থিমের পুজো। একে অপরকে টেক্কা। বিশাল বাজেটের পাহাড়ের নীচে চাপা পড়ে গিয়েছে কলকাতার পুরনো পুজো। এই রকমই মনে করেন বয়স্করা। একে অপরকে টপকে যাওয়ার প্রতিযোগিতায় হারিয়ে যাচ্ছে সাবেকিয়ানা। প্রতিমা সহ পুজোর রীতিতেও অনেক পরিবর্তন আনা হচ্ছে। তবে সব ক্ষেত্রেই যে এই পরিবর্তন হয়েছে, তা নয়। আজ এমনই এক পুজোর সন্ধান নিয়েছে আনন্দবাজার অনলাইন।
শাস্ত্রীয় মত মেনে পুজো অনেক বনেদি বাড়িতেই হয়। তবে আলিপুরে নিজের বাড়িতে হ্যালি গোস্বামীর পুজো সম্পূর্ণ আলাদা। নিজে মূর্তি তৈরি করেন হ্যালি। পুজোও করেন নিজেই।
রামকৃষ্ণ মঠ মিশনের ভাবাদর্শে পুজো হয় এই বাড়িতে। হ্যালি একজন আইনজীবী। তবে স্বেচ্ছায় বেছে নিয়েছেন শিল্পীর জীবন। ভারতের লুপ্ত শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করা এবং বাংলার সংস্কৃতি ও ইতিহাস অনুসন্ধানই তাঁর নেশা। এই নেশাই ভর করে স্কুল জীবনে মনের খেয়ালেই তৈরি করে ফেলেন দুর্গা প্রতিমা। সেই থেকে পুজো শুরু হয় হ্যালির বাড়িতে।
রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দ ভাবাদর্শের সংস্পর্শে এসে আরও সমৃদ্ধ হয় এই পুজো। সম্পূর্ণ শাস্ত্র বিধি মেনে এই পুজো হয়। বেদ বিদ্যালয়ের বেদ পাঠ করতে ব্রাহ্মণ আসেন চণ্ডীপাঠের জন্য। বদ্রীনাথের সরস্বতী নদীর জল, ব্রহ্মপুত্র নদের জল, শিশিরের জল থেকে শুরু করে ভারতের সব তীর্থের জলে পুজোয় মায়ের মহাস্নানের জন্য নিয়ে আসা হয়। এ ছাড়াও হাতির দাঁতের মাটি ও রাজার বাড়ির দরজার মাটি সংগ্রহ করা হয়। অষ্টমীর দিন কুমারী পুজো হয়। দশমীর দিন পান্তা ভাত, কচুর শাক, চালতার টক, বড়ি দিয়ে ভোগ দিয়ে মাকে বিদায় জানানো হয়।
এই বছর ভারতে ব্রিটিশ আসার আগে বাংলায় যে ধরনের প্রতিমা হত, সেই প্রায় বিলুপ্ত শৈলীতে নির্মিত হচ্ছে মাতৃপ্রতিমা। এই পুজো দেখার জন্য শুধু দেশের লোকই নয়, আমেরিকা, রাশিয়া থেকেও পর্যটকরা আসেন। ক্ষুদ্র পরিসরে বিলাসবহুল আড়ম্বর ছাড়াও অত্যন্ত নিষ্ঠা ভরে ২২ বছর ধরে চলে আসছে হ্যালির দুর্গাপুজো।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy