আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। — ফাইল চিত্র।
এশিয়াতে ‘আর একটা ইউক্রেন পরিস্থিতি’ দেখতে চায় না আমেরিকা। এই যুক্তি সামনে রেখে এ বার তাইওয়ানে সামরিক সাহায্যে সক্রিয় হল প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সরকার। চিনা হামলা ঠেকানোর জন্য শুক্রবার হোয়াইট হাউসের তরফে তাইওয়ানকে ৩৪ কোটি ৫০ লক্ষ ডলার (প্রায় ২,৮৩৮ কোটি কোটি টাকা) মূল্যের অস্ত্র এবং সামরিক সরঞ্জাম দেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদনের কথা জানানো হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট বাইডেনের আবেদনে সাড়া দিয়ে গত বছরেই প্রশান্ত মহাসাগরীয় ‘দ্বীপরাষ্ট্র’ তাইওয়ানকে সামরিক সহায়তার প্রস্তাবে ছাড়পত্র দিয়েছিল আমেরিকার আইনসভা। হোয়াইট হাউসের তরফে জানানো হয়েছে, অস্ত্র এবং সামরিক সরঞ্জামের পাশাপাশি, তাইওয়ান সেনাকে প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত সহায়তাও দেবে পেন্টাগন। সম্প্রতি চিন সফরে গিয়েছিলেন আমেরিকার বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এবং অর্থসচিব জ্যানেট ইয়েলেন। তার পরেই তাইওয়ানকে সামরিক সাহায্যের ঘোষণা চিনকে ক্ষুব্ধ করতে পারে বলে কূটনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা।
আমেরিকার সংবাদমাধ্যমের একাংশ জানাচ্ছে, প্রথম দফায় তাইওয়ানকে ‘রাডার ওয়ার্নিং সিস্টেম’ দেওয়া হতে পারে। এর মাধ্যমে চিনা পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-র ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র দ্রুত চিহ্নিত করা যাবে। ফলে ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী ব্যবস্থার সাহায্যে তা ধ্বংস করতে পারবে তাইওয়ান সেনা। এ ছাড়া দেওয়া হতে পারে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান থেকে ব্যবহারযোগ্য জাহাজ বিধ্বংসী হারপুন ক্ষেপণাস্ত্র, এম-১ আব্রাহাম ট্র্যাঙ্ক এবং স্বল্পপাল্লার ‘ভূমি থেকে ভূমি’ ক্ষেপণাস্ত্র। প্রেসিডেন্টের বিশেষ ক্ষমতাবলে ‘বৈদেশিক সাহায্য’ হিসাবে এই সামরিক খয়রাতি পাঠানো হবে তাইওয়ানে।
প্রসঙ্গত, চিনা হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে গত বছরের ২ অগস্ট তাইওয়ান সফরে গিয়েছিলেন আমেরিকার কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ ‘হাউস অফ রিপ্রেজেনটেটিভস’-এর তৎকালীন স্পিকার ন্যান্সি। তার পর থেকেই তাইওয়ান প্রণালী এবং পাশের চিন সাগরে বেজিংয়ের সামরিক তৎপরতা বেড়েছে। ধারাবাহিক ভাবে তাইওয়ানের আকাশসীমা লঙ্ঘনের ঘটনাও ঘটছে। এই পরিস্থিতিতে চিনা হামলার আশঙ্কা করছে তাইওয়ান। চিনা যুদ্ধবিমান এবং রণতরীর ভয়ে তাইওয়ান প্রণালীতে বাণিজ্যিক উড়ান এবং নৌচলাচলে ‘প্রভাব’ পড়েছে। তাইপেইয়ের দাবি, তাইওয়ান প্রণালীতে মোতায়েন একাধিক চিনা যুদ্ধজাহাজের গতিবিধি তাদের নজরে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দক্ষিণ চিন সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজের যাতায়াতও কমেছে।