সৌজন্যে পোলার ভর্টেক্স। শিকাগোর কোনও কোনও এলাকার দশা এখন এমনটাই। ছবি-এএফপি
প্রায় সুমেরুর তাপমাত্রায় বরফের মতো জমে যাওয়ার দশা হয়েছে মধ্য, পশ্চিম ও উত্তর-পূর্ব আমেরিকার। আমেরিকার। গড়ে শূন্যের ৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ৫৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রারও নীচে কাটাতে গিয়ে তুষার ক্ষতে (ফ্রস্টবাইট) গত দু’দিনে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২১ জনের। মাথার উপর ছাদ না থাকায় যাঁদের পথে পথে ঘুরে কাটাতে হয়, মৃতদের মধ্যে তাঁদের সংখ্যাই বেশি। আশঙ্কা, মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যেতে পারে আজ-কালের মধ্যে।
সুমেরুর হাড়জমানো ঠান্ডা হাওয়া দক্ষিণমুখী হওয়ার ফলেই এই বিপজ্জনক পোলার ভর্টেক্সের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন আবহবিদরা। তাঁদের আশঙ্কা, আগামিকাল, শনিবার তাপমাত্রা আরও নেমে যেতে পারে। চলে যেতে পারে শূন্যের ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও নীচে।
শিকাগোর জন এইচ স্ট্রোগার জুনিয়র হাসপাতালের চিকিৎসক স্টেথিস পাওলাকিদাস জানিয়েছেন, পোলার ভর্টেক্সের জন্য বুধবার পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ছিল ১২। কিন্তু গত কালই শিকাগোয় তুষার ক্ষতের শিকার হয়েছেন আরও ৯ জন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন অন্তত ২৫ জন। তাঁদের বাঁচাতে আঙুল ও পায়ের পাতা বাদ দিতে হতে পারে।
মৃতদের মধ্যে রয়েছেন আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র জেরার্ড বেল্জও। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ঘর থেকে বেরতেই তুষারপাতের মধ্যে পড়ে গিয়ে অচৈতন্য হয়ে পড়েন। ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস (এনডব্লিউএস) জানাচ্ছে, ওই সময় আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের তাপমাত্রা ছিল শূন্যের ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও নীচে। ওহায়োর লোরেনে একটি পরিত্যক্ত বাড়ির মধ্যে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে ৬০ বছর বয়সী এক মহিলাকে।
আরও পড়ুন- মাইনাস পঁচিশে এখন আর আঁতকে উঠি না
আরও পড়ুন- ভেবেছিলাম নায়াগ্রার ছবি তুলতে যাব... পোলার ভর্টেক্সে সব ভন্ডুল
ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিসের তরফে জানানো হয়েছে, গত ২৫ বছরে এমন আবহাওয়ার কবলে পড়তে হয়নি মধ্য, পশ্চিম ও উত্তর-পূর্ব আমেরিকাকে।
হাড়জমানো ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতে বাড়িতে বাড়িতে, অফিস, আদালতে প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার হচ্ছে ব্যাপক ভাবে। ভবিষ্যতের কথা ভেবে প্রশাসনের তরফে অবশ্য ওই গ্যাস সাশ্রয়ের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
অসম্ভব ঠান্ডায় ডেট্রয়েটে বিখ্যাত গাড়ি নির্মাতা সংস্থা জেনারেল মোটরস্ মিশিগানে তাদের ১১টি কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে, সাময়িক ভাবে। প্রাকৃতিক গ্যাসের খরচ বাঁচাতে।