৬৪ বছর আগে এই ছবিটিই এঁকেছিলেন ওয়াল্ট ডিজনি। ছবি: টুইটারের সৌজন্যে
ছোট্ট মিকি আর তাঁর বউ মিনি। দুই খুদে ইঁদুর। তাঁদের বন্ধুত্ব, প্রেম, সংসার আর দুষ্টুমি নিয়েই মিকি মাউসের দুনিয়া। আর সেই দুনিয়ার বাস্তব প্রতিচ্ছবি ক্যালিফোর্নিয়ার ডিজনিল্যান্ড।
১৯৫৫-য় ইঁদুরদের এই দুনিয়া তৈরি করেছিলেন মিকি-মিনির স্রষ্টা ওয়াল্ট ডিজনি। এ বার প্রকাশ্যে এল সেই বিখ্যাত ডিজনিল্যান্ডের নীল নকশা। তা-ও আবার খোদ ওয়াল্ট ডিজনির হাতে আঁকা। সম্প্রতি নিলামে উঠেছিল ১৯৫৩-র সেই মানচিত্রটি। নিলামে সেটি বিক্রি হয়েছে ৭ লক্ষ ৮০ হাজার ডলারে। ডিজনির ইতিহাসে যা সর্বোচ্চ।
এই মানচিত্রের বৈশিষ্ট্য কী?
প্রথমত এটাই ডিজনিল্যান্ডের প্রথম নীল নকশা। তার উপর, এটি স্বয়ং ওয়াল্ট ডিজনির হাতে আঁকা। ডিজনিল্যান্ডের প্রথম এই নকশায় ছিল ‘লিলিপুটিয়ান ল্যান্ড’। কিন্তু বাস্তবের থিম পার্কে এর কোনও অস্তিত্ব নেই। এমনকী ডিজনির সেই বিখ্যাত ফেয়ারিটেল দুর্গটিও রয়েছে পার্কের এক কোণায়। পরে অবশ্য এই নকশায় অনেক পরিবর্তন হয়েছিল। ডিজনিল্যান্ডের আইকনিক দুর্গটি এখন পার্কের ঠিক মাঝখানে রয়েছে।
আলোর সাজে সজ্জিত ডিজনিল্যান্ডের সেই বিখ্যাত দুর্গ। ছবি: এএফপি
পেনসিল ও কালি দিয়ে একটি তিন ফুট বাই পাঁচ ফুটের কাগজের উপর হাতে আঁকা হয়েছে গোটা ম্যাপটি। ডিজনি ও তাঁর এক বন্ধু হার্ব রেম্যান ১৯৫৩-র সেপ্টেম্বরে সাত দিন ধরে তৈরি করেছিলেন এই নকশাটি। এর প্রায় দু’বছর পর ১৯৫৫-র ১৭ জুলাই দ্বারোঘাটন হয় ডিজনিল্যান্ডের। রন ক্লার্ক নামের এক সংগ্রাহক ৪০ বছর আগে ডিজনির এক কর্মী গ্রেনেড কুরানের কাছ থেকে কিনেছিলেন এই নকশাটি। কুরান আবার সেটি পেয়েছিলেন ডিজনির অফিস থেকে। সে সময় সাজিয়ে রাখার জন্য নকশাটি ঘরে নিয়ে এসেছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: কল্পনা আর রূপকথার মিশেল
দীর্ঘ দিন ড্রয়িংরুমে সাজিয়েও রেখেছিলেন সেটি। সংবাদ সংস্থাকে কুরান জানান, ‘‘এটা আমি যত্ন করে রেখে দিয়েছিলাম। কারণ এই ম্যাপ থেকেই দেখা যায় প্রথমে এই থিম পার্কের নকশা কেমন ছিল।’’
পরে হাত ঘুরে সেই ছবি পৌঁছয় লস অ্যাঞ্জেলেসের ভ্যান এটন গ্যালারিতে। সম্প্রতি সেখান থেকেই নিলামে চড়ানো হয় ছবিটি। বিখ্যাত এই গ্যালারির কর্ণধার মাইক এটন সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, ৬৪ বছর আগের হাতে আঁকা এই ছবিটির যে এত দাম উঠবে তা কল্পনাতীত।
এখনও পর্যন্ত ডিজনিল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্কিত ১ হাজারটি ছোট-বড় জিনিস নিলামে উঠেছে। তার মধ্যে ছিল পার্কের বেশ কয়েকটি মানচিত্রও। তবে এটাই ডিজনিল্যান্ডের বিক্রি হওয়া মানচিত্রগুলোর মধ্যে সবচেয়ে দামি বলেও জানান এটন।