গাঁটছড়া বাঁধবেন ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত ২ বন্ধু

প্রথম দেখা তিন বছর বয়সে। তার পর এক সঙ্গে বড় হওয়া, জীবনের চেনা বাধাগুলো পেরিয়ে যাওয়া। দেখতে দেখতে এ ভাবেই একসঙ্গে তিরিশটা বছর কাটিয়ে দিয়েছেন টেক্সাসের অস্টিন ওয়েইন আন্ডারউড এবং জেসিকা স্মিথ। এ বার তাই ‘ডাউন সিনড্রোম’-এ আক্রান্ত দুই বন্ধুর ইচ্ছা, বাকি জীবনটাও কাটুক একসঙ্গে। সেই মতো বিয়ের তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে দুই পরিবার।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ডালাস শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৪ ০১:৪৯
Share:

প্রথম দেখা তিন বছর বয়সে। তার পর এক সঙ্গে বড় হওয়া, জীবনের চেনা বাধাগুলো পেরিয়ে যাওয়া। দেখতে দেখতে এ ভাবেই একসঙ্গে তিরিশটা বছর কাটিয়ে দিয়েছেন টেক্সাসের অস্টিন ওয়েইন আন্ডারউড এবং জেসিকা স্মিথ। এ বার তাই ‘ডাউন সিনড্রোম’-এ আক্রান্ত দুই বন্ধুর ইচ্ছা, বাকি জীবনটাও কাটুক একসঙ্গে। সেই মতো বিয়ের তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে দুই পরিবার।

Advertisement

অস্টিন-জেসিকার কাহিনি শুনলে প্রথমে গল্পকথা বলে বিভ্রম হতে পারে। যতই হোক, বর-কনে দু’জনেই ডাউন সিনড্রোমের শিকার। কী ভাবে একসঙ্গে থাকবেন দু’জনে? কী ভাবেই বা একে অপরের সমস্যার সমাধান করবেন? আদৌ কি স্বাভাবিক দাম্পত্য সম্পর্ক গড়ে উঠবে অস্টিন-জেসিকার মধ্যে? প্রশ্নগুলোর উত্তর এখনই হয়তো মিলবে না। তবে এই বিয়ের ব্যাপারে যথেষ্ট আশাবাদী পরিবার-পরিজন-বন্ধুবান্ধবরা। তাঁদের প্রত্যেকেরই মত, অস্টিন এবং জেসিকা ভীষণ ভাল বন্ধু। সেই কোন ছোটবেলা থেকে একে অপরের সঙ্গে রয়েছেন তাঁরা। এই বোঝাপড়াটাই তাঁদের সম্পর্কের ‘ইউএসপি’।

অস্টিন এবং জেসিকা নিজেরাও সে কথা মানেন। নিজেদের বন্ধুত্বটাকে আর পাঁচটা স্বাভাবিক সম্পর্কের থেকে আলাদা ভাবেন না। আর তাই বোধহয় জেসিকাকে বিয়ের প্রস্তাবও দিয়েছিলেন প্রথা মেনে। ২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসের সেই সন্ধের স্মৃতিটা জেসিকার কাছে খুবই দামি। মাটিতে হাঁটু গেড়ে বসে হিরের আংটি হাতে নিয়ে জেসিকাকে বিয়ের প্রস্তাব দিচ্ছেন অস্টিন। ঠিক যেমনটা সচরাচর হয়ে থাকে।

Advertisement

আসলে ছোটবেলা থেকেই নিজেদের বাকিদের মতোই ভাবতে শিখেছেন দুই বন্ধু। অস্টিনের মায়ের বয়ানে, “আমরা ওকে প্রথমে এক জন সাধারণ মানুষ হিসেবেই ভেবেছি। তার পর ওর প্রতিবন্ধকতা নিয়ে চিন্তা করেছি। ও সব সময়ই স্বাভাবিক জীবন কাটিয়েছে।” আরও জানালেন, ছেলেকে সাধারণ স্কুলে পাঠাতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। এমনকী, একটি কলেজের সন্ধানও পেয়েছেন যেখানে ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্তদের ভর্তি নেওয়া হয়। পুরোটাই ছেলেকে স্বাভাবিক জীবন দেওয়ার তাগিদে। জেসিকার মা-ও এ রকম জীবনই দিতে চেষ্টা করছিলেন মেয়েকে। এক ‘সাপোর্ট গ্রুপের’(বিশেষ গোষ্ঠী যাঁরা প্রতিবন্ধী মানুষদের সাহায্য করে থাকেন) মাধ্যমে তখনই তাঁর আলাপ হয় অস্টিনের মায়ের সঙ্গে। সেই সূত্রেই অস্টিন-জেসিকার বন্ধুত্ব।

তার পর কেটে গিয়েছে তিন দশক। এই গোটা সময়টা দুই পরিবার একে অপরের পাশে থেকেছেন। এ বার সেই সম্পর্কটাকে আত্মীয়তার পরিচিতি দেওয়ার পালা।

খুশিতে ডগমগ জেসিকা-অস্টিন কখনও বাবা-মায়ের সঙ্গে বিয়ের প্রস্তুতি দেখছেন, কখনও বা বিয়ের জামাকাপড়ের খুঁটিনাটি নিয়ে তদ্বির করছেন। এর মধ্যে সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে জুতো। দুই বন্ধুই তাঁদের ছোট এবং চওড়া পায়ের জন্য বিশেষ ধরনের জুতো ব্যবহার করেন। কিন্তু বিয়ের দিন কি সে সব মানায়? অতএব বিশেষ জুতো বানাতে ডালাসের এক দোকানে হাজিরা দিতে হয়েছে অস্টিন-জেসিকাকে। সে জুতো পরতে গিয়ে সমস্যাও হচ্ছে দুই বন্ধুর।

কিন্তু কী আর করা? বড়সড় সমস্যার মোকাবিলা করে অভ্যস্ত ছেলেবেলার দুই বন্ধু এ টুকু ঝক্কি সহজেই নিয়ে নেবেন বলে বিশ্বাস পরিজনদের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement