ তাঁদের কিছু মাঝারি বা নিম্ন মানের লেখা লিখতে বাধ্য করছে। যার কারণে আরও মান পড়ে যাচ্ছে শারদ সাহিত্যের।
অনুষ্ঠানের শেষে এই ভাবে শহরের নানা সাহিত্যমনস্কদের আলোচনায় উঠে এলো শারদ সাহিত্যের সুর।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy