International News

চাইছি আমেরিকার বন্ধুত্ব, ট্রাম্পকে চিঠি চিনা প্রেসিডেন্টের

চিন ও আমেরিকার ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিদলের মধ্যে যখন বৈঠক চলছে ওয়াশিংটনে, তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি লিখে এই আর্জি জানালেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৩:২৬
Share:

ফের বন্ধুত্বের পথে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। - ফাইল ছবি।

আমেরিকার বন্ধুত্ব চাইলেন চিনা প্রেসিডেন্ট। চাইলেন, দু’দেশের মধ্যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হয়ে যায় ব্যবসা সংক্রান্ত বকেয়া চুক্তিগুলি।

Advertisement

চিন ও আমেরিকার ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিদলের মধ্যে যখন বৈঠক চলছে ওয়াশিংটনে, তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি লিখে এই আর্জি জানালেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং।

দু’দেশের এখনকার সম্পর্ককে ‘গুরুত্বপূর্ণ মোড়’ আখ্যা দিয়ে শি লিখেছেন, ‘‘এই সম্পর্ককে জোরদার করতে দু’দেশের মধ্যে ব্যবসা সংক্রান্ত চুক্তিগুলি তাড়াতাড়ি সেরে ফেলা হোক। তা হলেই দু’দেশের মানুষ ও বিশ্ববাসীর কাছে সদর্থক বার্তা পৌঁছে দেওয়া যাবে। সেটা যত তাড়াতাড়ি হয়, ততই মঙ্গল।’’ চিঠি পেয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট খুশি হয়েছেন বলে জানিয়েছেন চিনা প্রতিনিধিদলের সদস্যরা।

Advertisement

আরও পড়ুন- হুয়েই-এর বিরুদ্ধে ‘ট্রেড সিক্রেট’ চুরির অভিযোগ, চিন-মার্কিন সম্পর্কে টানাপড়েন

আরও পড়ুন- ভারতে মার্কিন হুইস্কির এত শুল্ক কেন? অসন্তষ্ট ট্রাম্প​

গত সেপ্টেম্বরে আমেরিকায় ঢোকা চিনা পণ্যসামগ্রীর উপর শুল্ক বাড়িয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। হুমকি দেন, নতুন বছরের প্রথম দিনটি থেকেই ওই শুল্কের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দেবেন। তার ফলে, চিন্তায় পড়ে যান চিনা শিল্পপতি, ব্যবসায়ীরা। সম্পর্কের টানাপড়েন শুরু হয় দু’দেশের মধ্যে। এ সবের মধ্যেই গত ডিসেম্বরে আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেসে জি-২০ জোটের দেশগুলির বৈঠকের ফাঁকে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলাদা ভাবে কথা হয় চিনা প্রেসিডেন্টের। তাতে দু’পক্ষই রফায় রাজি হয়। ঠিক হয়, নতুন বছরের প্রথম দিনটি থেকেই আমেরিকায় ঢোকা চিনা পণ্যের উপর আর নতুন করে শুল্ক বসাবে না ট্রাম্প প্রশাসন। আরও বেশি পরিমাণে, আরও বেশি রকমের চিনা পণ্যকে আমেরিকায় ঢুকতে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে। তবে তার জন্য মার্কিন শিল্প ও তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলিকে চিনে ব্যবসা করতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে বেজিংকে। তাদের মেধাসত্ত্ব যাতে চুরি না হয়, তাদের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা যাতে ক্ষুণ্ণ না হয়, সেটাও বেজিংকে নিশ্চিত করতে হবে। এও ঠিক হয়, বেজিং এই সব শর্ত মেনে চলতে না পারলে আগামী ১ মার্চ থেকেই মার্কিন মুলুকে ঢোকা চিনা পণ্যসামগ্রীর উপর বাড়তি শুল্ক বসাবে ট্রাম্প সরকার।

তার আগেই ট্রাম্পকে লেখা চিঠিতে ‘যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই’ বার্তা দিলেন শি। জানালেন, তিনি চাইছেন দু’দেশের নিখাদ বন্ধুত্ব। দু’দেশের মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাস ও আস্থার শক্তপোক্ত সম্পর্ক।

বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে শির লেখা সেই চিঠিটি পড়ে শোনান চিনা প্রতিনিধিদলের এক সদস্য।

চিঠিতে চিনা প্রেসিডেন্ট বুয়েনস আইরেসে গত মাসের বৈঠকে তাঁদের মধ্যে কী কী কথা হয়েছিল, তাও মনে করিয়ে দিয়েছেন ট্রাম্পকে। লিখেছেন, ‘‘গত মাসে আর্জেন্টিনায় আমাদের বৈঠকটা খুব ফলপ্রসূ হয়েছে। যেখানে আমরা বোঝাপড়া, আদানপ্রদান, সহযোগিতা ও স্থায়িত্বের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে সম্মত হয়েছিলাম। তার আগেও অবশ্য আমরা একে অন্যের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছি। দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪০তম বার্ষিকী উদ্‌যাপনে একে অন্যকে অভিনন্দন জানিয়ে চিঠি লিখেছি, চিঠির জবাব দিয়েছি।’’

তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এ বারও দু’দেশের ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিদলের বৈঠক ফলপ্রসূ হবে, এই আশা প্রকাশ করে চিনা প্রেসিডেন্ট লিখেছেন, ‘‘আশা করব, এই বৈঠকে দু’পক্ষই একে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে। আলোচনা হবে ভারসাম্য বজায় রেখে। চুক্তি স্বাক্ষরে বিলম্ব হবে না। আর সেই চুক্তি স্বাক্ষরের আগে দু’পক্ষ আরও এক বার নিজেদের মধ্যে বৈঠকে বসবে। আর যাতে দু’পক্ষের স্বার্থই অক্ষুণ্ণ থাকে, সে দিকে লক্ষ্য রেখেই চুক্তিটা হবে।’’

আর্জেন্টিনার বৈঠকে ট্রাম্প চেয়েছিলেন আমেরিকার কাছ থেকে আরও বেশি পরিমাণে কৃষি পণ্য কিনুক চিন। চিঠিতে শি লিখেছেন, ‘‘সেই লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই কয়েকটি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। চিনা প্রতিনিধিদলের সদস্যরা সে সব আপনাকে (ট্রাম্প) জানাবেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement