দু’দিন আগেই মার্কিন বিদেশ সচিব জন কেরি জানিয়েছিলেন মালয়েশীয় বিমান এমএইচ-১৭ ভেঙে পড়ার পিছনে রাশিয়ারই হাত রয়েছে। তার যথেষ্ট প্রমাণও তাঁদের কাছে রয়েছে। কিন্তু আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যেই প্রায় একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে মার্কিন তদন্তকারীরা জানিয়ে দিলেন, গোটা ঘটনায় মস্কোর হাত থাকার তেমন প্রত্যক্ষ প্রমাণ তাঁদের হাতে নেই।
আমস্টারডাম থেকে মালয়েশিয়াগামী বোয়িং ৭৭৭ বিমানটি গত বৃহস্পতিবার পূর্ব ইউক্রেনের তোরেজে ভেঙে পড়ে। রুশপন্থী বিক্ষোভকারীরা ক্ষেপণাস্ত্র হানায় বিমানটিকে ধ্বংস করেছে বলে প্রথম থেকেই অভিযোগ উঠেছে। জঙ্গিদের ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে সাহায্য করার জন্য রাশিয়াকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিল আমেরিকা ও ইউক্রেন সরকার। ইউক্রেনের তথ্যগত নিরাপত্তা সংক্রান্ত ডিরেক্টর ভিটালি নাইডা আজ ফের জানিয়েছেন, রুশ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অত্যন্ত দক্ষ এক জন ব্যক্তিই সে দিন ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিলেন।
কিন্তু কিয়েভ সরকারের সঙ্গে আজ একমত হতে পারেনি ওয়াশিংটন। মার্কিন তদন্তকারীরা আজ জানিয়েছেন, বিমান ভেঙে পড়ার পিছনে পুতিনের হাত রয়েছে এমনটা তাঁরা এখনই বলতে পারছেন না। কারণ, রাশিয়া ইউক্রেনে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অস্ত্র জোগাচ্ছে ঠিকই। কিন্তু ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে মস্কো সে দিন বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সাহায্য করেছিল বলে প্রত্যক্ষ প্রমাণ গোয়েন্দাদের হাতে নেই। তাঁরা এমনটাও বলছেন, যাত্রিবাহী বিমানকে ইউক্রেন সেনার যুদ্ধ বিমান ভেবে হয়তো ভুল করেই এমএইচ-১৭ নামিয়ে ফেলেছিল জঙ্গিরা। কারণ ঘটনার আগে মোট ১২টি ইউক্রেনীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে নামিয়েছিল তারা। আজও পূর্ব ইউক্রেনে দু’টো বিমানে আঘাত হেনেছে জঙ্গিরা।
তবে বিমান ভেঙে পড়ার পিছনে রাশিয়ার নৈতিক দায় রয়েছে বলে মনে করছে আমেরিকা। কারণ, পূর্ব ইউক্রেনে চলতে থাকা রাজনৈতিক অশান্তির পিছনে রাশিয়ার প্রত্যক্ষ মদত রয়েছে। ঘটনার কয়েক সপ্তাহ আগে রাশিয়া আবার জঙ্গিদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেছিল বলেও খবর। এক অফিসার জানান, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে ইউক্রেন সরকারের পোস্ট করা ভিডিও এবং ছবিই তাঁদের তদন্তের মূল ভরসা। সেই তথ্যপ্রমাণ যতটুকু তাঁদের হাতে এসেছে, তাতে এখনই রাশিয়াকে পুরোপুরি দায়ী করা যাচ্ছে না। আরও কয়েক দিন তদন্ত না এগোলে গোটা ঘটনার পিছনে আদৌ রাশিয়ার প্রত্যক্ষ হাত আছে কি না, তা জানা যাবে না বলে জানিয়েছএন মার্কিন গোয়েন্দারা।