চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। —ফাইল চিত্র।
চিনের হুঁশিয়ারিকে কার্যত অগ্রাহ্য করেই তাইওয়ানে তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছে প্রবল বেজিং-বিরোধী বলে পরিচিত ডেমোক্র্যাটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি (ডিপিপি)। ফের প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হয়েছেন চিন-বিরোধী শাসক লাই চিং তে। শনিবারই এই ফলাফল প্রকাশ্যে এসেছে। আর তার পরের দিন, রবিবারই তাইওয়ানকে কঠোর শাস্তির হুঁশিয়ারি দিল চিন।
স্বশাসিত তাইওয়ানকে বরাবরই নিজেদের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মনে করে চিন। তাইওয়ানের স্বাধীনতাকামীদের উপর বার বার দমনপীড়ন চালানোর অভিযোগ উঠেছে শি জিনপিংয়ের দেশের বিরুদ্ধে। এই আবহে রবিবার চিনের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ই জানান যে, তাইওয়ান স্বাধীন হওয়ার চিন্তাভাবনা রাখলে ‘কঠোর শাস্তি’ দেওয়া হবে।
মিশরের রাজধানী কায়রোতে দাঁড়িয়ে জিনপিংয়ের ঘনিষ্ঠ এই কূটনীতিক বলেন, “তাইওয়ানের কেউ যদি ভাবেন, স্বাধীনতার জন্য লড়াই করবেন, চিনের এলাকা থেকে তাইওয়ানকে বিচ্ছিন্ন করবেন, তবে ইতিহাস এবং আইন অনুসারেই তাদের কঠোর শাস্তি পেতে হবে।” তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে ওয়াং বলেন, “ভোটের ফলাফল কী হয়েছে, সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। চিন আর তাইওয়ান যে এক এবং অবিচ্ছিন্ন, এই বাস্তব তথ্যকে ওরা বদলে দিতে পারবে না।”
তাইওয়ান ভবিষ্যতেও দেশ হিসাবে স্বীকৃতি পাবে না বলে জানিয়ে দেন ওয়াং। তবে বেজিংয়ের তরফে কারও নাম না করা হলেও মনে করা হচ্ছে তাদের আক্রমণের লক্ষ্য তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পুনর্নির্বাচিত হওয়া লাই চিং তে এবং তাঁর দল ডিপিপি। প্রধান বিরোধী দল তথা প্রাক্তন শাসক কুয়োমিনতাং পার্টি তুলনায় বেজিংয়ের প্রতি নমনীয় বলেই পরিচিত। কাগজে-কলমে ‘বহুদলীয় নির্বাচন’ হলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা মূলত এই দু’দলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
শতাব্দীর চল্লিশের দশকে চেয়ারম্যান মাও জে দং-এর নেতৃত্বে চিনে সশস্ত্র গৃহযুদ্ধের মাধ্যমে কমিউনিস্ট পার্টির ক্ষমতা দখলের পরে জাতীয়তাবাদী নেতা চিয়াং কাইশেক এবং তাঁর অনুগামীরা ঘাঁটি গেড়েছিলেন তাইওয়ান দ্বীপপুঞ্জে। তার পর থেকে মূলত আমেরিকা এবং পশ্চিমী দুনিয়ার আর্থিক ও সামরিক সাহায্যে এখনও টিকে আছে ‘পৃথক’ তাইওয়ান। চিনের বিরুদ্ধে তাইওয়ান দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে বার বার। কিন্তু জিনপিংয়ের জমানায় চিন ক্রমশ আগ্রাসী নীতি অবলম্বন করে তাইওয়ান দখল করতে চাইছে বলে অভিযোগ।