শার্লি হামলার দায় নিল আল কায়দাই

‘শার্লি এবদো’র দফতরে হামলার দায় স্বীকার করে নিল আল কায়দার ইয়েমেন শাখা। ইন্টারনেটে ১১ মিনিটের একটি ভিডিও প্রকাশ করে আল কায়দার এক শীর্ষ নেতা নসর আল-আনসি সগর্বে ঘোষণা করেছেন, “মহম্মদের সম্মানের খাতিরেই এই প্রতিশোধ।”

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

প্যারিস শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:১১
Share:

‘শার্লি এবদো’ কেনার ভিড়। বুধবার প্যারিসে। ছবি: এএফপি।

‘শার্লি এবদো’র দফতরে হামলার দায় স্বীকার করে নিল আল কায়দার ইয়েমেন শাখা। ইন্টারনেটে ১১ মিনিটের একটি ভিডিও প্রকাশ করে আল কায়দার এক শীর্ষ নেতা নসর আল-আনসি সগর্বে ঘোষণা করেছেন, “মহম্মদের সম্মানের খাতিরেই এই প্রতিশোধ।”

Advertisement

আনসি সেই ভিডিও-য় হুমকি দিয়েছেন, আরও অনেক শোক আর সন্ত্রাস ফ্রান্সের জন্য অপেক্ষা করে রয়েছে। জানিয়েছেন, গোটা পরিকল্পনাটাই ইয়েমেন শাখার এবং প্রয়োজনীয় অর্থের ব্যবস্থাও তারা নিজেরাই করেছিল। ওই হামলা যারা চালিয়েছিল সেই বন্দুকবাজদের তিনি এ দিন ‘ইসলাম ধর্মের নায়ক’-এর শিরোপাও দিয়েছেন।

যখন ইন্টারনেটে আনসির হুমকি-ভিডিও চলছে, তখনই ফ্রান্সের রাস্তায় চোখে পড়েছে লম্বা লাইন। বুধবার ভোর থেকেই ফ্রান্সের প্রতিটি কাগজের দোকানের বাইরে চোখে পড়েছে এই অচেনা ছবি। এই অপেক্ষা ‘শার্লি এবদো’র জন্যেই। জঙ্গি হামলা সামলে ওঠার পরে বুধবারই বাজারে এল তাদের সাম্প্রতিক সংস্করণ। মহম্মদের চোখে এক ফোঁটা জল। হাতে ধরে থাকা কাগজে লেখা“জ্য স্যুই শার্লি (আমিও শার্লি)।” আর শিরোনামের নীচেই লেখা, “তু এ পার্দোন (সব ক্ষমা করলাম)।” এই ব্যঙ্গচিত্রটি এঁকেছেন লুজ ওরফে রেনল লুজিয়ের। সহকর্মীদের রক্তমাখা চেয়ারের পাশে বসে কাজ করাটা যে সহজ ছিল না, স্বীকার করছেন লুজ নিজেই। বিশেষ করে ‘সব ক্ষমা করলাম’ কথাটা লেখার সময়ে চোখে জল এসে গিয়েছিল তাঁর। কিন্তু জানতেন, উপযুক্ত জবাব দিতে হাতে তুলে নিতে হবে রং-তুলিই।

Advertisement

এই সংখ্যার আকাশছোঁয়া চাহিদা দেখে অভিভূত লুজ। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আসা আবেদনের ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এই সংস্করণটি ছাপা হবে অনেক বেশি। ৬০ হাজার গ্রাহক সংখ্যা হলেও এ বার ছ’টি ভাষায় অনুবাদ করে মোট ৩০ লক্ষ পত্রিকা ছাপার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু তাতেও যে কুলানো যাবে না সে কথা বোঝা গিয়েছে বুধবার সকালের মধ্যেই।

ফরাসি সাংবাদিক আগনে পোইরিয়ে কাগজের দোকান খোলার আগেই লম্বা লাইন দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন। তাঁর কথায়, “প্রথম কয়েক জন শার্লি পেলো। বাকিরা গেল অন্য দোকানে।” এক কাগজ-বিক্রেতা বললেন, “৪৫০ কপি রেখেছিলাম। ১৫ মিনিটের মধ্যে সব শেষ।” গার দ্যু নর-এর একটি দোকান থেকে পত্রিকাটি কেনার পরে জয়ের হাসি হেসে দাভিদ সুলো জানালেন, “এর আগে কখনও শার্লি কিনিনি। কিন্তু আজ এই সংস্করণটা কিনতেই হতো। মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সমর্থন জানাতে এটা করা খুব দরকার ছিল।” এক মাঝবয়সি মহিলা শুধু বলে চলেছেন, “এক টুকরো ইতিহাস কিনে ফেলেছি।” বেলা বাড়তেই দেখা গেল প্রায় সব কাগজের দোকানের বাইরে লিখে দেওয়া হয়েছে, “শার্লি এবদো: সব বিক্রি হয়ে গিয়েছে।”

শার্লির প্রধান সম্পাদক জেরার বিয়ার ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন, এই সংস্করণের আরও ২০ লক্ষ কপি ছাপা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement