আত্মবিশ্বাসী: মার্কিন প্রতিরক্ষাসচিব জেমস ম্যাটিসের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী। সোমবার ওয়াশিংটনে। ছবি: পিটিআই।
তিন বছর আগে নিউ ইয়র্ক-এর ম্যাডিসন স্কোয়ারের সেই জাঁকজমকপূর্ণ মেগা শো-এর পাশে আজকের মোদী-দরবার নেহাতই টিমটিমে। কিন্তু সেই অপেক্ষাকৃত নিষ্প্রভ মঞ্চটিকে কাজে লাগিয়েই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের আগে সন্ত্রাসবাদ তথা পাকিস্তান নিয়ে যতটা সম্ভব কড়া বার্তা দিলেন আমেরিকা সফররত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
গতকাল ভার্জিনিয়ায় ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের সঙ্গে বৈঠকে সার্জিকাল স্ট্রাইক নিয়ে মোদী ছাপান্ন ইঞ্চি ছাতি প্রসারিত করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা সার্জিকাল স্ট্রাইক করার পরে গোটা বিশ্ব ভারতের ক্ষমতা বুঝতে পেরেছে। এটাও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, ভারত সংযম অভ্যাস করলেও প্রয়োজনে শক্তি প্রদর্শন করতে জানে। বিশ্বের কেউই এ নিয়ে কোনও প্রশ্ন তোলেনি।’’
মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসতে সক্রিয় নয়াদিল্লি। আর সে কারণেই আগাম এই মঞ্চ প্রস্তুত করে রাখা হলো বলে জানাচ্ছে কূটনৈতিক মহল। পাশাপাশি আমেরিকাতেও ট্রাম্প প্রশাসন আসার পরে ভারত-পাকিস্তান নিয়ে স্পর্শকতারতা যথেষ্ট বেড়ে গিয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন প্রকাশ্যে এবং ঘরোয়াভাবে বারবার ইঙ্গিত দিচ্ছে দু’দেশের মধ্যে মধ্যস্থতার জন্য তারা আগ্রহী। দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতাবস্থার প্রশ্নে এই মধ্যস্থতা জরুরি বলেও মন্তব্য করেছেন ট্রাম্পের কর্তারা। অন্য দিকে, পাকিস্তানও বারবার চাইছে বিষয়টিকে কোনও ভাবে তৃতীয় শিবিরের দিকে ঠেলে দিতে। কাশ্মীরের একটি ‘আন্তর্জাতিক প্রসঙ্গ’ করার যে চেষ্টা ইসলামাবাদ গত এক বছর ধরে করে চলেছে, পশ্চিিম দুনিয়া তার মাঝখানে চলে এলে তাতে তাদের সুবিধাই হবে।
আরও পড়ুন: সাত হাজার! সংস্কারের হিসেবে ধন্দ
মোদীর কথায়, ‘‘বিশ বছর আগে যখন ভারত সন্ত্রাসবাদের কথা বলত বিশ্বের বহু দেশই ভাবত, এটা বোধহয় আইনশৃঙ্খলার সমস্যা। কেউ বুঝতেই পারত না, এই সমস্যা কত গভীর। এখন জঙ্গিরা নিজেরাই বিষয়টিকে স্পষ্ট করে দিয়েছে, আমাদের আর কিছু বলার দরকার হচ্ছে না।’’
মোদী আজ আমেরিকার মাটিতে দাঁড়িয়েই স্পষ্ট করে দিতে চেয়েছেন যে এই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে কোনও তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ চাইছে না ভারত। পাশাপাশি, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতি হিসেবে সে দেশের সংবাদমাধ্যমকেও নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে কাজে লাগানো হয়েছে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে প্রধানমন্ত্রী মোদী জানিয়েছেন, ভারত-মার্কিন কৌশলগত সম্পর্ক কখনই বিঘ্নিত হতে পারে না। তার কারণ সন্ত্রাসবাদ, চরমপন্থা সংক্রান্ত বিষয়গুলিতে ভারত এবং আমেরিকা দু’দেশেরই পারষ্পরিক স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে।