Advertisement

Associate Partner

Style Partner

Associate Partner

Weddings Partner

Food Partner

Durga Puja 2019 Ananda Utsav 2019 Durga Puja Celebration International Durga Puja

১০৮ পদ্ম থেকে পুজোর ভোগ, টোক্সাসের পুজোয় বজায় পূর্ণমাত্রায় বাঙালিয়ানা

বোধন থেকে শুরু করে কলাবউ স্নান, যজ্ঞ, কুমারী পুজো, সন্ধি পুজো, পুষ্পাঞ্জলি— নিয়ম মেনে সারা দিন ধরে পুজো চলে|

অপরাজিতা ঘোষ
স্যান অ্যান্টোনিয়ো (টেক্সাস, আমেরিকা) শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৯ ১৬:৫২
Share: Save:

কলকাতা থেকে বহু যোজন দূরে দু’দিনের মধ্যে পঞ্জিকা অনুযায়ী সব নিয়ম মেনেই হবে দুর্গাপুজোর প্রতিটা ধাপ। সেটা সম্পূর্ণ করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করি আমরা, আমেরিকার টেক্সাসের স্যান অ্যান্টোনিয়োর বাঙালিরা। এ বার আমাদের দুর্গাপুজো পা দিল তিনে।

সাধারণত এখানে শনিবার ও রবিবার পুজো হয়, কিন্তু এই বছর মহাষষ্ঠী শুরু আগামী ৪ অক্টোবর। পুজো শেষ ৬ অক্টোবর| পুজোর কয়েকটা দিন আমাদের এখানে বেলুড় মঠের সূচি অর্থাৎ বিশুদ্ধ সিদ্ধান্তের নির্ঘণ্ট অনুযায়ী সকাল থেকে উপোস করে নিষ্ঠা সহকারে পূজা করেন আমাদের কমিউনিটিরই তিন সদস্য|

বোধন থেকে শুরু করে কলাবউ স্নান, যজ্ঞ, কুমারী পুজো, সন্ধি পুজো, পুষ্পাঞ্জলি— নিয়ম মেনে সারা দিন ধরে পুজো চলে| শিউলি আর ১০৮টা পদ্মও নিবেদিত হয় মায়ের পায়ে| ধুনুচি নাচে বাঙালি-অবাঙালি সবাই এখানে সমান তালে মেতে ওঠেন| কলকাতা থেকে আনা ঢাক বাজান এখানকার সদস্যরাই| দশমী পুজোর পর শুরু হয় মেয়েদের সিঁদুরখেলা| যেহেতু এখানে দুর্গা প্রতিমার বিসর্জন হয় না, তাই প্রতিমাকে সিঁদুর পরানো যায় না| বরণ করা হয় পিতলের ছোট্ট দুর্গা প্রতিমাকে| পুজো শেষে প্রতিমাকে সংরক্ষিত করে রাখা হয় পরের বছরের জন্য|

এই বিশাল কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা কিন্তু শুরু হয়ে যায় তিন চার মাস আগে থেকেই| গঠন করা হয় বিভিন্ন কমিটি। মণ্ডপসজ্জা, ভোগ, পুজোপাঠ, কালচারাল, ফান্ড রেইজিং, ভেনু অ্যান্ড সিকিউরিটি, স্যুভেনির-সহ পুজোর বিভিন্ন পর্বের দেখাশোনা করে আলাদা আলাদা দল।

আরও পড়ুন: গত বছরের পুজোয় ফুচকার স্টল দিয়েছিলেন এক সুইডিশ ভদ্রলোক

মণ্ডপসজ্জা দলের দায়িত্ব থিম এবং মণ্ডপের অন্দরসজ্জা| ভোজনরসিক বাঙালির পুজো মানেই লুচি-আলুর দম, কচি পাঁঠার লাল ঝোল। অফিসের প্রোজেক্ট সামলে, অসংখ্য মিটিং করে ফুড কমিটি ঠিক করে পুজোর কদিনের খাবারের মেনু।

আমাদের ভুরিভোজের পাশাপাশি মা দুর্গার আপ্যায়নে যাতে কোনও ত্রুটি না হয়, সে দিকে খেয়াল রাখেন ভোগ কমিটির সদস্যরা| খিচুড়ি, লাবড়া, পাঁচ রকম ভাজা, লুচি, চাটনি, পায়েস, নলেন গুড়ের সন্দেশ, নারকোল নাড়ু দিয়ে সাজানো হয় ভোগের থালা| এ ছাড়াও পুজোর জন্য কুমারী নির্বাচন করে কমিটি| কালচারাল টিমের দায়িত্ব বাচ্চা আর বড়দের নাচ, গান, কবিতা, নাটক অনুশীলন করানো| দু’ মাস ধরে চলে মহড়া| ফান্ড রেইজিং টিম দেখে বিজ্ঞাপন বিভাগ| ভেনু অ্যান্ড সিকিউরিটি কাজ শুরু করে আরও আগে থেকে। কারণ এখানে ৬ মাস আগে থেকে ভেনু খুঁজে বুক করতে হয়| আইটি টিম দেখভাল করে ওয়েবসাইট, ফেসবুক পোস্ট এবং স্যুভেনির-এর দিক।

পুজোর দিনগুলোয় নানা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়ে থাকে। শঙ্খ বাজানো, ধুনুচি নাচ, বসে-আঁকো, যেমন খুশি সাজো-র মতো বেশ কিছু প্রতিযো‌গিতা| এ বারের নতুন চমক অবশ্য সা-রে-গা-মা-পা এবং ইন্ডিয়ান আইডল-এর শিল্পীরা| তা ছাড়াও তালিকায় নতুন সংযোজন বাচ্চা আর বড়দের ফ্যাশন শো|

পুজোয় আমাদের একটা বিশেষ উদ্যোগ পুজো ম্যাগাজিন। সেখানে এখানকার খুদে শিল্পীদের আঁকা ছবি, কবিতা, গল্প পড়লে বিস্মিত হতে হয়| শুধু খুদেরাই নয়, বড়রাও তাদের ব্যস্ত জীবনযাত্রা থেকে সময় বারকরে গল্প-কবিতা লেখে, ছবি আঁকে|

আরও পড়ুন: হুহু করে উঠত বুকটা, এ বার পুজোয় কলকাতাটাকেই তুলে আনছি অসলোয়​

প্রত্যেকে কবে কী শাড়ি পরবে, তার সঙ্গে মানানসই গয়না কোনটা হবে, তার পরিকল্পনা চলতে থাকে দু’ মাস আগে থেকেই| সাজের খুঁটিনাটি নিখুঁত রাখতে আমেরিকায় বসে আমাদের ভরসা অনলাইন শপিং। নয়তো, দেশ থেকে আসা স্পিডপোস্ট। অনেকেই আবার কলকাতায় থেকে চুটিয়ে শপিং করে ফেরেন। যাতে নজরকাড়া পুজোর সাজে হয়ে ওঠা যায় অনন্যা।

স্যান আন্টোনিওতে এখন চাঁদের হাট| অনেকেরই বাবা-মা, শ্বশুর-শাশুড়ি চলে এসেছেন প্রবাসের পুজোর আনন্দের স্বাদ নিতে| এখানকার প্রায় দুশো জন বাঙালি অপেক্ষা করে আছেন সব জটিলতা ভুলে, বোধন থেকে বিসর্জনের প্রতি মুহূর্তে আনন্দ-গল্প-হাসি-ঠাট্টায় খুশিতে নিজেদের ভাসিয়ে দিতে|

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE