ইয়োশির যাত্রাপথ। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।
ইয়োশি এখন পরিবেশপ্রেমী নেটাগরিকদের কাছে আলোচনা ও প্রশংসার পাত্রী। ইয়োশি ১৮০ কেজির ওজনের একটি স্ত্রী কচ্ছপ। সম্প্রতি ডিম পাড়ার জন্য সে আফ্রিকা থেকে প্রায় ৩৭ হাজার কিলোমিটার সমুদ্র পথ সাঁতারে অস্ট্রেলিয়া পৌঁছেছে।
ইন্ডিয়ান ফরেস্ট সার্ভিসের কর্মী পরভিন কাসওয়ান বুধবার একটি টুইট করেন। সেখানে তিনি ইয়োশির কাহিনি বলেছেন। ইয়োশি একটি লগারহেড (বড় মাথার) কচ্ছপ। পরভিন জানিয়েছেন, ‘বাসার খোঁজে (ডিম পাড়তে) ইয়োশি আফ্রিকা থেকে অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত পাড়ি দেয়’। সেই সঙ্গে পরভিন লিখেছেন, ‘এদের বাসা বাঁধার জায়গা সংরক্ষণ করা দরকার’।
একটি কচ্ছপ সমুদ্রে সাঁতারে এত দূর গেল, সেটা জানা গেল কী করে— এক ইউজার পরভিনের পোস্টে কমেন্ট করেন। তার উত্তরে পরভিন জানিয়েছেন, ২০ বছর আগে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ইয়োশিকে। তার পর তার চিকিত্সা ও স্বাস্থ্যোদ্ধারের কাজ চলে। সুস্থ হলে তাকে ফের সমুদ্রে ছেড়ে দেওয়া হয়। তার আগে ইয়োশির শরীরের একটি জিও ট্র্যাকার লাগিয়ে দেওয়া হয়। তা থেকেই ইয়োশির গতিবিধির রেকর্ড পাওয়া হিয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘করোনা ভাইরাস আসছে’, ৭ বছর আগেই টুইট করে দিয়েছিলেন এক ইউজার!
পরভিনের পোস্ট করা দু’টি ছবির মধ্যে একটিতে দেখা যাচ্ছে, জিও ট্র্যাকারের ধরা পড়া ইয়োশির গতিপথ। তাতে দেখা যাচ্ছে, দক্ষিণ আফ্রিকার সমুদ্রতট থেকে উত্তরের দিকে নামিবিয়ার তট হয়ে অ্যাঙ্গোলা পর্যন্ত গিয়েছিল ইয়োশি। কিন্তু সম্ভবত সেখানেও তার বাসা বাঁধার জায়গা খুঁজে পায়নি। ফের তাকে প্রায় সেই পথেই ফিরতে হয়েছে। শেষে ফের একবার দক্ষিণ আফ্রিকার দক্ষিণ প্রান্ত ছুঁয়ে অস্ট্রেলিয়ার দিকে পাড়ি দিতে হয় ইয়োশিকে।
আরও পড়ুন: এক বছর পর মৃত ছেলের হৃদস্পন্দন শুনে কেঁদে ফেললেন বাবা
দেখুন সেই পোস্ট:
কচ্ছপরা সাধারণত একবার যেখানে ডিম পাড়ে, বার বার সেখানেই ফিরে যায় ডিম পাড়তে। সে জন্যই দক্ষিণ আফ্রিকা উত্তরে নামিবিয়া হয়ে অ্যাঙ্গোলা পর্যন্ত ইয়োশি গিয়েছিল কিনা তা পরিষ্কার নয় পরভিনের পোস্ট থেকে। আবার আফ্রিকা থেকে তাকে অস্ট্রেলিয়া কেন পাড়ি দিতে হল, তা-ও উল্লেখ করেননি তিনি। তবে কমেন্টে পরভিন একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন। সেখানে লিখেছেন, গত বছর মলদ্বীপের মাফারু বিমানবন্দরের রানওয়েতে একটি কচ্ছপকে ডিম পা়ড়তে দেখা যায়, তার ছবিও পোস্ট করেছেন পরভিন। পরভিন লিখেছেন, এর আগে ওই জায়গায়তেই ডিম পেড়ে গিয়েছিল এই সবুজ সামুদ্রিক কচ্ছপটি। কিন্তু পরে সেখানে রানওয়ে তৈরি হয়েছে। ফলে কচ্ছপটি বুঝতে না পেরে তার পুরনো জায়গাতেই ডিম পাড়তে চলে আসে। প্রাকৃতিক বাসার বদলে মানুষের তৈরি কংক্রিটের রানওয়ের উপরেই পড়ে থাকে তার ডিমগুলি। পরভিন আবেদনের সুরে লিখেছেন, এই কারণেই কচ্ছপ বা প্রাণীদের বাসা সংরক্ষণ করা উচিত।
আরও পড়ুন: করোনার প্রভাব আটকাতে সর্বত্র বসানো হল হাত ধোয়ার বেসিন
দেখুন সেই পোস্ট:
পরভিনের পোস্টে তাঁর এই মতকে সমর্থন করে প্রচুর মন্তব্য করা হয়েছে। সেখানে মানুষের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কারণে, বিশেষ করে প্লাস্টিক দূষণের ফলে কী ভাবে বন্যপ্রাণ কোণঠাসা হয়ে পড়ছে, তা উল্লেখ করেছেন নেটাগরিকরা। প্লাস্টিক দূষণ বন্ধ করে এই প্রাণীদের বাঁচতে দেওয়ার আবেদন করেছেন অনেকেই। আর ইয়োশির এই 'অ্যাডভেঞ্চার'-কে প্রশংসা করে পোস্ট চলেছে সমানেই।