ফতোয়া উপেক্ষা করে গাড়ি চালিয়েছিলেন সৌদি আরবের দুই মহিলা। সেই ‘অপরাধে’ মাসখানেক আটকও থাকতে হয়েছে তাঁদের। এ বার ওই দু’জনের মামলা সন্ত্রাসদমন আদালতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিল সরকার। রিয়াধের ওই সন্ত্রাসদমন আদালতে অবশ্য এর আগেও একাধিক মানবাধিকার কর্মী এবং সরকারের সমালোচকের বিচার হয়েছে। তাঁদের দীর্ঘদিন হাজত বাসের নিদানও দিয়েছে সেই আদালত। ওই দুই মহিলার যে এই পরিণতি হতে চলেছে, তা নিয়ে কয়েক দিন ধরেই জল্পনা চলছিল।
১৯৫৭ সাল থেকে মহিলাদের গাড়ি চালানোর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে সৌদি আরবে। নানা সময় এখানকার মহিলারা সেই নিয়মের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি কিছুই। এখনও সেই নিয়ম ভাঙলে দোষীদের কড়া শাস্তি পেতে হয় সৌদি মহিলাদের। সম্প্রতি লৌজেন আল-হাতলৌল (২৫) এবং মায়সা আল-আমৌদি (৩৩) নামে দুই মহিলা গাড়ি চালিয়ে সেই নিয়ম ভাঙেন। গত ১ ডিসেম্বর থেকে তাঁদের দু’জনকে আটকে রেখেছে পুলিশ। এ পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে যে সব মহিলা সৌদি আরবে গাড়ি চালিয়েছেন, তাঁদেরও এত দিন আটক থাকার
কথা মনে করতে পারছেন না কেউ। এই অপরাধে বাকি কারও মামলা সন্ত্রাসদমন আদালত পর্যন্ত গড়ায়ওনি। লৌজেন এবং মায়সা অবশ্যই ব্যতিক্রম।
কিন্তু বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন অনেকেই। তবে লৌজেন এবং মায়সার ঘনিষ্ঠ কয়েক জন জানাচ্ছেন, শুধু গাড়ি চালানোই নয়। মহিলাদের উপর জারি নানা নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে এর আগে রুখে দাঁড়িয়েছেন ওই দু’জন। আর সেই জন্যই সরকারের নজরে তাঁরা অনেক দিন ধরেই ছিলেন। সম্প্রতি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট টুইটারে মহিলাদের গাড়ি চালানোয় নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সরব হয়েছিলেন তাঁরা। আটক হওয়ার আগে পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন লাখ লোক ‘ফলো’ করতেন সেই পেজকে। লৌজেন এবং মায়সা ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, সোশ্যাল মিডিয়ায় সরকার-বিরোধী জনমত গড়ে তোলার খেসারত হিসেবেই ওই দু’জনের বিরুদ্ধে এত কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হল। তবে এই মামলা অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার আবেদন জানান লৌজেনদের আইনজীবী।