Advertisement
Durga Puja 2019

পুজোর স্বাদে ভিয়েন থেকে ফিউশন

পুরনো বাড়ির ভোগ থেকে বারোয়ারি পুজোর মণ্ডপ—মিষ্টি ছাড়া কিন্তু পুজো অসম্পূর্ণ।

কৌশিক ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৫:০১
Share: Save:

ধ্রুপদী চন্দ্রপুলি বা বোঁদে, সন্দেশ তো রয়েইছে। তার সঙ্গে রকমারি ফিউশনের বাহার। দেবীর ভোগে পঞ্চব্যঞ্জনের উপচারকেও হার মানাবে মিষ্টান্নের সম্ভার।

রক্তে শর্করা-আতঙ্ক ত্রাস সৃষ্টি করেছে। ওজন বেড়ে গ্ল্যামারেরও দফারফা। তবু পুরনো বাড়ির ভোগ থেকে বারোয়ারি পুজোর মণ্ডপ—মিষ্টি ছাড়া কিন্তু মায়ের পুজো প্রায় অসম্পূর্ণ। বেশির ভাগ পাড়ার পুজোয় পাঁচ দিনই মিষ্টি থেকে মুখ ফেরাবে না বাঙালি। কোথাও আবার পাত পেড়ে ভোগ খাওয়ার আসরেই জমিয়ে চলবে মিষ্টিমুখ।

দক্ষিণ কলকাতার পুজো একডালিয়া এভারগ্রিনের কোষাধ্যক্ষ স্বপন মহাপাত্র বলছেন, ‘‘আমাদের পুজোর বিশেষ মিষ্টি চন্দ্রপুলি। বহু দিন ধরে এই ট্র্যাডিশন চলছে।’’ তিনি জানান, এলাকায় বাড়ি-বাড়ি চন্দ্রপুলি বিতরণের রেওয়াজ রয়েছে তাঁদের পুজোয়। কয়েক বছর ধরে দেবীর ভোগে চিত্রকূট দেওয়ার প্রচলনও শুরু হয়েছে। বাদামতলা আষাঢ় সঙ্ঘের পুজোয় আবার বসে আস্ত ভিয়েন। গরমাগরম কড়া থেকে বোঁদে নামানোর মুহূর্তে প্রবীণ পুজোকর্তাদেরও জিভে জল আসে।

পুজোর মিষ্টিতে বাঙালি-অবাঙালির ফারাকও তুচ্ছ। লেক টেম্পল রোডের শিব মন্দিরের কর্তা পার্থ ঘোষ রসগোল্লায় জোর দেন বরাবরই। উত্তর কলকাতার কাশী বোস লেন আবার সমান গুরুত্ব দেবে রকমারি মাড়োয়ারি খানাকেও। ওই পুজো কমিটির সম্পাদক সৌমেন দত্ত বলেন, ‘‘নবমীতে আমরা দেবীকে ৫৬ ভোগ নিবেদন করি। এর মধ্যে মিষ্টিই ২৫ রকম। আমাদের বাঁধা হালুইকরের বরফি বা বেসনের ‘দিল কা সার’ খেলে টের পাবেন!’’

মিষ্টি-রসিকদের চাহিদা মেটাতে পুজোয় বিরাম নেই ডাকসাইটে মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীদেরও। রিষড়ার ফেলু মোদকের অন্যতম কর্ণধার অমিতাভ দে এলাকার পরম্পরা মেনে প্রতি বছরই জোর দেন ‘গাছমণ্ডা’য়, যা আদতে গাছের আকারে চুড়ো করা মাখা সন্দেশ। উত্তরপাড়া সংলগ্ন এলাকায় অষ্টমীর সন্ধিপুজোর ভোগে এই মণ্ডা থাকবেই। পুজো-স্পেশ্যাল আট রকম ভিন্ন
স্বাদের গুজিয়াও গুছিয়ে পেশ করছে ফেলু মোদক।

উত্তর কলকাতার সিমলেপাড়ার গিরিশ চন্দ্র দে ও নকুড় নন্দীও স্বমহিমায়। তাদের তরুণ কর্তা পার্থ নন্দী জানালেন, এই পুজোয় ‘কেশরী কাঁচাগোল্লা’ এবং ‘কেশরী উৎসব’ তৈরি করা হচ্ছে। বলরাম মল্লিক ও রাধারমন মল্লিকের কর্ণধার সুদীপ মল্লিক বলেন, ‘‘পুজো উপলক্ষে আগমনি সন্দেশ, আতা সন্দেশের সঙ্গে সল্টেড ক্যারামেল সন্দেশ, আনজির সন্দেশও তৈরি করছি। বরাবরের মতো ধ্রুপদী স্বাদের সঙ্গে কিছু নতুনত্ব নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করাই আমাদের পুজোর চ্যালেঞ্জ।’’ কে সি দাশের আবার লক্ষ্য কলকাতার পুজো দেখতে আসা কাছে-দূরের আগন্তুকেরা। ম্যানেজিং ডিরেক্টর ধীমান দাশ হাসেন, ‘‘কাউন্টারের মিষ্টি ছাড়াও এখন রসগোল্লার টিন আমাদের লক্ষ্মী।’’

তবে চিনি থেকে নানা উপকরণের দামের মোকাবিলা করাও পুজোর মুখে এই সব মিষ্টি-স্রষ্টাদের বিশেষ মাথাব্যথা। পশ্চিমবঙ্গ মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সমিতির মুখ্য সহ-সম্পাদক জগন্নাথ ঘোষ বলেন, ‘‘মহালয়া থেকে ভাইফোঁটা— পুরোটাই গুরুত্বপূর্ণ সময়। দুশ্চিন্তা আছে। তবে বাঙালি আমাদের ফেরাবে মনে হয় না। আশা রাখি, এ বারও মিষ্টির দাপট একই রকম থাকবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy