বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন ঠাকুরলি ডোম্বিভিলি মহারাষ্ট্র সরকার অনুমোদিত একটি ট্রাস্ট। এটি মুম্বই শহরতলি থেকে একটু দূরে। আমাদের পরিচালিত স্কুল আছে। বিদ্যাসাগর ইংলিশ স্কুল, দশম শ্রেণি পর্যন্ত।
আমাদের এ বার ৬৫তম দুর্গাপূজা। ডোম্বিভিলির সর্বেশ হলে পুজোর আয়োজন করেছি আমরা। পূজার দিনগুলিতে এই এলাকার ও আশেপাশের বাঙালি ও অবাঙালি প্রচুর দর্শণার্থীর ভিড় হয়। প্রবাসী বাঙালি অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থাকে এই দিনক’টার জন্য। অত্যন্ত ঘরোয়া পরিবেশে আমাদের এই পুজোর আয়োজন। পুজো শুরু হয় মহাষষ্ঠীর মায়ের বোধন থেকে। পুজোর সমস্ত কাজ বিধি মেনেই করা হয়। পুষ্পাঞ্জলি, সন্ধিপূজো (যত গভীর রাতেই হোক), কুমারী পূজা দেখতে প্রচুর লোকের ভিড় হয়। পুজোর মুখ্য খরচ আসে স্থানীয় বাঙালিদের থেকে নেওয়া এবং স্পন্সরশিপে তোলা টাকায় (শুধুমাত্র পাঁচজন স্পন্সর নেওয়া হয়)।
আমাদের পুজোর মুখ্য আকর্ষণ সন্ধিপুজো। সন্ধিপুজোতে মন্ত্র উচ্চারনের সঙ্গে পাঁচ ব্রাহ্মণের প্রত্যেকের হাত দিয়ে ১০৮টি করে, মোট ৫৪০টা পদ্মফুল মায়ের চরণে নিবেদন হয়। তার পর হলের সব আলো নিভিয়ে মায়ের সামনে ১০৮টা দীপ জ্বালিয়ে সন্ধিপুজোর আরতি। এক ভক্তিপূর্ণ মায়াবী পরিবেশের সৃষ্টি হয়। অনেক মহিলা বাসিন্দা উপোস করে সন্ধিপুজোতে উপস্থিত হন।
আরও পড়ুন:ভক্তিভরে পুজো দেব, পেটপুজোতেও খামতি নেই আমাদের সান দিয়েগোয়
মহাসপ্তমী থেকে মহানবমী খিচুরি ভোগ বিতরণ হয়। এতেও প্রচুর লোকের সমাগম হয়। রাতের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আর এক ভিন্ন স্বাদের অভিজ্ঞতা। কলকাতা ও মুম্বই-এর শিল্পীরা গানের ডালি নিয়ে আমাদের আনন্দ দেন। পুরনো বাংলা গান শুনে বাংলাকে আরও কাছে পাওয়া যায়।
দশমীর দিন মহিলাদের সিঁদুর উতসব শেষে বিকেলে শোভাযাত্রা সহকারে দেবীমাকে বিসর্জন দেওয়া হয়। সব বয়সের পুরুষ ও মহিলারা বিসর্জন শোভাযাত্রায় উপস্থিত থাকেন।
আরও পড়ুন: অসলোর এই পুজোর উদ্যোক্তা মেয়েরাই, আমরা পুরুষরা সঙ্গে থাকি
দুর্গাপূজার শেষ অনুষ্ঠান, বিজয়া সম্মিলনী। বিসর্জন শেষ হলে শান্তিরজল নিয়ে কোলাকুলি পর্ব সেরে, পূজায় আয়োজিত নানা প্রতিযোগিতার (ঊলুধ্বনি, শঙ্খ বাজানো) পুরস্কার দেওয়া হয়। বিজয়া সম্মিলন অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে মিষ্টির প্যাকেট দিয়ে দুর্গাপূজার উৎসবের সমাপ্তি হয়।
প্রবাসী বাঙালি, বাংলা থেকে এত দূরে থেকেও আমাদের আয়োজিত দুর্গোৎসবে পুজোর কটা দিন বাংলাকে অনেক কাছে এনে দেয়। অনেক দিন না দেখা পরিচিতদের সঙ্গে পুজোবাড়িতে আড্ডা ও হইচই পুজোর পর অনেক দিন মনে থাকে।
সবার জন্য রইল শারদীয়ার শুভকামনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy