চলছে পুজোর প্রস্তুতি, গানের মহড়া
কলকাতা থেকে হাজার হাজার মাইল দূরে আমেরিকাতে বসে পুজোর সময়টা কাটবে কি করে ভাবছি, এমন সময় আলাপ হল দীপ্তরূপ চক্রবর্তীর সঙ্গে। ভদ্রলোক আরও কিছু বাঙালির সঙ্গে মিলে গড়ে তুলেছেন নর্থ জার্সি বাঙালি অ্যাসোসিয়েশন। আবার ভাগ্যচক্রে এবার তাঁদের প্রথম দুর্গাপূজা আর বলা বাহুল্য আমাকে আর পায় কে! পুজো হবে সাবেকি ভাবে। মা দুর্গা কুমারটুলি থেকে ছেলে মেয়ে নিয়ে সোজা চলে এসেছেন নর্থ জার্সি, ডুমান্ট-এ এই প্রথম বার। পুজোর প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। বিভিন্ন পেশার মানুষ যুক্ত রয়েছেন এই পুজোর সঙ্গে। টেবিলে টেনিস-এ কমনওয়েলথে অংশগ্রহণ করা সুদেষ্ণা চক্রবর্তী প্রাণপাত করছেন পুজোর সমস্ত জোগাড় করতে। অ্যাসেম্বলি অফ গড চার্চের প্রাক্তন অঙ্কের শিক্ষিকা কৃষ্ণা ম্যাম তাঁর হারমোনিয়াম নিয়ে গুরুদেবের গান তোলাতে ব্যস্ত। উদ্বোধনী সঙ্গীত যদি সুরে তালে না হয় তা হলে চলে না সেটা ক্রমাগত বোঝাচ্ছেন আর বাধ্য ছাত্র-ছাত্রীরা (যাঁরা কিনা ইঞ্জিনিয়ার, ব্যাংকার, আইটি-তে কর্মরত) পরম নিষ্ঠার সঙ্গে সুরে (মাঝে মাঝে বেসুরে তাতে জুটছে বকা) গান তুলতে চেষ্টা করে চলেছে। ছোট ছোট লক্ষীছানাগুলোর এনার্জি লেভেল ম্যাচ করতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে বড়রা। তাঁদের উৎসাহ যেন সব চেয়ে বেশি। নাচে গানে মা দুর্গাকে বরণ করতে প্রস্তুতি চলছে জোর কদমে। এই পুজো বলে দেবে আমেরিকার মতো ব্যস্ত দেশে থেকেও বাঙালিরা নিজেদের সংস্কৃতি চর্চা করতে ভোলেনি। প্রদীপ নাথ এবং অনিরুদ্ধ শাসমল দুজনেই বহুদিন আমেরিকাতে বসবাস করছেন তাদের ভাবনা এবং সহযোগিতা ছাড়া এই রকম লার্জ স্কেলে পুজো প্রথমবারেই করা সম্ভব ছিল নাI
অক্টোবরের ১ এবং ২ — দু’দিন ব্যাপী পুজো হবে। এই পুজোয় কলকাতা থেকে গান গাইতে আসছেন সুপ্রতীপ ভট্টাচার্য, গৌরব সরকার এবং মধুরা ভট্টাচার্য। রূপকথার পাতা থেকে উঠে আসা ছবির মতো সুন্দর ডুমান্ট শহরে বসে দেবী দুর্গার আরাধনার প্রস্তুতি, এ এক অনির্বচনীয় অনুভূতিI বাংলাদেশ থেকে আসা বাঙালিরাও ওতপ্রত ভাবে জড়িয়ে পড়েছেন এই পুজোর সঙ্গে। দেবী কে প্রসন্ন করতে তাই গোটা নর্থ জার্সির বাঙালিরা উঠে পড়ে লেগেছে।
বাঙালির উৎসব আর খাওয়া দাওয়া থাকবে না তা কি হয় ,এই দু’দিন ধরে জমাটি খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে এখানে। ভোগ প্রসাদ ছাড়াও ব্যবস্থা করা হয়েছে প্রাতঃরাশ এবং নৈশভোজের।
আমার কাছে এই বারের পুজো প্রথম পুজো। তাই এই পুজো চিরস্মরণীয় থাকবে। কারণ দেশ-কাল ভেদে মা যে মাই হয় সেটা এবার চাক্ষুষ করতে পারছি। আর সেই আরও একটা সত্যি উপলব্ধি করেছি। তা হল — যে কোনও প্রান্তের বাঙালিকে হুল্লোড়ে মাতিয়ে দিতে পারে দুর্গাপুজো। আর সেই কারণে এটি বাঙালির সব থেকে বড় উৎসব।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy