Durga Puja 2022: Make different types of sweets at home this pujo dgtl
Durga Puja 2022
কুলফি, জিলিপি, ফিরনি, প্যাঁড়া, জানুন বাংলার মিষ্টির অজানা গল্প
১৮৬৮ সালে কলকাতার নবীনচন্দ্র দাসের সৃষ্টি এই রসগোল্লা। শোনা যায়, নিজের স্ত্রীর কথা রাখতেই তিনি এই বিশেষ মিষ্টি তৈরি করেন।
আনন্দ উৎসব ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৭:৫৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
সে অনেক কাল আগের কথা। ময়রা বাড়িতে এল নতুন জামাই। তাঁকে কী চমক দেওয়া যায়, সে বিষয়ে ভাবতে ভাবতেই তৈরি হল ‘জলভরা’। মুখে দিতেই জামাই অবাক! আজও প্রসিদ্ধ সেই মিষ্টি। শীতের দিনে যা মুখে দিলে মোলায়েম গুড় মন ভাল করে দেবেই।
০২১৬
অন্য দিকে, এক ময়রা বাড়িতে মেয়ে জন্মালে ব্যবসার ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় পড়ল পরিবার। এক দিন সেই বাড়ির কর্তা বাইরে যান। ফিরে এসে দেখেন মেয়ে এক নতুন মিষ্টি বানিয়েছে। দেখে তো মাথায় হাত বাবার! তবে বাবার দুশ্চিন্তা কাটিয়ে ক্রেতা মহলে সুনাম পেল সে মিষ্টি। আজও সে মিষ্টির চাহিদা আছে। নাম জানেন সেই মিষ্টির? আপনাদের সকলের প্রিয় ‘নিখুঁতি’। নাম কিন্তু সেই মেয়ের নামানুসারেই।
০৩১৬
আসলে মিষ্টি শুধুমাত্র খাবার নয়, এ এক আলাদা আবেগ। জনপ্রিয় সব মিষ্টির সঙ্গেই জড়িয়ে আছে ছোট ছোট গল্পেরা। সেই সব গল্প মিষ্টির স্বাদ যেন দ্বিগুণ করে তুলেছে। দেশ জুড়ে তাই এত কদর এই পদের। বাড়ির যে কোনও অনুষ্ঠানেই সে মুখ্য ভূমিকায়। ভারতবর্ষের নানা রাজ্যের মিষ্টি স্থান বিশেষে আলাদা- স্বাদে, বর্ণে ও গন্ধে। উৎসবের মুহূর্তে দেশের বিভিন্ন জায়গার মিষ্টি চেখে দেখতেই পারেন। না না, দেশ ঘুরতে হবে না! রেসিপি দেখে বাড়িতেই বানিয়ে ফেলুন বরং।
০৪১৬
গুলাব জামুন: ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় মিষ্টিগুলির একটি হল এই গুলাব জামুন। অত্যন্ত নরম, স্পঞ্জি এই মিষ্টি ময়দা এবং গুঁড়ো দুধ বা কনডেন্সড মিল্ক দিয়ে তৈরি করা হয়। স্বাদ বাড়াতে মেশানো হয় এলাচ এবং গোলাপ। সম্ভবত গোলাপের ব্যবহার থেকেই নাম ‘গুলাব জামুন’। দক্ষিণ ভারতের কেরালায় এই মিষ্টি আবার ‘উন্নি আপ্পাম’ নামে পরিচিত। সেখানে এটি চালের আটা, গুড় (অপরিশোধিত চিনি), কলা এবং নারকেল থেকে তৈরি করা হয়।
০৫১৬
কুলফি: এক ধরনের আইসক্রিম ভারতে পরিচিত হয় কুলফি নামে। যদিও সাধারণ আইসক্রিমের চেয়ে এটি অনেক ঘন। কুলফির পরতে পরতে এলাচের স্বাদ। ইদানীং আম, পেস্তা, জাফরান, ভ্যানিলা, গোলাপ-সহ বিভিন্ন স্বাদেরও পাওয়া যাছে ।
০৬১৬
জিলিপি: জিলিপি বা জলেবির উৎপত্তি মধ্যপ্রাচ্যে। মনে করা হয়, পার্সি আক্রমণকারীরা ভারতে নিয়ে এসেছিল এই জলেবি। তবে এই মুহূর্তে কোনও সন্দেহ নেই যে, ভারতের মানুষ আবেগের সাথে তাকে আপন করে নিয়েছে। এমনকি বাঙালি ঘরে তার আদরের নাম ‘জিলিপি’। এটি মূলত মিহি ময়দা থেকে তৈরি, প্যাঁচালো আকারে ভেজে জাফরান চিনির সিরাপে ভিজিয়ে রাখা হয়। রসিক বাঙালি মহলে ‘জিলিপির প্যাঁচ’ কথাটিও বেশ জনপ্রিয়! যদিও মিষ্টি ভাব মোটেই নেই তাতে!
০৭১৬
ক্ষীর এবং ফিরনি: ক্ষীর ঐতিহ্যবাহী এক ভারতীয় মিষ্টি। ফিরনি তৈরি হয় চালের গুঁড়ো দিয়ে। দুধ ঘন করে জাল দিয়ে ক্ষীর তৈরি করতে অনেকটা সময় লাগে। ফিরনি সব সময়ে ঠান্ডা পরিবেশন করা হয়। ক্ষীর গরম গরমও ভাল লাগে। এ ছাড়া, বাংলায় পায়েস বা পরমান্নও বেশ জনপ্রিয়। পুজোর ভোগে পরমান্ন নিবেদন করা হয় ইষ্ট দেবতার উদ্দেশ্যে। কেরালার ওনাম উৎসবেও একই রীতি।
০৮১৬
রাবড়ি: দুধের সর ও ঘন দুধ দিয়ে একটি অসাধারণ মিষ্টি হল রাবড়ি। এলাচ, জাফরান এবং বাদামও এতে যোগ করা হয়। অন্যান্য মিষ্টি, যেমন গুলাব জামুন , মিহিদানা, জিলিপির সঙ্গে এর যুগলবন্দি জমজমাট।
০৯১৬
মিষ্টি দই: মিষ্টি দই বাংলার ঐতিহ্য। এটি জনপ্রিয়ও বটে। দুধ, চিনি বা গুড় সহযোগে তৈরি করা হয় এটি। লাল দইয়ের উপরিভাগে থাকে ক্ষীরের স্তর। মূলত বাংলার নবদ্বীপের দিকে লাল দই খুব বিখ্যাত।
১০১৬
লাড্ডু: দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন ধরণের লাড্ডু জনপ্রিয়। মোতিচুরের লাড্ডু, বেসনের লাড্ডু, মুগের লাড্ডু ইত্যাদি। প্রতিটি অঞ্চলের নিজস্ব বিশেষত্ব রয়েছে। তবে সাধারণত ছোলা/ছোলার আটা, নারকেল বা সুজি দিয়ে তৈরি হয় লাড্ডু। দুধ, চিনি, ঘি এবং শুকনো ফল মেশানো হয় এতে।
১১১৬
বরফি: বরফি হল একটি বিখ্যাত ভারতীয় মিষ্টি, যেটির নামকরণ ফার্সি শব্দ থেকে। যার অর্থ ‘তুষার’। এর প্রধান উপাদান কনডেন্সড মিল্ক। কাজু বা পেস্তা দিয়ে তৈরি হয় বরফি। সেগুলির উপরের অংশে লাগানো হয় তবক বা রুপোলি ফয়েল, যেটি খাওয়া যায়।
১২১৬
মাইসোর পাক: আপনি যদি কখনও কর্নাটকে থাকেন, তবে ভুলেও মাইসোর পাক মিস করবেন না। এই নরম পাকের মিষ্টি রাজকীয় মাইসোর প্রাসাদের রান্নাঘরে উদ্ভাবিত হয়েছিল বলে জানা যায়। বিখ্যাত এই পাকটি ছোলার আটা, চিনির সিরাপ (পাক), এবং প্রচুর পরিমাণে মাখন বা ঘি দিয়ে তৈরি হয়।
১৩১৬
রসগোল্লা: বাংলার এই বিখ্যাত মিষ্টি নিয়ে আছে জনপ্রিয় গান ও সিনেমা। রসগোল্লার উৎপত্তিই সেই ছবির বিষয়। ১৮৬৮ সালে কলকাতার নবীনচন্দ্র দাসের সৃষ্টি এই রসগোল্লা। শোনা যায়, নিজের স্ত্রীর কথা রাখতেই তিনি এই বিশেষ মিষ্টি তৈরি করেন। সে যা-ই হোক, কলকাতার রসগোল্লার জগত জোড়া নাম কিন্তু স্বাদের গুণেই। এটি তৈরি করতে সম্পূর্ণ ছানার গোলা মিষ্টি চিনির রসে ডোবানো হয়।
১৪১৬
রস মালাই: এই মিষ্টি অনেকটা রসগোল্লার মতোই। তবে দেখতে চ্যাপ্টা। এটি সরওয়ালা মিষ্টি দুধে (মালাই) ডুবে থাকে। সাধারণত বাদাম এবং কেশর দিয়ে সাজানো হয় রসমালাই।
১৫১৬
প্যাঁড়া: এই মিষ্টি উত্তর প্রদেশে, ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মস্থান মথুরায় উদ্ভূত হয়েছে বলে বিশ্বাস। প্যাঁড়া দুধ এবং চিনি দিয়ে তৈরি করা হয়। এর সবচেয়ে জনপ্রিয় সংস্করণ হল কেশর প্যাঁড়া।
১৬১৬
সোন পাপড়ি: সোন পাপড়ির জন্ম উত্তর ভারতে। এই মিষ্টি মুখে দিলে তুলোর মতো গলে যাবে। মূলত দীপাবলি উৎসব উদযাপনে এটি অপরিহার্য। এর মূল উপাদানগুলি হল ছোলার মিহি আটা, চিনির সিরাপ, ঘি , দুধ, এলাচ এবং বাদাম । এই মিষ্টিটি বাড়িতে তৈরি করা কঠিন। এটিকে তুলতুলে টেক্সচার দেওয়ার জন্য বিশেষ পদ্ধতি মেনে চলতে হয়।