পুজোর ক’টা দিন মানেই উৎসব। ছোটবেলা থেকেই এই ক’টা দিন আমার কাছে উৎসব হিসেবেই আসে। এর থেকে বড়, এর থেকে ভাল সময় আর হতে পারে না। বছরের ওই চার দিন আমার কাছে শ্রেষ্ঠ চার দিন। পুজোর সময় ঢাকের আওয়াজ দারুণ লাগে। আর ভাল ভাল খাবার। নানা রকম খাবার খেতে খুব ভালবাসি। এত মানুষ এত সুন্দর করে থিম পুজো করেন, এটাও আমার ভীষণ ভাল লাগে।
এমনিতে পুজোয় সে ভাবে কিছু প্ল্যান নেই। কিন্তু প্রতি বছর পুজো পরিক্রমা থাকে। বিচারক হতে হয়। এই কাজটা করতে আমার ভীষণ ভাল লাগে। কারণ সব ঠাকুর দেখাও হয়ে যায়, মজাও হয়ে যায়। এত ভিড়ের মধ্যেও লাইন দিয়ে দাঁড়াতে হয় না অথচ সুন্দর করে ঠাকুর দেখা হয়ে যায়।
এ ছাড়া বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে পছন্দ করি। আবার ফ্যামিলির দিক থেকেও কয়েকটা বিষয় আছে। এক দিন মা-বাবাকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে যেতে হয়। অষ্টমীর সকালে অঞ্জলি মাস্ট। আমি ‘অভিদীপ্তা’ কমপ্লেক্সে থাকি। ওখানেই অঞ্জলি দিই। আর একটা জিনিস আমার খুব ভাল লাগে, সন্ধিপুজো। ‘অ্যান্ডারসন’ বলে একটা ক্লাব আছে। সেখানে আমি সন্ধিপুজো দেখতে যাই। ধূপের ধোঁয়া, ঢাকের আওয়াজ, মন্ত্রপাঠ মিলিয়ে একেবারে অন্য রকম একটা আবহ তৈরি হয়। ধোঁয়ার ওপারে আবছা ঠাকুর, রহস্যময় লাগে! আর একটা মজার বিষয় হল আমরা বন্ধুরা এক জায়গায় হয়ে কোনও না কোনও প্যান্ডেলে ধুনুচি নাচের কম্পিটিশন করি। ঢাকের তালে ধুনুচি নাচ আমাদের কাছে খুব জরুরি। দারুণ মজা হয়। আমাদের নাচ দেখার জন্য বেশ ভিড়ও জমে যায়।
ছোটবেলা থেকে আমি সব পুজোয় যাই। কিন্তু কিছু কিছু পুজো আছে যেগুলোতে আমি যাবই যাব। তাদের মধ্যে একটা হল ম্যাডক্স স্কোয়ার, আর একটা সাউথ পয়েন্ট স্কুলের উল্টো দিকে দুর্গাবাড়ি। দুর্গাবাড়িতে যে ভাসানটা হয় সেখানে সাউথ পয়েন্টের ছেলেরা মিলে নাচানাচি হয়। আমিও সাউথ পয়েন্টের। তাই ওখানে আমি যাবই। ভাসানে আমি থাকবই থাকবো। ওইদিনই সাউথ পয়েন্টের বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হয়।
আরও পড়ুন: দু’বছর ধরে সিঙ্গল, তবু মেয়ে দেখার উপায় নেই: সুমন
গত পাঁচ বছর ধরে ডিজাইনার অভিষেক রায় আমার পোশাক ডিজাইন করেন। ওঁকে বলেছি পুজোর পাঁচ দিন আগে দশটা পোশাক ডিজাইন করে দিতে। সবগুলোই ইন্ডিয়ান। পুজোর দিনগুলোয় ধুতি, পাঞ্জাবি, শেরওয়ানি পরতেই ভালবাসি। জুতোও ইন্ডিয়ান পরি। কোলাপুরি বা স্যান্ডাল— যেগুলো ইন্ডিয়ান ট্র্যাডিশনাল ওয়ারের সঙ্গে যায়। আমার একটা ফর্মাল শাইনি জুতো আছে। ওটা ইন্ডিয়ান পোশাকের সঙ্গে পরলে বেশ ভাল লাগে এবং আরামদায়কও। পোশাক হাতে পেলে ঠিক করব, কবে কী পরব। নিজের পোশাক হাতে না পেলেও অন্যদের জন্য কেনাকাটা করেছি। মায়ের জন্য, বাবার জন্য, তৃণার জন্য পোশাক কেনা হয়ে গিয়েছে। তৃণার জন্য শাড়িই কিনেছি। এই ক’টা দিন শাড়িই সেরা।
পুজোর সময় তো ডায়েটের কোনও ব্যাপারই নেই। সব কিছুই খাব। পুজোর ক’টা দিন যেটুকু ঘোরার সময় পাই বন্ধুবান্ধব তো থাকবেই, সঙ্গে তৃণাও থাকবে। পুজোর বিচার বা শো ছাড়া বাকি সময় সবাই একসঙ্গেই ঘুরি। তবে এখন অবধি জানি না সামনের রবিবার কী করব, পুজো আসতে তো আরও কিছু দিন দেরি আছে। তাই পুজোর জন্য বিশেষ করে কিছু প্ল্যান হয়নি। তবে হ্যাঁ, যেটুকু সময় পাব চুটিয়ে আড্ডা দেব আর জমিয়ে খাওয়াদাওয়া হবে। এমনিতে তো সারা বছর কাজ নিয়েই থাকি। ওই ক’টা দিন আনন্দের মেজাজে চলে যাব।
আরও পড়ুন: গভীর রাতে আম্মার সঙ্গে প্যান্ডেল হপিং… কী হত জানেন? জানালেন রাইমা
পজো শেষ মানেই তো আবার কাজের রুটিনের মধ্যে ঢুকে পড়তে হবে। আবার সকাল থেকে রাত অবধি শুটিং। বন্ধুবান্ধবও নিজের নিজের কাজে ফিরে যাবে। সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়বে। অনেকের সঙ্গে আবার সেই পরের বছর পুজো ছাড়া দেখাই হবে না।
পুজো শেষ হলে তাই একটা মন খারাপ তো হয়ই। উৎসব শেষে শহরের চরিত্রই পাল্টে যায়। ভাঙা পান্ডেল, বাঁশ, দড়ি, ফাঁকা ফাঁকা রাস্তা। জমিয়ে উৎসব করার পর শহরটা যেন সব এনার্জি হারিয়ে ফেলে আবার নতুন করে জেগে উঠবে বলে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy