‘নেচার ফুড’ নামে বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকায় এই রিপোর্টটি প্রকাশিত। প্রতীকী ছবি।
আমেরিকার সঙ্গে রাশিয়ার পুরোদস্তুর পরমাণু যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে বিশ্ব জুড়ে মৃত্যু হবে কমপক্ষে ৫০ কোটি মানুষের। এ ছাড়া আরও একাধিক ভয়াবহ পরিণতির মুখে পড়তে হবে মানবসভ্যতাকে। আমেরিকার রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি রিপোর্টে এমনই দাবি করা হয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’-এর মোড়কে পুরোদস্তুর যুদ্ধ শুরু করে রাশিয়া। তার পর সেই যুদ্ধ চলছেই। ঘটনাচক্রে, তাতে পরোক্ষ ভাবে জড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতি আমেরিকাও। এই প্রেক্ষিতে রাশিয়ার সঙ্গে আমেরিকার পরমাণু যুদ্ধের সম্ভাবনা নিয়ে গবেষণা করেছে নিউ জার্সির রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়। তাতে দেখা যাচ্ছে, যুদ্ধ এক বার শুরু হলে তাতে কমপক্ষে ৫০ কোটি মানুষের মৃত্যুর সম্ভাবনা রয়েছে। এহ বাহ্য, ভয়াবহ পরিণতির মুখে পড়তে পারে সামগ্রিক মানব সভ্যতাই। বায়ুমণ্ডলে তৈরি হতে পারে একটি অস্পষ্ট আস্তরণ। যাতে আটকে যাবে সূর্যের কিরণ। ভয়ঙ্কর ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে কৃষিও। এমনকি পুরোপুরি বদলে যেতে পারে কৃষি ব্যবস্থাই।
রাটগার্সের গবেষকরা যুদ্ধের সম্ভাব্য মোট ছ’টি পরিণতি নিয়ে গবেষণা করেছেন। তাতে দেখা যাচ্ছে রাশিয়া-আমেরিকা পুরোদস্তুর পরমাণু যুদ্ধের সবচেয়ে খারাপ পরিণতিতে বিশ্বে এই মুহূর্তে অর্ধেক মানুষের মৃত্যু হতে পারে। ‘নেচার ফুড’ নামে একটি বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকায় রাটগার্সের গবেষকদের এই রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়েছে।
এমনকি তুলনামূলক ভাবে আকারে ছোট সংঘাতও বিশ্বে খাদ্য উৎপাদনে ধস নামিয়ে দিতে যথেষ্ট। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যদি তুলনায় ছোট আকারের কোনও যুদ্ধ বেধে যায়, তা হলে পাঁচ বছরের মধ্যে কৃষিফলন অন্তত ৭ শতাংশ হারে হ্রাস পাবে। আমেরিকা-রাশিয়া পুরোদস্তুর পরমাণু যুদ্ধ হলে তিন থেকে চার বছরের মধ্যে ফলন ৯০ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনার কথা লিখেছেন গবেষকরা।
প্রসঙ্গত, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর এপ্রিলে রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, যে কোনও সময় পরমাণু যুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে। কিন্তু তা শুরু হলে যে কী ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করছে মানবসভ্যতার জন্য, তা খানিকটা হলেও স্পষ্ট হল গবেষণা রিপোর্টে।