ক্রাইস্টচার্চে দুর্গাপুজো
রৌদ্রোজ্জ্বল বসন্তের সকালে প্রশান্ত মহাসাগরের নৃত্যরত নীল তরঙ্গের শোভায় অভিভূত আমি সকালের পেয়ালায় সবেমাত্র চুমুক দিয়েছি তখনই হোয়াটসঅ্যাপে পাবলোর বার্তা ইংরেজিতে- “ঝরনা আন্টি আর ইউ ফ্রি ফর স্মল টক”। পাবলো ওরফে অমিত্রজিৎ আমাদের ক্রাইস্টচার্চের দুর্গাপুজোর একজন সংগঠক। আমি সকলের বয়স জ্যেষ্ঠ তাই সর্বজনীন আন্টি। ফোন করে জানি ক্রাইস্টচার্চের পুজো সম্পর্কে লেখা পাঠাতে হবে। আমি বলি এ বছর নতুন মূর্তি আনার সিদ্ধান্ত কার্যকর না হওয়ায় আমি লিখতে অনিচ্ছুক আর পাবলো নাছোড়বান্দা। কথাগুলো নিজেরই কানে বাজে, নিজেকে কবিগুরুর ‘পূজার সাজ’ কবিতার অবুঝ মধু মনে হয়। এরপর নিজেকেই বুঝিয়ে নেতিবাচক চিন্তা থেকে নিষ্কাশিত করি। নিষ্কাশন এর কারণ একাধিক - প্রথমত পৌরসভার একটি হল পাওয়া গেছে যা সর্বদিক দিয়ে এই উৎসবের জন্য উপযুক্ত, প্রচুর মানুষ কে একসঙ্গে নিয়ে এবার পুজো করা যাবে সুতরাং এবছর মায়ের সাজগোজের পরিকল্পনার পরিধি আগের তুলনায় অনেক বৃহৎ। হলের মধ্যে একটি ছোটখাটো কিচেনের ব্যবস্থা আছে তার উপরে এবার হবে বিশাল বড় প্রায় ১৫ ফুট বাই ১০ ফুট এর স্টেজ। বিচিত্রা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিরা অংশগ্রহণ করবে।
আমাদের এখানে বিচিত্রা অনুষ্ঠানের সূচী সর্বভাবে আন্তর্জাতিক - বহু দেশের বহু ভাষার মানুষের একসঙ্গে পুজোর আনন্দে মেতে ওঠা আমাদের সবচেয়ে বড় পাওয়া। এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখার জন্যে উদগ্রীব হয়ে আছেন সকলে। এরই মধ্যে একটা ঘটনা জানিয়ে রাখা ভাল - ক্রাইস্টচার্চের মেয়র আমাদের ঘরের মানুষ, কত বছর ধরে পুজোতে সব সময় তিনি আমাদের ক্রাইস্টচার্চের বাঙালিদের সঙ্গে থেকেছেন। আমাদের যেদিন দুর্গাপুজো সেদিন তার মেয়র হিসেবে শেষ দিন - তিনি বিশেষভাবে সেটাকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য আমাদের অনুষ্ঠানে আসবেন এবং মেয়র হিসেবে সেটাই হবে তার শেষ অনুষ্ঠান।
রসনা পরিতৃপ্তি অনেক উৎসবের উল্লেখযোগ্য অংশ, - বিশেষ করে যে উৎসব বাঙালির মন-প্রাণ অধিকার করে আছে বহু প্রজন্ম ব্যাপী। এবার গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করে সকল সদস্যের ভোটের উপর তৈরি হয়েছে আমাদের সপ্তাহান্তে পুজোর খাবারের তালিকা। যা আগের বছরের থেকেও অনেক বেশি পরিমাণে এবং সুস্বাদু হবে বলে আশা করা যায়। মা এবার উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধের বহু দেশ পরিক্রমণের পর কৈলাস প্রত্যাবর্তন করার আগে আমাদের কাছে আসবেন। তাই সপ্তাহান্তের পুজোর আগে তুষারপাত সঙ্গে নিয়ে এসেছেন কৈলাসের উপহার হিসেবে। যথারীতি এই বসন্তে প্রকৃতি বহু রঙের ফুলের ডালি সাজিয়ে আছে - তারই পাশে ছড়িয়ে দিলেন শ্বেতশুভ্র শুদ্ধতার প্রতীক।
মা এসো আমাদের মাঝে
তোমার সকল শক্তি দিয়ে রক্ষা করো তোমার সন্তানদের, পৃথিবীতে আসুক বহু আকাঙ্খিত শান্তি।
শেষে তাই প্রিয় কবি অনুসরণে বলতে ইচ্ছে করে-
আবার আসিব ফিরে, আগামী বসন্তের ডালি নিয়ে
হুগলি নদীর তীরে।
অন্তর্জালের মাধ্যমে ক্রাইস্টচার্চ এর পুজো সম্পর্কে জানার জন্য নিচের লিঙ্কটিতে ক্লিক করুন।
https://canterburystories.nz/collections/community/christchurch-bengali-community
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy