ছবি: এএফপি।
রোহিঙ্গা-সঙ্কটে সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকার সাহায্য ঘোষণা করেছে আমেরিকা। মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশ শুধু নয়, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরও কাছেও এই সাহায্য পৌঁছে দেওয়া হবে। পাশাপাশি, রয়েছে জরুরি পরিষেবাও। সুরক্ষা, আশ্রয়, খাদ্য, জল, শৌচালয় স্বাস্থ্য এবং মানসিক সমর্থনের ব্যবস্থা হবে। রাষ্ট্রপুঞ্জের সম্মেলনে মার্কিন দূত নিকি হ্যালি এই খবর জানান।
তিনি বলেন, ‘‘মায়ানমার এবং বাংলাদেশে আশ্রয়হারা রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা-সাহায্য দিতে পেরে আমরা গর্বিত। তবু আরও অনেক কিছু করা দরকার। অন্য সব দেশও নিজেদের দায়িত্ব পালন করুক।’’ তা ছাড়া হ্যালি বার্তা দিয়েছেন মায়ানমার সরকারকেও। বলেছেন, ‘‘হিংসা থামিয়ে মানবিকতা দেখান, সাংবাদিকদের দেশে ঢুকতে দিন।’’ রোহিঙ্গা-সঙ্কটে বাংলাদেশ যে ভাবে পাশে দাঁড়িয়েছে, তার প্রশংসাও করেন হ্যালি।
রাষ্ট্রপুঞ্জের অনুষ্ঠানে ছিলেন মায়ানমার ও বাংলাদেশ— দু’দেশেরই মন্ত্রী। ছিলেন অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, কুয়েত, মালয়েশিয়া, নেদারল্যান্ডস, রাশিয়া, সিঙ্গাপুর, সুইডেন এবং তুরস্কের উচ্চ পর্যায়ের অফিসারেরা। ছিলেন রাষ্ট্রপুঞ্জের গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারীরা। বৈঠকে প্রত্যেকে সহমত হন একটি বিষয়ে— রোহিঙ্গা মুসলিমরা যে অবস্থার মধ্যে রয়েছেন, সেটি সাম্প্রতিক কালের সব চেয়ে বড় শরণার্থী-সঙ্কটের উদাহরণ।
এর মধ্যেই গত কাল রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছিল, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ‘পরিকল্পিত গণহত্যা’ চালানোর অভিযোগে মায়ানমারের সেনাপ্রধান এবং পাঁচ জেনারেলের বিরুদ্ধে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। এর বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন মায়ানমার সেনার কম্যান্ডার-ইন-চিফ। তাঁর কথায়, ‘‘রাষ্ট্রপুঞ্জ কোনও দেশের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। এটা অন্যায়।’’ রাষ্ট্রপুঞ্জ অবশ্য নিজের অবস্থানে অনড়। নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে মামলাটা তারা আন্তর্জাতিক আদালতে নিতে চায়।
রয়টার্সের যে দুই সাংবাদিককে মায়ানমারের জেলে ভরা হয়েছে, তাঁদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবিও উঠেছে রাষ্ট্রপুঞ্জে। বলা হয়েছে, ওই দুই সাংবাদিকের মৌলিক অধিকারের প্রতি সম্মান দেখাক মায়ানমার সরকার।