বিমান থেকে নামল কফিন। এন্ডোভেনে বুধবার। ছবি: রয়টার্স
এক মুহূর্তের জন্য স্তব্ধ হয়ে গেল গোটা দেশ। শহরের ব্যস্ত রাস্তায় থেমে গেল গাড়ি। মাঝপথেই থমকে গেল ট্রেন। শিপোল বিমানবন্দরে কিছু ক্ষণের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হল বিমান ওঠানামাও। এন্ডোভেন বিমানবন্দরে তখন সদ্য পৌঁছেছে কফিনবন্দি ৫০টি দেহ!
বিমানবন্দরে আগে থেকেই হাজির ছিলেন নেদারল্যান্ডসের রাজারানি। ছিলেন প্রশাসনের কর্তারাও। তাঁদের সামনেই একে একে নামানো হল এমএইচ ১৭ বিমানের নিহত যাত্রীদের কফিনগুলি। সেখানে রাজা-রানির উপস্থিতিতেই সামরিক সম্মান দেওয়া হল নিহতদের। আগেই ঠিক ছিল, বুধবার রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হবে। তাই অর্ধনমিত ছিল জাতীয় পতাকা।
এমএইচ১৭-এর ২৯8 জনের মধ্যে ১৯৩ জনই যে ছিলেন ওলন্দাজ। তাই ইউক্রেনের রুশপন্থী জঙ্গিদের শর্ত মেনে সব দেহই পাঠানো হবে নেদারল্যান্ডসে। তার মধ্যে আজ প্রথম দফায় ৪০টি দেহ পাঠানো হয়েছে। নেদারল্যান্ডসের হিলভেরসাম শহরে শনাক্ত করা হবে দেহগুলি। তার পর পাঠানো হবে নিজের নিজের দেশে।
ওলন্দাজরা তাই তুলনামূলক ভাবে সৌভাগ্যবান। পাঁচ দিনের মাথায় যে দেশে ফিরল প্রিয়জনের দেহ। সম্প্রতি অনেকেই ফেটে পড়ছিলেন “যা যেটুকু হোক, দেহাবশেষ ফিরিয়ে দিন! শেষকৃত্যটা তো অন্তত হোক!” একই দাবি ছিল মালয়েশিয়া-সহ অন্যান্য দেশেরও। কিন্তু কবে তারা প্রিয়জনের দেহ হাতে পাবে, তা নিয়ে সন্দিহান নেদারল্যান্ডসের কর্তারাই। আদৌ চেনার মতো অবস্থায় রয়েছে কি না দেহগুলি, তা আশঙ্কা সব মহলেরই। সোমবার এক কর্তা বলেছিলেন, ১৬টি দেহের খোঁজ মিলছে না। আজ সে ধন্দ উস্কে দিয়েছে এক মালয়েশীয় কর্তার মন্তব্য “২৮২টি দেহাবশেষ ছাড়াও জড়ো করা হয়েছে ৮৭টি দেহাংশ!”
এ দিকে, বিমানের ব্ল্যাক বক্স হাতে পেয়েও সন্দিহান গোয়েন্দারা। আদৌ তা থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু জানা যাবে কি না, সে নিয়ে তাঁরা ধন্দে। কারণ, ক্ষেপণাস্ত্র হানা কোথা থেকে ঘটেছিল, তা ব্ল্যাক বক্স থেকে জানা সম্ভব নয়। বাকি রইল বিমানে কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল কি না, তা জানা। ঘটনাস্থল ঘুরে বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত, এটা নিছক দুর্ঘটনা নয়। ব্রিটেনের হ্যাম্পশায়ারে পৌঁছেছে ব্ল্যাক বক্সটি। নেদারল্যান্ডসের অনুরোধে ব্রিটিশ তদন্তকারী সংস্থা সেটি দেখবে।