—প্রতীকী চিত্র।
পিতৃপক্ষের অবসান। দেবীপক্ষের শুরু। মহালয়া মানেই তাই পুজো এসে গেল! এই দিনটায় একটু বিশেষ উদ্যাপন না হলে চলে? আর কে না জানে, বাঙালির যে কোনও উদ্যাপন মানেই কব্জি ডুবিয়ে খাওয়া!
রেস্তরাঁর ভিড় এড়াতে বাড়িতেই বানিয়ে নেওয়া যায় ভালমন্দ কিছু পদ। সপরিবারে যদি মেতে ওঠা যায় মা দুর্গার আবাহনে, তা হলেই বাঙালির ষোলো কলা পূর্ণ! এই আনন্দে বাড়িতেই বানিয়ে নিন রেস্তরাঁর মেনু। রইল রেসিপি।
চিতল মাছের মুইঠা:
কথায় বলে মাছে-ভাতে বাঙালি। মাছ ছাড়া বাঙালির কোনও পার্বণই সম্পন্ন হয় না। পেটপুজো তো নয়ই। মহালয়ার পাতে থাক চিতল মাছের এই বিশেষ পদ। একটি পাত্রে চিতল মাছ নিয়ে পেঁয়াজ বাটা, আদা বাটা, রসুন বাটা, জিরে গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো, শুকনো লঙ্কা, নুন, চিনি, সেদ্ধ আলু ভাল করে তাতে মেখে নিতে হবে। হাতে সরdষের তেল মেখে এ বার তা থেকে গোল গোল লেচি বানিয়ে নিন। কড়াইতে জল গরম করে তার মধ্যে মাছের লেচিগুলোকে সেদ্ধ করে নিতে হবে। এর পর হালকা ভেজে তুলে রাখতে হবে তাদের। এগুলোই মুইঠ্যা। এ বার ননস্টিক প্যানে তেল গরম করে তার মধ্যে তেজপাতা, গোটা গরমমশলা ফোড়ন। পেঁয়াজ ভেজে তার মধ্যে নুন, হলুদ, ধনে গুঁড়ো, জিরে গুঁড়ো, চিনি, পেঁয়াজ বাটা দিয়ে ভাল ভাবে ভেজে নিন। এর পরে অল্প জল দিয়ে ভেজে রাখা চিতল মুইঠ্যা টুকরো দিয়ে দিতে হবে। খানিক ক্ষণ ফুটে গেলে নামানোর আগে ঘি, গরমমশলা গুঁড়ো ছড়িয়ে দিলেই তৈরি!
পেঁপে মৌরলা শুক্তো:
পেঁপে-সহ সব সব্জি ছোট টুকরো করে কেটে নিন। এর পরে বড়ি ভেজে তুলে নিতে হবে।
সেই তেলেই রাঁধুনি, সর্ষে, মেথি ফোড়ন দিতে হবে। এ বার তাতে সব সব্জি ঢেলে,পরিমাণ মতো নুন আর হলুদ দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। সব্জি মজে গেলে আদা বাটা দিয়ে একটু নেড়ে জল দিয়ে ঢেকে দিন। জলটা একটু বেশি দিতে হবে, কারণ এই রান্নায় একটু ঝোল বেশি রাখতে হয় ।
ঝোল ফুটলে বড়ি আর কাঁচা মৌরলা মাছ দিয়ে আবার ফুটতে দিন। সবজি, মাছ সব সেদ্ধ হলে একটু নুন, মিষ্টি ঠিকঠাক আছে কি না দেখে নামিয়ে নিলেই হল। এ বার একটা বাটিতে ঢেলে পরিবেশন করতে হবে পেঁপে মৌরলা শুক্তো। ভাতের প্রথম পাতে যা খুবই সুস্বাদু।
খাসির মাংসের কষা:
প্রথমে খাসির মাংসটা ধুয়ে নিন। এ বার কড়াইতে সর্ষের তেল এবং ঘি গরম করুন। এতে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভাল করে ভেজে নিতে হবে। পেঁয়াজের হালকা সোনালি রং ধরলে রসুন বাটা ও আদা বাটা দিয়ে দিন। আদা, রসুন, পেঁয়াজের কাঁচা গন্ধ কেটে গেলে এতে ১ কাপ জলে ধনে গুঁড়ো, জিরে গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো ও হলুদ গুঁড়ো গুলে কড়াইতে দিয়ে দিন। এর পরে এই মিশ্রণে মাংস দিয়ে দিন। ভাল করে কষতে থাকুন।
মাংস থেকে সুগন্ধ বেরোতে শুরু করলে এতে গোটা গরম মশলা দিয়ে নাড়াচাড়া করুন। এর পরে কম আঁচে রেখে ঢাকা দিয়ে দিন। এ ভাবে ১০ মিনিট রাখতে হবে। মাঝেমাঝে ঢাকনা সরিয়ে নাড়াচাড়া করতে থাকুন। এর পরে গোটা রসুনের কোয়াগুলো দিয়ে দিন। এ বার কিন্তু মাংসটা ভাল করে নাড়তে হবে, যাতে রসুনগুলো মশলার সঙ্গে মেখে যায়। এর পরে এই মিশ্রণে ৪ কাপ গরম জল দিয়ে ঢাকা দিয়ে রাখুন। মাংস কম আঁচে রাখবেন। ফুটতে শুরু করলে স্বাদমতো নুন দিয়ে নেড়ে দিন। এর পরে আঁচে রেখে মাংস সেদ্ধ হতে দিন। সেদ্ধ হয়ে গেলে তৈরি আপনার রসুন দিয়ে খাসির মাংসের কষা। গরম ভাত বা লুচির সঙ্গে জমিয়ে পরিবেশন করতে পারেন।
ফুলকপির রোস্ট:
ফুলকপিটি একাধিক বার ধুয়ে ফেলুন। টুকরো করে তাতে নুন ও হলুদ গুঁড়ো ছিটিয়ে আলতো করে মাখিয়ে নিন। এ বার দশটি কাজুবাদাম, পোস্ত বীজ, তরমুজের বীজ এবং কাঁচা লঙ্কা-সহ দশ মিনিট গরম জলে ভিজিয়ে রাখুন। জল ছেঁকে বাকি উপাদানগুলি দিয়ে একটি মসৃণ পেস্ট তৈরি করুন। এর পরে একটি সমতল ননস্টিক প্যানে তেল গরম করুন।
ফুলকপি হালকা বাদামি না হওয়া পর্যন্ত ভাজতে থাকুন। তার পরে তেল থেকে ফুলকপির টুকরোগুলো তুলে ফেলুন। এ বার তেজপাতা, শুকনো লাল লঙ্কা, দারচিনি, কালো এলাচ এবং সবুজ এলাচ দিয়ে বাকি তেল সিজ়ন করুন। আঁচ কমিয়ে প্রথমে আদা বাটা, তার পরে টোম্যাটো পেস্ট দিন। যত ক্ষণ না তেল পাশ থেকে আলাদা হয় তত ক্ষণ নাড়তে থাকুন। দই ফেটিয়ে এ বার বাদাম এবং বীজের পেস্ট-সহ প্যানে দিন এবং মেশান। অল্প পরিমাণে জল দিয়ে যত ক্ষণ না আর্দ্রতা কমে যায় এবং কাঁচা গন্ধ চলে যায়, তত ক্ষণ রান্না করুন। এ বার জিরে গুঁড়ো, হলুদ গুঁড়ো, কাশ্মীরি লাল মরিচ গুঁড়ো, চিনি, গরমমশলার গুঁড়ো অর্ধেক, এবং নুন দিন। ভাল করে মেশান এবং এক মিনিট রান্না করুন, যত ক্ষণ না মিশ্রণের রং বদলে লালচে হয়ে যায়। সবশেষে, সবুজ মটর এবং কিশমিশ দিয়ে আলতো করে মেশান। মশলার মিশ্রণ যোগ করুন তাতে। প্যানে ঢাকনা দিয়ে ১০ মিনিট কম আঁচে রান্না করুন। মিশ্রণটি হালকা ভাবে নাড়তে থাকবেন। এ বার ঘি এবং অবশিষ্ট গরমমশলা দিয়ে আলতো করে নেড়ে দিন এবং আঁচ বন্ধ করুন। ব্যস!
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy