প্রতীকী চিত্র
পুজো মানেই সব নিয়ম উড়িয়ে দেদার খাওয়াদাওয়া। সারা বছর জিম করা ছেলে বা মেয়েটিও এই কয়েকটা দিন শরীরচর্চা ভুলে মেতে ওঠে পুজোর আনন্দে। রোজ কব্জি ডুবিয়ে ভালমন্দ খাওয়া। কেউ কেউ এই চার দিন বাড়িতে খাওয়াদাওয়ার কথা প্রায় ভুলেই যায়। চিকেন চাউমিন, এগরোল, ফুচকা, বিরিয়ানি, চাইনিজ, চপ-কাটলেটে ডুব দেয় আট থেকে আশি। কিন্তু একেবারে ছোট্টরা? তারা কি করবে পুজোর এই ক’দিন?
বড়দের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রোজ রেস্তোরাঁর মশলাদার খাবার আর জাঙ্ক ফুড খেলে পুজোর পরেই হতে পারে পেটের গোলমাল। তখন আর এক বিপত্তি। এদিকে, উৎসবের মরসুমে ওরাই বা কেন একঘেয়ে খাবার খাবে? শারদীয়ার উদযাপনের কথা মাথায় রেখে তাই বাচ্চাদের জন্য রইল ঘরোয়া কিন্তু সুস্বাদু চটজলদি কয়েকটা রেসিপি। এগুলো বানানো যেমন সহজ, তেমনই বাড়ির খাবারে এনে দেবে রেস্তোরাঁর সুস্বাদ।
চিকেন পিসপাস
বাচ্চারা কিছু খেতে চাইছে না বা বাইরের খাবার খেয়ে ক্লান্ত? খুব সহজেই বাড়ির বয়স্ক এবং ছোটদের জন্য বানিয়ে ফেলতে পারেন এই দুর্দান্ত স্বাদের রেসিপি। তার জন্য প্রথমেই লাগবে মিডিয়াম সাইজের চিকেনের পিস। বাচ্চাদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে চাই কিছু সবজি, যেমন গাজর, বিনস, আলু, ব্রকোলি ইত্যাদি। সঙ্গে লাগবে গোবিন্দভোগ বা আতপ চাল। এটি ওয়ান পট মিল অর্থাৎ চাল এবং মাংস একসঙ্গে রান্না করা হয়। তাই যেমন সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর, তেমনই অত্যন্ত অল্প সময়ে বানানো যায়। প্রথমে মাংস ভাল করে ধুয়ে গোলমরিচ আদা, রসুন এবং দই দিয়ে মাখিয়ে রাখতে হবে। চাল যতটা পরিমাণে দেবেন, তা বাটিতে ভাল করে ধুয়ে, ভিজিয়ে, জল ঝরিয়ে রাখতে হবে। এর পরে কড়াইতে সাদা তেল বা ঘি দিয়ে প্রথমে কেটে রাখা সবজিগুলোকে ভেজে নিতে হবে। তার পর সামান্য গরম মশলা, তেজপাতা ও গোটা গোলমরিচ ফোড়ন দিয়ে বেশ বড় টুকরো করে কাটা পেঁয়াজ হালকা ভাজতে হবে। এ বার দই এবং আদা রসুন দিয়ে মাখা মাংসটা কড়াইতে ঢেলে দিতে হবে। মাংস ভাল করে ভাজা হয়ে গেলে জল ঝরিয়ে রাখা চাল দিয়ে দিন তাতে। চালটা খুব ভাল করে সবজি এবং মাংসের সঙ্গে ভাজা হয়ে গেলে সেদ্ধ করার জন্য পরিমাণ মতো গরম জল আস্তে আস্তে ঢালতে হবে। সঙ্গে স্বাদমতো নুন এবং চিনি এবং দু’টি চেরা কাঁচালঙ্কা দিতে পারেন। কিছু ক্ষণ পর ঢাকনা খুলে নেড়ে চেড়ে নিলেই তৈরি হয়ে গেল চিকেন পিস পাস। উপর থেকে একটু ঘি ছড়িয়ে পরিবেশন করুন আপনার বাড়ির খুদে সদস্যটিকে। দেখুন কেমন চেটেপুটে খায়!
দুধ পনীর
নিরামিষাশীদের জন্য পনিরের এই রেসিপিটি অত্যন্ত লোভনীয়। বারবার মাছ-চিকেন-মাটন খেয়ে ক্লান্ত? তা হলে আপনার বাচ্চার জন্য আজই বাড়িতে বানিয়ে ফেলুন দুধ পনির। এর জন্য প্রথমেই আপনাকে ফুল ক্রিমযুক্ত পনির নিতে হবে, যা কাটবেন ডুমো ডুমো করে। সঙ্গে আলুও কেটে নিন একই মাপে। চাইলে এর সঙ্গে মটরশুঁটি এবং ফুলকপিও দিতে পারেন। লাগবে কাজু বাটা, চার মগজ বাটা এবং দুধ। এবার কড়াইতে সাদা তেল বা ঘি এবং সামান্য গরম মশলা দিয়ে নেড়ে নিন। তাতে চৌকো করে কাটা পনিরের টুকরোগুলো দিয়ে হালকা করে ভেজে নিন। এ বার সামান্য উষ্ণ জলে ভিজিয়ে রাখতে পারেন। এতে পনির নরম থাকে। এর পরে একে একে ডুমো করে কেটে রাখা আলু, ফুলকপি ভেজে নেবেন। ভাজা হয়ে গেলে এগুলো তুলে রেখে দিন। এ বার কড়াইতে সামান্য সাদা তেলের মধ্যে বেটে রাখা কাজু, চারমগজ দিয়ে ভাল করে কষিয়ে নিন। সঙ্গে দিতে পারেন কিছু কিশমিশ। সব কিছু ভাল করে কষানো হয়ে গেলে তার মধ্যে দুধ দিন, সঙ্গে মেশান একটু উষ্ণ জল। ভাল করে ফুটে উঠলে আলু, পনির এবং ভেজে রাখা সবজি তার মধ্যে দিয়ে দিন। সব সেদ্ধ হয়ে গেলে দিন এক চামচ ঘি। ব্যস, তৈরি হয়ে গেল আপনার শিশুর পছন্দের খাবার। সাদা পোলাও, ভাত বা বাসন্তী পোলাও– যে কোনও কিছুর সঙ্গেই এই পদ দুর্দান্ত লাগবে।
সয়াবিন কালিয়া
সয়াবিন খেতে অনেকেই বেশ ভালবাসেন। আদর করে ডাকেন নিরামিষ মাংস বলে। পুজোর মধ্যে এক দিন বাড়িতে যদি সয়াবিনের কালিয়া রান্না হয়, তা হলে ছোটরা রেস্তোরাঁর খাবার ফেলে বাড়িতে ছুটে আসতেই পারে। যেমন দুর্দান্ত খেতে, তেমনই অত্যন্ত ঘরোয়া উপকরণে বানানো যায় এই পদ। এর জন্য প্রথমেই আপনার চাই পরিমাণ মতো সয়াবিন। সঙ্গে ডুমো করে কেটে রাখা আলু, টোম্যাটো কুচি, পেঁয়াজ কুচি, আদা, রসুন বাটা আর গোটা গরম মশলা। গরম জলে সামান্য নুন দিয়ে ৫-১০ মিনিট সয়াবিনগুলোকে ভিজিয়ে রাখুন। এরপর নিংড়ে খুব ভাল করে জল বার করে দিন। কড়াইতে সর্ষের তেল দিয়ে গরম মশলা ভেজে নিন। তার মধ্যে দিন ডুমো করে কেটে রাখা আলু। আলুগুলো ভাজা হয়ে গেলে তেলের মধ্যে পেঁয়াজ কুচি ও আদা-রসুন বাটা দিয়ে ভাল করে কষাতে হবে। মশলা থেকে তেল ছাড়লে তার মধ্যে দিয়ে দিন টোম্যাটো কুচি। সব কিছু ভাল করে কষানো হয়ে গেলে সয়াবিনগুলো কড়াইতে ঢেলে দিন। এ বার ধৈর্য ধরে খুব ভাল করে কষাতে হবে, যাতে মশলাগুলো সয়াবিনের ভিতরে ঢোকে। ভালো করে কষানো হয়ে গেলে তার মধ্যে দিয়ে দিন গরম জল, চেরা কাঁচা লঙ্কা ও নুন। এ বার ঢাকনা দিয়ে কিছু ক্ষণ রাখুন। সব সেদ্ধ হয়ে গেলে এবং জল কিছুটা কমে এলে ঘি এবং গরম মশলা গুঁড়ো দিয়ে নামিয়ে দিন। দুপুর হোক বা রাত, সয়াবিনের এই কালিয়া পেলে আপনার বাচ্চা আহ্লাদে আটখানা হবে!
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy