Successful Female Entrepreneur

বাড়িতে বানানো ঘি-তেই রয়েছে বহু শারীরিক সমস্যার সমাধান, জানাচ্ছেন রিম্পা ঘোষ

সময় এবং শ্রম দুই-ই বাঁচাতে মানুষ বেছে নিচ্ছেন এই সহজলভ্য সামগ্রীকেই। তবে এই জিনিসগুলি আমাদের শরীরের পক্ষে সঠিক কি? এই প্রশ্নই সর্ব প্রথম উঁকি মারে রিম্পার মনে। আর সেখান থেকেই জন্ম ‘ঘোষ অ্যান্ড ডেয়ারি’র।

ব্যবসায়ী রিম্পা ঘোষ

ব্যবসায়ী রিম্পা ঘোষ

সংগৃহীত প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২৩ ১৩:৪১
Share: Save:

আজকাল প্রায় সব মানুষই কম বেশি শারীরিক সমস্যায় ভোগেন। কর্মজগতে যে হারে চাপ বাড়ছে, এবং বাড়ির কাজের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে খাওয়াদাওয়াও যে খুব একটা নিয়ম মেনে হয় না, তা বলাই বাহুল্য। তা ছাড়া এখন মানুষের হাতে সময় বড়ই কম। কম সময়ে দ্রুত রান্নার জন্য বাজার চলতি একাধিক দ্রব্য চলে এসেছে। প্রযুক্তিও এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি উন্নত। যেমন মশলা বাটার জন্য এখন আর শিল নোড়ার প্রয়োজন হয় না। মিক্সার গ্রাইন্ডারেই তা বেটে নেওয়া যায়। এখন তো আবার রেডিমেড মশলাও পাওয়া যায়। আসলে এখন সব কিছুই অনেক বেশি সহজলভ্য। তাই সময় এবং শ্রম দুই-ই বাঁচাতে মানুষ বেছে নিচ্ছেন এই সহজলভ্য সামগ্রীকেই। তবে এই জিনিসগুলি আমাদের শরীরের পক্ষে সঠিক কি? এই প্রশ্নই সর্ব প্রথম উঁকি মারে রিম্পার মনে। আর সেখান থেকেই জন্ম ‘ঘোষ অ্যান্ড ডেয়ারি’র।

রিম্পা ঘোষ। জলপাইগুড়ি জেলার এক ছোট্ট শহরের মেয়ে। ছোট থেকেই বাড়ির তৈরি গাওয়া ঘি খেয়ে বেড়ে ওঠা। ২০০৯ সালে সর্বপ্রথম পড়াশোনার সূত্রে এবং পরবর্তী কালে কর্মসূত্রে তাঁর কলকাতায় আসা। করোনা নামক ভয়াবহ অতিমারি যে আমাদের সকলের জীবনই বদলে দিয়েছিল, সে কথা কারওরই অজানা নয়। আর এই অতিমারির মধ্যেই বড় বদল ঘটে রিম্পার জীবনেও। গোটা রাজ্য জুড়ে যখন লকডাউন পরিস্থিতি, সেই সময়ে খাওয়া দাওয়ার ক্ষেত্রে রিম্পার একমাত্র সঙ্গী ছিল ঘি। কারণ তখন বাজার, দোকানপাট প্রায় সমস্তই বন্ধ। তাই বাড়িতে ভাত আর আলু সেদ্ধ খেয়ে অনেকেই দিন কাটিয়েছেন। আর গরম ভাতে একটু ঘি হলে কি আর অন্য কিছু লাগে!

রিম্পা ঘোষ

রিম্পা ঘোষ

কিন্তু দেশ জুড়ে যখন সকলেই ঘরবন্দি, তখন বাড়ি থেকে গাওয়া ঘি আসবে কী করে! কলকাতার বাড়িতে মজুত গাওয়া ঘি শেষ হতে এক প্রকার বাধ্য হয়েই রিম্পাকে বেছে নিতে হয় বাজারের নামী সংস্থার ঘি। তবে সেই ঘি খেয়ে পেট ভরলেও মন ভরেনি রিম্পার। সেই সময়ে ১০ দিনে মোট ৪টি সংস্থার ঘি কিনে ব্যবহার করেন রিম্পা। কিন্তু কোনওটিই তাঁর মন জিততে পারেনি। সেই সময়ে বাড়ির ঘি ও বাজারের নামকরা সংস্থার ঘি খেয়ে তফাৎ বুঝতে পারেন তিনি। রিম্পার কথায়, “বাড়ির ঘি আর বাজারের ঘি-র মধ্যে পার্থক্য হল কৃত্রিম রং, বনস্পতি এবং কৃত্রিম গন্ধ। বাড়িতে বানানো ঘি-তে কিন্তু এই ৩টির কোনওটিই ব্যবহার করা হয় না। আর সেই কারণেই বাড়ির বানানো ঘি খেলে কোনও রকম শারীরিক সমস্যাও হয় না। বদহজম, অম্বলের মতো দৈনন্দিন সমস্যা এড়িয়ে চলা যায়।” প্রসঙ্গত, বাজারের ঘি খেয়ে যে পরিচিত কিছু মানুষও এই শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন, তা খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছিলেন রিম্পা। আর তার পরেই তাঁদের বাড়ির তৈরি ঘি চেখে দেখার পরামর্শ দেন। এর পরে সেই সমস্ত পরিচিতদের কাছ থেকে যে প্রতিক্রিয়া তিনি পেয়েছেন, তা কোনও দিন ভোলার নয়। কারণ সেখান থেকেই যাত্রা শুরু হয় ‘ঘোষ অ্যান্ড ডেয়ারি’র। অর্থাৎ পারিপার্শ্বিক প্রতিক্রিয়া থেকেই ঘি তৈরির স্বপ্ন দেখা শুরু রিম্পার।

ছোট থেকেই দেশের এবং দশের জন্য কিছু করার ইচ্ছে ছিল রিম্পার। আর তার পরেই তৈরি হল ঘোষ অ্যান্ড ডেয়ারি। তবে শুরুটা ঘি দিয়ে হলেও, পরবর্তী কালে ড্রাই ফ্রুটসও সকলের কাছে অত্যন্ত স্বল্প দামে পৌঁছে দেওয়া শুরু করেন রিম্পা। আর এ ভাবেই ঘরে ঘরে ঢুকে পড়া শুরু ‘ঘোষ অ্যান্ড ডেয়ারি’র যাবতীয় জিনিসের।

শুরুটা কঠিন হলেও ধীরে ধীরে বেড়েছে রিম্পার ব্যবসা। সঙ্গী মানুষের ভালবাসা। তাঁর লক্ষ্য আগামী দিনে নিজের ব্র্যান্ডকে দেশের মধ্যে অন্যতম সেরা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করা। তবে আরও অনেকটা পথ চলা বাকি। সেই লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলেছেন রিম্পা ঘোষ

আরও অপরাজিতাদের গল্প জানতে ক্লিক করুন —অপরাজিতা ২০২৩


অন্য বিষয়গুলি:

Inspirational story Women Entrepreneur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy