জামাত প্রধান হাফিজ সইদ। ছবি: সংগৃহীত।
গৃহবন্দি অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার পরই কাশ্মীর নিয়ে ফের সুর চড়ালেন জামাত প্রধান হাফিজ সইদ। সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেছেন, কাশ্মীরিদের আজাদির জন্য পাকিস্তানের সমস্ত মানুষকে একত্রিত করবেন।
কাশ্মীর নিয়ে যে তাঁকে তোনও ভাবেই দমানো যাবে না, সে কথাও জানিয়েছেন হাফিজ। সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে মদত দেওয়ার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে পাকিস্তানকে ব্যবস্থা নিতে বলেছিল আমেরিকা। কিন্তু পাকিস্তান বরাবরই বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছিল। অবশেষে চাপের মুখে পড়ে হাফিজকে গৃহবন্দি করে পাক সরকার। প্রায় ১০ মাস গৃহবন্দি অবস্থায় ছিলেন হাফিজ। মুক্তি পাওয়ার পরই কেক কেটে দিনটি উদ্যাপন করেন। বলেন, “কাশ্মীরিদের হয়ে বলার জন্য আমার কণ্ঠরোধ করতেই ১০ মাস গৃহবন্দি করে রাখা হয়।” কিন্তু তিনি যে কাশ্মীরের আজাদির জন্য সব রকম ভাবে প্রস্তুত সেই হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: সইদের মুক্তি নিয়ে ফের তোপ দিল্লির
পাশাপাশি তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগই প্রমাণিত হয়নি। ভারত বার বারই আমার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে এসেছে। কিন্তু লাহৌর হাইকোর্টের রিভিউ বোর্ডের সিদ্ধান্ত ফের প্রমাণ করে দিল যে আমি নির্দোষ।” হাফিজ নিয়ে ভারত আন্তর্জাতিক মহলে বার বার সরব হয়েছে। মুম্বই হামলার সঙ্গে যে হাফিজ জড়িত ছিল সেই তথ্য প্রমাণ পাকিস্তান সরকারের হাতে তুলেও দিয়েছিল নয়াদিল্লি। কিন্তু পাকিস্তান কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি হাফিজের বিরুদ্ধে। উল্টে ভারতের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলার কথা বলেছে।
আরও পড়ুন: বাঁচতে সীমান্ত পেরিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় গেলেন উত্তর কোরীয় সেনা!
হাফিজ বলেন, “ভারতের অনুরোধে আমেরিকা চাপ সৃষ্টি করেছে পাকিস্তানের উপর। আরে সে কারণেই পাক সরকার আমাকে গৃহবন্দি করেছে।” জউহর শহরে হাফিজের বাড়ির সামনে প্রচুর সমর্থক ভিড় জমিয়েছিলেন। জামাতের মুখপাত্র আহমেদ নাদিম পিটিআইকে জানান, নেতার মুক্তিকে খুব খুশি তাঁরা।
গত ৩১ জানুয়ারি হাফিজ সইদ এবং তাঁর চার সঙ্গী— আবদুল্লা উবেইদ, মালিক জাফর ইকবাল, আব্দুল রহমান আবিদ এবং কাজী কাশিফ হুসেইন-কে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আটক করে পঞ্জাব সরকার। পরে জননিরাপত্তা আইন প্রয়োগ করে দু’দফায় সইদের গৃহবন্দিত্বের মেয়াদ বাড়ানো হয়। সেই মেয়াদও শেষ হয়ে যায়। তাই পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের সরকার লাহৌর হাইকোর্টের বিচারপতিদের নিয়ে গঠিত বিচারবিভাগীয় বোর্ডের দ্বারস্থ হয়। আরও তিন মাসের জন্য হাফিজ সইদের বন্দিত্বের মেয়াদ বাড়ানোর আর্জি জানানো হয় সেখানে। কিন্তু বিচারপতিরা প্রাদেশিক সরকারের আর্জি খারিজ করে দেন। যে সব অভিযোগে হাফিজ সইদকে বন্দি করা হয়েছে, তার স্বপক্ষে পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণ নেই বলে বিচারবিভাগীয় বোর্ড জানায়।
২০০৮ সালের মুম্বই হামলার পরেও সইদকে গৃহবন্দি করেছিল পাকিস্তান। কিন্তু ২০০৯ সালে আদালতের নির্দেশে মুক্তি পায় সে। ভারতের দাবি, বিশ্বের চোখে ধুলো দেওয়ার জন্যই সইদকে মাঝে মাঝে গৃহবন্দি করে পাকিস্তান।