দিলখুশ রাজার ধন্যি দেশ, দানের জোয়ার সৌদি আরবে

খুশির বসন্ত সৌদি আরবে। রাজা খুশি অভিষেকে। আর প্রজারা উত্‌সবের জোয়ারে ভাসছেন রাজার দান-খয়রাতিতে। জানুয়ারিতেই অভিষেক হয়েছে। এর মধ্যেই দানছত্র খুলে বসেছেন সৌদি আরবের নয়া রাজা সলমন। অন্দরের খবর, অন্তত ৩২০০ কোটি ডলার তিনি বিলোতে চলেছেন দেশের ‘স্বার্থে’।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

রিয়াধ শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৫ ০১:১৩
Share:

খুশির বসন্ত সৌদি আরবে। রাজা খুশি অভিষেকে। আর প্রজারা উত্‌সবের জোয়ারে ভাসছেন রাজার দান-খয়রাতিতে। জানুয়ারিতেই অভিষেক হয়েছে। এর মধ্যেই দানছত্র খুলে বসেছেন সৌদি আরবের নয়া রাজা সলমন। অন্দরের খবর, অন্তত ৩২০০ কোটি ডলার তিনি বিলোতে চলেছেন দেশের ‘স্বার্থে’। আমেরিকা থেকে শুরু করে ইউরোপের তাবড় দেশ নাস্তানাবুদ নিজেদের বার্ষিক বাজেট পরিকল্পনায়। ঠিক তখনই সৌদি রাজার এই অভিনব চমক। চোখ কপালে উঠেছে বিশ্বের একটা বড় অংশের। খয়রাতির পরিমাণ যে অর্থনৈতিক ভাবে আফ্রিকার সব চেয়ে এগিয়ে থাকা দেশ নাইজেরিয়ার বার্ষিক বাজেটকেও ছাপিয়ে যাবে!

Advertisement

গত মাসেই সৌদি সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকার পান প্রয়াত রাজা আবদুল্লার সত্‌ ভাই সলমন। দ্রুত শুরু হয় ক্ষমতা জাহির। কালবিলম্ব না করেই নতুন রাজা ভেঙে ফেলেন বেশ কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠান। ছাঁটাই করা হয় বেশ কিছু মন্ত্রীকেও। তাতে দেশবাসীর তরফে তেমন প্রতিক্রিয়া না মিললেও, রাজার খয়রাতি ঘোষণায় উত্তেজিত রিয়াধ।

সরকারি সূত্রের খবর, সরকারি কর্মীরা তো বটেই, রাজার খয়রাতি পেতে চলেছে বেশ কিছু ক্লাব, সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। পেনশনভোগী থেকে শুরু করে ছাত্র-ছাত্রী, সেনার কপালেও জুটছে রাজার দাক্ষিণ্য। তালিকায় রয়েছে বাছাই করা কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও।

Advertisement

খয়রাতি প্রকল্প আগামী বারো মাস জুড়ে চললেও, দেশের প্রায় ৩০ লক্ষ সরকারি কর্মী অবশ্য এ মাসের শেষেই রাজার বোনাস পেতে চলেছেন বলে সূত্রের খবর। তাই আপাতত রিয়াধের রাস্তাঘাটে রাজনীতি বাদ, মুখে-মুখে শুধুই বাড়তি খরচের পরিকল্পনা। কেউ তড়িঘড়ি একখানা দামি মোবাইল ফোন কিনতে চাইছেন। কেউ চাইছেন বউয়ের জন্য সোনার পুরো একটা সেট। বিশ্বভ্রমণের ছকও তৈরি করে ফেলেছেন একাংশ। তেল বিক্রির অর্থে সৌদি রাজারা বরাবরই বিলাসে বিশ্বাসী। রাজার খেয়ালে এ বার সেই পথেই প্রজারা।

তবু একটা অংশ কিন্তু এরই মধ্যে অশনি সঙ্কেত দেখছে। অর্থনীতিবিদদের কথায়, সৌদির নব্বই শতাংশ আয় তেল বিক্রি থেকেই। ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমেছে। তার জেরে দেশের আয় কমেছে অন্তত ২০ শতাংশ। তার পর এই খয়রাতির কারণে চলতি বছরে অন্তত ৬৭০০ কোটি ডলার ঘাটতির আশঙ্কা করছে স্থানীয় বণিক মহলের একাংশ।

তবু জোড়া বেতনের খবরে উচ্ছ্বাস চেপে রাখতে পারছেন না সরকারি কর্মীরা। রেশ মিলছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও। এই সুযোগে দ্বিতীয় বা তৃতীয় বিয়ে সেরে ফেলার কথাও ভাবছেন। কেউ ভাবছেন এ বারই সব ঋণ মিটিয়ে ফেলবেন। রাজার এই ধরনের দান-খয়রাতি সৌদিতে অবশ্য এ বারই প্রথম নয়। ২০০৫-এ ক্ষমতায় আসার পর সরকার্রী কর্মীদের ১৫ শতাংশ বেতন বাড়িয়েছিলেন রাজা আবদুল্লা। ২০১১-য় হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ফিরে রাতারাতি এক মাসের বাড়তি বেতন ঘোষণা করেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement