লেখকের জীবদ্দশায় কোনও দিনও প্রকাশিত হয়নি। প্রায় ৮০ বছর পরও হয়তো শার্লক হোমসকে নিয়ে আর্থার কোনান ডয়েলের লেখা গল্পটির কথা কেউ জানতে পারত না যদি না অন্য জিনিসপত্র খুঁজতে গিয়ে চিলেকোঠার এক কোণ থেকে তা বেরিয়ে পড়ত।
১৯০২ সালের বন্যায় স্কটল্যান্ডের সেলকির্কের একটি কাঠের সেতু ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। ১৯০৪ সালে নতুন সেতু গড়ার জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা তিন দিনের একটি কর্মসূচির আয়োজন করেন। কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে স্থানীয়দের লেখা ছোট গল্পের একটি সংকলন বাজারে বিক্রি করা হয়। যাতে সেই অর্থ দিয়ে সেতু তৈরি করা সম্ভব হয়।
সেলকির্কে প্রায়ই ঘুরতে আসতেন কোনান ডয়েল। সেতু তৈরি করার জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের এমন পরিকল্পনার কথা জানতে পেরে ১৩০০ শব্দের একটি ছোট গল্প লিখে ফেলেন ডয়েল। ওয়াটসনকে সঙ্গে নিয়ে শার্লক হোমস সেলকির্কে বেড়াতে আসছেন এই ছিল সেই ছোট গল্পের বিষয়বস্তু। সেই ছোট গল্পটিই জায়গা পেয়েছে সেলকির্কের বাসিন্দাদের লেখা ছোট গল্পের সংকলনে। গোটা গল্প সংকলনটি আগামিকাল থেকে ক্রস কিজ সেলকির্ক পপ-আপ কমিউনিটি মিউজিয়ামে সাধারণ মানুষকে দেখানোর জন্য রাখা হবে।
কিন্তু এত বছর বাদে ওয়াল্টার এলিয়ট নামে বছর আশির এক ঐতিহাসিক যদি তাঁর চিলেকোঠা থেকে বইটির একটি কপি খুঁজে না পেতেন, তা হলে এত কিছুই হতো না। এলিয়ট জানিয়েছেন, আটচল্লিশ পাতার বইটির একটি কপি প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে তাঁকে এক বন্ধু উপহার দিয়েছিলেন। সযত্নে সেই বই তখন তুলে রেখেছিলেন তিনি। সম্প্রতি হঠাৎ করেই এক দিন অন্য কাগজপত্র খুঁজতে গিয়ে চিলেকোঠার এক কোণ থেকে বেরিয়ে পড়ে বন্ধুর দেওয়া সেই বই।
বাদামি কাগজে মোড়া দশ ইঞ্চি লম্বা এবং তিন ইঞ্চি চওড়া সেই বইটি কী দামে বিক্রি হয়েছিল, তা অবশ্য এই বয়সে আর মনে করতে পারলেন না বৃদ্ধ এলিয়ট। তাঁর কথায়, “এমন বই সাধারণত ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয় বা বিক্রি করে দেওয়া হয়। কিন্তু এত বছর ধরে নিজের অজান্তেই আমার পরিবারের সঙ্গেই রয়ে গিয়েছে এই বই।”
ভাগ্যিস এত বছর ধরে এলিয়টের বাড়ির চিলেকোঠার কোণে পড়ে ছিল কোনান ডয়েলের শার্লক হোমস। না হলে তো ডয়েলের হাজারো ভক্ত জানতেই পারতেন না অপ্রকাশিত এই বইয়ের কথা।